• facebook
  • twitter
Wednesday, 26 March, 2025

কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন

অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং দলের প্রতি মানুষের আস্থা আছে কিনা তার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বুধবার কড়া নিরাপত্তায় দিল্লি বিধানসভার ভোটগ্রহণ করল নির্বাচন কমিশন। কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ বলে জানা গিয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত দিল্লি বিধানসভায় গড়ে ভোট পড়েছে ৫৭.৭ শতাংশ। দেশের রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে সুষ্ঠু নির্বাচনকার্য পরিচালনার জন্য ৬৮ হাজার ৭৩৩ জন নির্বাচনী আধিকারিক সহ ১ লক্ষ ৯ হাজার ৯৫৫ জন ভোটকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে দিল্লিতে মোট ভোটারের সংখ্যা ১ কোটি ৫৬ লক্ষ। এখানকার ১৩ হাজার ৭৬৬টি কেন্দ্রে ৭০টি বিধানসভা আসনের ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ পর্ব চলে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশিত হবে।

এদিন সকাল ৭টায় এখানকার ৭০টি বিধানসভায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকে রাজধানী দিল্লির বিভিন্ন বুথে ভোটারদের লাইন পড়ে যায়। তাঁদের সঙ্গে ভোটদানে সামিল হয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জন প্রতিনিধি ও মন্ত্রীরা। ভোট দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আতিশি মার্লেনা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও আপ-এর শীর্ষ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ রাহুল গান্ধী, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর থেকে শুরু করে আরও অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রীরা। ভোট দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বৃদ্ধ বাবা গোবিন্দ রাম কেজরিওয়াল ও মা গীতা দেবী।

এদিন দিল্লির লেডি আইরিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে দেখা যায়, মা গীতাদেবীকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে বুথের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন পুত্র অরবিন্দ। অন্যদিকে বাবা গোবিন্দ রাম কেজরিওয়ালকেও একটি হুইল চেয়ারে বসিয়ে বুথের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন অরবিন্দ পুত্র পুলকিত কেজরিওয়াল। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্ত্রী সুনিতা কেজরিওয়ালও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।

হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের সন্দীপ দীক্ষিতের বিরুদ্ধে লড়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং বিজেপির পরবেশ ভার্মা। আবার যেখানে দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আতিশি লড়ছেন, সেই কালকাজি কেন্দ্রে লড়ছেন বিজেপির রমেশ বিধুরি ও কংগ্রেসের অলকা লাম্বা।

প্রসঙ্গত এবারের দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন আম আদমি পার্টির কাছে শুধু ক্ষমতা দখলের লড়াই নয়, তার চেয়েও বেশি কিছু। অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং দলের প্রতি মানুষের আস্থা আছে কিনা তার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। একমাস আগে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল আবগারি দুর্নীতি মামলার তদন্তের জেরে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তিনি লোকসভা ভোটের সময় জেল থেকে ফিরেই ঘোষণা করেন,’জনতার আদালতে ছাড়া পেলে তবেই তিনি ফের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসবেন’।

যদিও তাঁর ধারনা ছিল, আবগারি দুর্নীতির যে বদনাম ছড়িয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে না। সেখানে ভোটারদের অনুভূতির প্রতিফলন ঘটবে। দিল্লির বর্তমান শাসকদলের শীর্ষ নেতারা দুর্নীতির অভিযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ কারণে দেওয়ালে পিঠ দিয়ে লড়াই করছে। অন্যদিকে বিজেপি রাজধানীতে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যেখানে তারা ২৭ বছর ধরে বিরোধী আসনে রয়েছে, সেখানে নির্বাচনে জয়লাভের জন্য চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না। এদিকে জাতীয় পর্যায়ে আপ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অংশ হওয়া সত্ত্বেও কংগ্রেস জোটে না গিয়ে এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ফের ক্ষমতায় আসার চেষ্টা চালিয়েছে।