ভোটের আগে গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন বিনয়

বিনয় তামাং-এর এই ঘুরে যাওয়া কি শুধুই জাতশত্রু বিমল গুরুংকে ঠেকানাের জন্য?ইতিহাস পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে বিনয়ের বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন,প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

Written by SNS Kolkata | January 8, 2021 11:06 am

বিনয় তামাং (ছবি: SNS Web)

বিধানসভা ভােটের আগে প্রতিবারই পাহাড় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গাের্খাল্যান্ড ইস্যুতে। যেখানে অগ্নিসংযােগের কাজ করে কেন্দ্রের শাসক সরকার। আর জ্বালানি যােগানাের কাজটা করে থাকে গোর্খা জনমুক্তি মাের্চা।

গত লােকসহ নির্বাচনের আগে বিমল গুরুং এই গাের্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে বিজেপির দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই সময় পাহাড়ের রাজনীতি অশান্ত হয়ে উঠেছিল। বিমল গুরুং-এর নামে ইউএপিএ ধারায় মামলা দায়ের করেছিল রাজ্য সরকার। আত্মগােপন করেন বিমল গুরুং। শুরুং-এর অনুপস্থিতিতে রাজ্য সরকারের হাত ধরে গাের্খা জনমুক্তি মাের্চার প্রশাসক পদে বলেন বিনয় তামাং।

ইতিমধ্যে বিজেপির প্রতি মােহভঙ্গ হওয়ার পর ফের পাহাড়ে ফিরে আসেন বিমল গুরুং। এবার তিনি ভােল পাল্টে বিধানসভা ভােটে তৃণমূলকে সমর্থন করার কথা বলেন। ক’দিন আগে পাহাড়ে সভা করেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রিত্বের পক্ষে সওয়াল করেন গুরুং। তৃণমূলে গুরুং- এ গুরুত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই উল্টো সুর গাইতে থাকেন বিনয় তামাং এবং তার অনুগামীরা।

বৃহস্পতিবার বিনয় তামাং গাের্খাল্যান্ডের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। একই সঙ্গে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন, যাতে গুরুং পাহাড়ের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটায়। বিনয় তামাং-এর এই ঘুরে যাওয়া কি শুধুই জাতশত্রু বিমল গুরুংকে ঠেকানাের জন্য? নাকি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে বিনয় তামাংও বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

আসলে নির্বাচন এলেই গাের্খাল্যান্ড ইস্যুকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করে গাের্খা জনমুক্তি মাের্চা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জানিয়ে আসছেন পৃথক গাের্খাল্যান্ডের দাবি তিনি মানবেন না। বাংলাকে ভাগ হতে তিনি দেবেন না।

কিন্তু পাহাড়ের বাসিন্দারা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি পৃথক গাের্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে বারবারই কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হয়। পাহাড়ের মানুষের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি গাের্খাল্যান্ড ইস্যুটি সমাধান না করে জিইয়ে রাখে। ভােট শেষ হয়ে গেলেই কেন্দ্রীয় সরকার চুপচাপ হয়ে যায়।

সম্প্রতি দার্জিলিং-এর এক জনসভায় বিমল গুরুং প্রকাশ্যে বিজেপির প্রতি তার মােহভঙ্গের কথা বলেন। তিনি বলেন, গত বারো বছর ধরে প্রতারণা করে আসছে বিজেপি। এবার দেখিয়ে দেব, গাের্খারা কী করতে পারে। আঠেরােটি আসনে লড়াই হবে। একুশে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

বৃহস্পতিবার কালিম্পং-এর এক জনসভা শুরুং বলেন, বিজেপি ৭০-৮০ আসনের বেশি পাবে না এই রাজ্যে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি বিমল গুরুং এর এদিনের জনসভায় ছিল উপচে পড়া ভিড়।

বিমল গুরুং যখন পাহাড়ে তৃণমূলের হাত শক্ত করার কথা বলছেন, সেই সময়েই বেসুরাে গাইতে থাকেন বিনয় তামাং। বৃহস্পতিবার তিনিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন পৃথক গােঙ্খাল্যান্ডের দাবিতে। তামাংয়ের এই ভােলবদল । কি দলবদলের জন্যই? এই প্রশ্নটি ঘােরাফেরা করছে তৃণমূলের অন্দরে।