• facebook
  • twitter
Thursday, 11 December, 2025

সঙ্কট কেন বাড়তে দেওয়া হচ্ছে ? : ইন্ডিগো বিপর্যয়ের জন্য কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ৎসনা দিল্লি হাইকোর্টের

উড়ান বাতিল সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার হাজিরা দিতে বলা হয়েছে পিটার এলবার্সকে

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ইন্ডিগো বিমান সংস্থায় বিশৃঙ্খলা এবং দীর্ঘ সময় ধরে যাত্রী পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার জন্য বুধবার কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করেছে দিল্লি হাইকোর্ট। আদালত প্রশ্ন তুলেছে, কেন সরকার বিমান ভাড়া ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৩৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়া আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে  ?   আদালত আরও প্রশ্ন তুলেছে, আটকে পড়া যাত্রীদের সাহায্যের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ? আদালত বলেছে, ‘কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল ?  ইন্ডিগোর এই বিপর্যয়ের মধ্যে অন্য বিমান সংস্থাগুলির ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আদালত। বিচারপতি গেদেলা বলেন, যদিও কোনও সঙ্কট থাকে, তবে অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলিকে কীভাবে সুবিধে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে  ? কীভাবে এটি ৩৫-৩৯ হাজারে যেতে পারে  ? অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলি কীভাবে চার্জ করা শুরু করতে পারে  ? কীভাবে এটি ঘটতে পারে  ?

 
অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আদালতকে বলেন, বিমান সংস্থাটিকে ইতিমধ্যেই কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। বিমান সংস্থার তরফেও বহুবার ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। বিমান সংস্থার এই বিপর্যয় সামাল দিতে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। বিচারপতি গেদেলে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি কেন হল ? এটি কোনও বিমানবন্দরে আটকে থাকা যাত্রীদের শুধু নয়, অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা। যাত্রীদের বহু দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে।’  আদালত জানতে চায়,  যাত্রীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা কী করা হয়েছিল  ? যাঁরা বিমানবন্দরে পরিষেবা দিয়ে থাকেন, সেইসব বিমানকর্মীরা যাতে দায়িত্বশীল হন, যা নিশ্চিত করতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে ? যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আদালতে জানান, কেন্দ্রের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। এরপরেও বিচারপতি বলেন, ‘ সঙ্কট শুরু হওয়ার পরে আপনারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল ? কেন পাইলটদের উপর অতিরিক্ত কাজ চাপানো হয়েছিল ? আপনারা পরিস্থিতিকে এই পর্যায়ে পৌঁছতে দিয়েছেন।’
ভারতের বৃহত্তম বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর বিমান বিভ্রাটের জের অব্যাহত ছিল বুধবারেও। এদিকে এই কঠিন সময়ের মধ্যে বিমান সংস্থার সিইও-কে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ।
উড়ান বাতিল সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার হাজিরা দিতে বলা হয়েছে পিটার এলবার্সকে। কারণ এই বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে ডিজিসিএ-র ভূমিকা নিয়েও। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান মন্ত্রক ডিজিসিএ-র কাজে সন্তুষ্ট নয়। মন্ত্রকের মতে, এখন যতটা সক্রিয় হয়েছে ডিজিসিএ, ইন্ডিগোর সমস্যা যখন দানা বাঁধতে শুরু করে , তখন একে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ইন্ডিগোর সিইও-র সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় অসামরিক পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নাইডু।
 
সূত্রের খবর, নাইডু জানিয়েছেন, ডিজিসিএ-কেও তদন্তের আওতায় আনা হবে। বিপর্যয়ের মধ্যে ডিজিসিএ কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে , তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। মন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, প্রয়োজনে ইন্ডিগোর সিইও পিটারকে বরখাস্ত করার নির্দেশও দেওয়া হতে পারে। সেই কারণে মনে করা হচ্ছে, চাপে পড়েই পিটারকে ডেকে পাঠিয়েছে ডিজিসিএ।
দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরগুলিতে যাত্রী পরিষেবা কতটা বিঘ্নিত হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডিজিসিএ। দেশের ১১টি বিমানবন্দর ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। ৩ দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে। কাজ শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিজিসিএ-কে রিপোর্ট দিতে হবে। যে বিমানবন্দরগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে সেগুলি হল, নাগপুর, জয়পুর, ভোপাল, তিরুপতি, বিজয়ওয়াড়া, সুরাট, শিরডি, লখনউ, অমৃতসর, কোচি, দেরাদুন। 
 
ইন্ডিগো বিপর্যয়ের বিস্তারিত তদন্তের জন্য ডিজিসিএ একটি প্যানেল গঠন করেছে। ৪ সদস্যের এই প্যানেল উড়ান বাতিলের কারণ খুঁজে বের করছে। কমিটিতে রয়েছেন ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জয় ব্রাহ্মণে, ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল অমিত গুপ্ত, ফ্লাইট অপারেশন ইন্সপেক্টর কপিল মাঙ্গলিক এবং ইনফরমেশন অথরিটি অফিসার লোকেশ রামপাল। এই প্যানেল বিমান চালানোর সময়সীমাও খতিয়ে দেখবে। নিয়ম লঙ্ঘনকারী বিমান সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া

Advertisement

Advertisement