ন্যায্য টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। এই অভিযোগ বারবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার বঞ্চনা নিয়ে সংসদে সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদেরা। কিন্তু এবার যেটা হলো তাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বেনজির ঘটনা বলা যেতে পারে। গোটা আর্থিক বছরে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে একটি টাকাও পায়নি পশ্চিমবঙ্গ। কারণ, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চলতি আর্থিক বছরের বাজেটে বাংলার জন্য এই খাতে কোনও বরাদ্দই করা হয়নি। আরও একটা বাজেট আসতে চলেছে। মাঝে মাত্র আর ১ মাস বাকি। অথচ এখনও ১০০ দিনের কাজের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও বৈঠক করেনি এক্সিকিউটিভ কমিটি। তাতেই অশনিসংকেত দেখছেন অনেকে। কারণ, কেন্দ্র-রাজ্য এই বৈঠক না হলে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প খাতে পশ্চিমবঙ্গের জন্য কোনও বরাদ্দ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
১০০ দিনের কাজে কোন রাজ্যে চাহিদা কতখানি, কত কর্মদিবস তৈরি হতে পারে, তা বুঝতে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এক্সিকিউটিভ কমিটি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করে। সেই মোতাবেক বরাদ্দের প্রস্তাব দেন তাঁরা। এ বার এখনও সেই বৈঠক হয়নি বলেই পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
Advertisement
বাংলায় ১০০ দিনের কাজে এভাবে টাকা বন্ধ করে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে তর্ক রয়েছে। সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করেন যে, সিস্টেমেটিক ভাবে এই প্রকল্পে বরাদ্দ কমাচ্ছে কেন্দ্র। বাংলা এই খাতে বরাবর সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে। এখানে কাজের চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। সবচেয়ে বেশি কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। তাই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রকল্প খাতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে কেন্দ্র তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে । রাজ্য সরকারকে শায়েস্তা করতে গিয়ে আখেরে প্রান্তিক মানুষগুলোর কাজের অধিকার কেড়ে নিয়েছে মোদী সরকার।
Advertisement
২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলার ৪৩ লক্ষ ৯২ হাজার পরিবার কাজ পেয়েছিল। রাজ্যের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল হাজার কোটিরও বেশি টাকা। যে টাকা গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাহিদাও বাড়িয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকেই ভাটা শুরু হয়। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যের জন্য নতুন বরাদ্দ বন্ধ করেছে কেন্দ্র। পুরনো বকেয়া পাওয়া বাবদ রয়েছে ৭ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকা পাওয়ার সম্ভাবনাও প্রায় নেই বলেই খবর।
শুধু ১০০ দিনের কাজ নয়, আবাস যোজনা খাতে রাজ্যের বকেয়া পাওনা রয়েছে ৮২০০ কোটি টাকা। এই সব বকেয়া টাকা দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেও এখনও পায়নি বাংলা।
Advertisement



