‘অপারেশন সিঁদুর’-এ বিশেষ অবদান রয়েছে বিএসএফের নারী বাহিনীর। সীমান্তে অবস্থিত ভারতের পোস্ট রক্ষার দায়িত্ব ছিল বিএসএফের মহিলা কমান্ডারদের হাতে। তাঁদের সতর্ক প্রহারায় বারবার পাক জঙ্গিরা ব্যর্থ হয়েছে অনুপ্রবেশে। একই সঙ্গে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতও করেছেন তাঁরা। ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন টানা তিন রাত পাক গোলা-গুলি বর্ষণের মধ্যে বিএসএফের সহকারী কমান্ড্যান্ট নেহা ভাণ্ডারীর নেতৃত্বে ৬ মহিলা বিএসএফ কর্মী সীমান্তে সাম্বা-আরএস পুরা-আখনুর সেক্টরে নিশ্চিদ্র পাহারায় ছিলেন। সেই দলে ছিলেন বঙ্গতনয়া স্বপ্না রথ ও শম্পা বসাক।
মাত্র বছর দুই-তিন আগে সীমান্ত প্রহরায় যোগ দেওয়া এই বীরাঙ্গনাদের যুদ্ধের কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না। তা সত্ত্বেও তাঁদের সাহস দেখে অবাক সেনাকর্তারা। বৃহস্পতিবারই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৯ জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংসে বায়ুসেনার মহিলা অফিসারদের ভূমিকার কথা বলেন। চিফ অফ আর্মি স্টাফ উপেন্দ্র দ্বিবেদী ওই বিএসএফের সহকারী কমান্ড্যান্ট নেহা ভাণ্ডারীকে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করেছেন। প্রসঙ্গত, নেহাই সম্ভবত প্রথম মহিলা অফিসার, যিনি এই ধরনের সক্রিয় যুদ্ধে অংশ নিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নেহার নেতৃত্বে এই দলের জবাবেই স্তব্ধ হয়ে যায় তিনটি পাক পোস্ট। বিএসএফের সহকারী কমান্ড্যান্ট নেহা ভাণ্ডারীর সঙ্গে থাকা চারজন মহিলা ২০২৩ সালে বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। প্রায় ১৭ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিএসএফ কর্মীও দলে ছিলেন। দলের সদস্যরা হলেন, পাঞ্জাবের মনজিত কৌর এবং মালকিত কৌর, পশ্চিমবঙ্গের স্বপ্না রথ এবং শম্পা বসাক, ঝাড়খণ্ডের সুমি জেস এবং ওড়িশার জ্যোতি বানিয়ান। সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরায় থাকা এই মহিলা ব্রিগেডকে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ফিরে আসার বার্তা পাঠানো হয়েছিল হেড কোয়ার্টার থেকে। যদিও তাঁরা কেউ ফিরতে চাননি।
উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা নেহা ভাণ্ডারী তাঁর পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের অফিসার। নেহার দাদা সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাবা এবং মা প্রাক্তন সিআরপিএফ কর্মী। নেহা বলেন, ‘আখনুর-পরগ্বোয়াল এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপারে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের সীমান্ত ছাউনি থেকে আমরা মাত্র ১৫০ মিটার দূরে ছিলাম। তাই দেশের জন্য লড়াই করার এই সুযোগ আমরা হাতছাড়া করতে চাইনি। পাকিস্তানের সিয়ালকোট এলাকার তিনটি পাক ছাউনি ভারতের নজরদারি মধ্যে পড়ে। আমরা ওই তিনটিকেই গুঁড়িয়ে দিয়েছি। আমাদের হামলায় ওরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।’