• facebook
  • twitter
Wednesday, 26 March, 2025

কংগ্রেসকে শিক্ষা নিতে হবে, মমতাই বিজেপির বিকল্প

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফর্মুলা মানলে এভাবে বিজেপির বিজয় দেশবাসীকে দেখতে হতো না।

নিজস্ব চিত্র

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বিজেপি বিরোধী রাজনীতি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল। ভোটের আগেই অবশ্য অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করেছিলেন, আম আদমি পার্টি এবং কংগ্রেস আলাদাভাবে লড়ার সুফল পেতে পারে পদ্মফুল। বাস্তবেও তাই হয়েছে। ৭০টি আসনের মধ্যে অন্তত ২৬টি আসনে বিজেপি বিরোধী শক্তি ভোট কাটাকুটির ফায়দা পেয়েছে গেরুয়া শিবির। সরাসরি ১৩টি আসন তাদের দখলে গিয়েছে ইন্ডিয়া জোটের সম্মুখ সমরের কল্যাণে।

অথচ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফর্মুলা মানলে এভাবে বিজেপির বিজয় দেশবাসীকে দেখতে হতো না। প্রায় ২৭ বছর পর দিল্লির মসনদে ফুটল পদ্মফুল। ইন্ডিয়া জোট গঠন ইস্তক মমতা বলে আসছেন, যে রাজ্যে জোটের যে দল শক্তিশালী, তাকেই সংশ্লিষ্ট রাজ্য ছেড়ে দেওয়া হোক।

সেই ফর্মুলা মানলে দিল্লি দখলের যুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে টক্কর হতো আম আদমি পার্টির। কিন্তু ইন্ডিয়া জোটের বড় শরিক কংগ্রেস প্রথম থেকেই জেদ ধরে বসে রইল। তারা যে আজ দেশের সর্বত্র বিজেপির বিরুদ্ধে এককভাবে লড়াইয়ের ক্ষমতা রাখে না, এটা বারবার প্রমাণ হচ্ছে। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে পর পর তিনবার হারের হ্যাটট্রিক করল দেশের শতাব্দী প্রাচীন দলটি। কে বলবে এই কংগ্রেসই শীলা দীক্ষিতের নেতৃত্বে জয়ের হ্যাটট্রিক করে দিল্লিতে টানা ১৫ বছর রাজত্ব করেছে।

সেই শীলা দেবীর পুত্র সন্দীপ দীক্ষিত নতুন দিল্লি আসনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ভোট কেটে বিজেপির জয় সুনিশ্চিত করেছেন। কেজরিওয়াল হেরেছেন ৪০৮৯ ভোটে। তাঁর জামানত খুইয়ে কংগ্রেস প্রার্থী সন্দীপ টেনে নিয়েছেন ৪২৫৪টি ভোট। অবশ্য কংগ্রেস প্রার্থীরা দিল্লির অধিকাংশ আসনে জামানত ধরে রাখতে পারেনি। এবার তাঁরা এই নির্বাচনে ৬.৩৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। আর কেজরিওয়ালের দলের ভোট ৪৩.৫৭ শতাংশ। আর ৭০-এর মধ্যে ৪৮টি আসন জিতলেও বিজেপির ভোট ৪৫.৫৬ শতাংশ। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে পদ্মফুলের বিজয়রথ অবশ্যই ধাক্কা খেতো।

দিল্লির নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই লালুপ্রসাদ যাদব থেকে শুরু করে অখিলেশ যাদব প্রমুখ ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলের নেতারা দাবি তুলেছেন, বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিন মমতাই। হ্যাঁ, সদ্য দিল্লি ভোটের ফল চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের দাবি কতটা বাস্তব সম্মত। মমতার মতো সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আজ দেশের কোনও বিজেপি বিরোধী নেতা বা নেত্রীর নেই। সেইজন্যেই শক্তিশালী শরিককে নিজের রাজ্যে লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে দেওয়ার যে ফর্মুলা তৃণমূল নেত্রী দিয়েছেন, সেটাই বিজেপিকে জব্দ করার একমাত্র কৌশল। তা প্রমাণ হল পুনরায়।