মাওবাদীদের পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে মৃত্যু হল সুকমার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আকাশ রাওয়ের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আরও তিন নিরাপত্তাকর্মী। কোন্টা-এরাবোর সড়কের কাছে দোন্দ্রা এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন আকাশ সহ চার পুলিশকর্মী। সেই সময় মাওবাদীদের পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন তাঁরা। ছত্তিশগড়ে সুকমার পুলিশ সুপার কিরণ চবন আকাশের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি যৌথবাহিনীর অভিযানে খতম হয়েছেন একের পর এক মাওবাদী নেতা। এর প্রতিবাদে ১০ জুন ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছে মাওবাদী সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)। দেশব্যাপী বন্ধের আগে কোন্টা এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে টহল দিচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময় মাওবাদীদের পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন আকাশ। তাঁর সঙ্গে থাকা কোন্টার এসডিওপি, কোন্টা থানার স্টেশন হাউস অফিসার এবং এক জওয়ান জখম হন।
আহতদের সকলকে দ্রুত উদ্ধার করে কোন্টা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই সোমবার মৃত্যু হয়েছে আকাশের। উন্নত চিকিৎসার জন্য আকাশকে রায়পুরে স্থানান্তরিত করার কথাও ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই সুকমার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মৃত্যু হল। উন্নত চিকিৎসার জন্য বাকিদের রায়পুরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। বস্তার রেঞ্জের আইজি পি সুন্দররাজও বিস্ফোরণের ঘটনার কথা জানিয়েছেন।
আইইডি বিস্ফোরণের পর ওই এলাকায় প্রচুর নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদমুক্ত ভারত গড়ার বার্তা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এরপর থেকেই ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ডের মতো মাও অধ্যুষিত রাজ্যগুলিতে মাওবিরোধী অভিযান ব্যাপক গতি পেয়েছে।
গত ২৭ মে সুকমায় মাওবাদীদের ১ নম্বর ব্যাটালিয়নের চার সদস্য-সহ মোট ১৮ জন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এছাড়া, বিজাপুরে গত তিন দিন ধরে চলা যৌথবাহিনীর অভিযানে অন্তত ৭ মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। সিপিআই (মাওবাদী)-র দুই শীর্ষনেতা – কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সুধাকর এবং তেলেঙ্গানা রাজ্য কমিটির নেতা ভাস্কর রয়েছেন মৃতদের তালিকায়।
গোয়েন্দাদের মতে, বর্তমানে ছত্তিশগড়-তেলেঙ্গানা সীমানাবর্তী কারেগুট্টা পাহাড়ি এলাকা মাওবাদীদের অন্যতম শক্তঘাঁটি। এই এলাকা থেকে মাওবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে প্রায় ৩ হাজার আধাসেনাকে নামানো হয়েছে। ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩১ জনের বেশি মাওবাদীকে হত্যা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খতম করা হয়েছে মাওবাদীদের সাধারণ সম্পাদক বাসবরাজুকে, যার মাথার দাম ছিল ১.৫ কোটি টাকা।