সােশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত খুনি তকমা, সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা কেরলের এক চিকিৎসকের

সােশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত আক্রমণ। শেষপর্যন্ত খুনি তকমা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন রেলের এক চিকিৎসক। ওই চিকিৎসকের নাম অনুপ কৃষ্ণ (৩৫)।

Written by SNS Thiruvananthapuram | October 5, 2020 7:56 am

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

সােশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত আক্রমণ। শেষপর্যন্ত খুনি তকমা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন রেলের এক চিকিৎসক। ওই চিকিৎসকের নাম অনুপ কৃষ্ণ (৩৫)।

জানা গিয়েছে চিকিৎসক অনুপ তার অনুপ অর্থো কেয়ার হাসপাতালে এক ৭ বছরের মেয়ের হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচারের সময়েই মেয়েটির কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সে বাঁচেনি।

তার পরিবার ও স্থানীয় মানুষ এই মৃত্যুর জন্য অনুপকে অভিযুক্ত করেন। শুরু হয় হাসপাতালের বাইরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। পূর্ব কোল্লাম থানায় তার বিরুদ্ধে চিকিৎসা গাফিলতির অভিযােগ দায়ের করা হয়। তদন্ত শুরু করেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার এ প্রদীপ কুমার।

সােশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত ওই চিকিৎসককে খুনী বলে আক্রমন করতে থাকে নেট নাগরিকরা। শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন এই চিকিৎসক। এমনকি আত্মহত্যার আগে লেখার চেষ্টা করেন সরি।

এই তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যুতে কেরলের একাধিক চিকিৎসক সরব হয়েছেন। এঁদের মধ্যে একজন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসােসিয়েশনের কেরালার ভাইস প্রেসিডেন্ট চিকিৎসক সালফি নুহু। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, করােনার মধ্যে ওই শিশুর অপারেশনে রাজি হননি বেশ কয়েকজন চিকিৎসক। কিন্তু অনুপ পিছিয়ে যাননি। শিশুটির মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু তারপরেই এসে পড়ল বিচারের জন্য তৈরি সােশ্যাল মিডিয়া সৈন্যরা। তারা রায় দিল, দোষ চিকিৎসকের। দ্রুত উপার্জনের জন্য তাঁকে খুনীও বলে দিল তারা। এর মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পেতে প্রচার করল নেগেটিভ নিউজ। কিন্তু কেরালা একজন অসামান্য চিকিৎসককে হারাল। এমন চলতে পারে না, সাইবার ল-তে পরিবর্তন আনা উচিত। 

আর একজন চিকিৎসক লিখেছেন, সবাইকে সারিয়ে তােলার মত জাদু ওষুধ চিকিৎসকদের কাছে নেই। তাঁরাও মানুষ। হাতে যেটুকু সুযােগসুবিধে আছে, যেটুকু শিক্ষা তাঁরা অর্জন করেছেন ও বিজ্ঞান যতটা এগিয়েছে, তার ভরসায় তারা এই পেশায় এসেছেন। এই আত্মহত্যা প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীর হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করল, সমাজের নীরবতা এর জন্য দায়ী। 

এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই চিকিৎসকের মৃত্যুর ক্ষেত্রে সােশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনওভাবে হুমকি পেয়েছিলেন কি ওই চিকিৎসক, তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।