বিজয়ন প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধ রাজ্যপালের

কেরল বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইন বাতিল করা নিয়ে প্রস্তাব পাশ হওয়ার দু’সপ্তাহ পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে।

Written by SNS Thiruvananthapuram | January 20, 2020 2:42 pm

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। (File Photo: IANS)

দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে নাগরিকত্ব আইনের বিরােধিতায় সােচ্চার হয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার বিষয়টি রাজ্যপালকে না জানানােয় রীতিমতাে অসন্তোষ প্রকাশ করে সিপিএম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ প্রশাসনের থেকে রিপাের্ট চাওয়া হয়েছে– রাজভবনের তরফে এমনটা জানানাে হয়েছে।

নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেরল প্রশাসন- বলাবাহুল্য দেশের প্রথম কোনও রাজ্য প্রশাসন নাগরিকত্ব সংশােধনী আইনকে চ্যালেঞ্জ করার অবস্থান গ্রহণ করে। তবে কর্তৃপক্ষের তরফে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে তাদের অবস্থান সম্পর্কে কোনও তথ্য জানানাে হয়নি।

রাজ্যপাল বলেন, ‘রাজ্য প্রশাসনের তরফে নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবে তা আমাকে জানানাে হয়নি’। রাজভবনের তরফে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের বিরােধিতা করে রাজ্যের তরফে আদালতে আবেদন করার ব্যাপারটি রাজ্যপালকে জানানাে হয়নি– তার প্রেক্ষিতেই রাজ্যপালের অফিস থেকে মুখ্যসচিবের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানাে হয়েছে। রাজ্যপাল প্রকাশ্যে রাজ্য প্রশাসনের কড়া ভাষায় সমালােচনা করেন।

কেরল বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইন বাতিল করা নিয়ে প্রস্তাব পাশ হওয়ার দু’সপ্তাহ পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। দেশজুড়ে নাগরিকত্ব আইনের বিরােধিতায় লাগাতার প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে তা হিংসায় পর্যবসিত হয়েছে। বামপন্থী কেরল প্রশাসনের তরফে নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন সংবিধানের বেশ কয়েকটি ধারাকে লঙঘন করছে- যার মধ্যে সমানাধিকার ও ধর্মীয় নিরপেক্ষতার নীতিকে লঙঘন করা হয়েছে।

কেরল প্রশাসনের তরফে পাসপাের্ট আইন ও ফরেনার্স অর্ডারে যে পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছিল, তার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানানাে হয়েছে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করার নিয়মিতকরণকে স্থগিত করে দেওয়া হােক। উল্লেখ্য, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে সংখ্যালঘু হিন্দু ও অ-মুসলিম জনজাতি ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদেরকে নতুন আইন ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভের রাস্তা সহজ করে দিল।

যদিও সমালােচকরা ভীত, নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জী দেশে বসবাসকারী মুসলিম জনজাতির সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করবে।

কেরুল প্রশাসনের আবেদন উল্লেখ করা হয়েছে, নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন সংবিধানের ১৪ নং ধারা, ২১ নং ধারা, ২৫ নং ধারাকে লঙঘন করেছে। সংবিধানের ১৪ নং ধারায় ভারতীয় নাগরিকদের সমানাধিকার দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ২১ নং ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের কোনও জনগণকে আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোনও প্রক্রিয়াগত নিদের্শ ছাড়া কারুর ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা হবে না। সংবিধানের ২৫ নং ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের নাগরিকগণ স্বাধীনভাবে ধর্মাচারণ করতে পারবেন।