• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

৪২ বছর পর মর্মান্তিক ‘নেলি গণহত্যা’-র রিপোর্ট পেশ করবে অসম সরকার

এই নারকীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিভুবন প্রসাদ তিওয়ারি, কমিশনের রিপোর্ট পেশ করবেন সরকারের তরফ থেকে

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

অসমের বুক থেকে বাঙালিদের তাড়ানোর উদ্দেশে ৮০-র দশকে অসমে ঘটেছিল এক মর্মান্তিক ঘটনা। ১৯৮৩ সালে অসমের বাঙালি অধ্যুষিত গ্রাম নেলি এবং আশেপাশের আরও কিছু গ্রামে অসমের মানুষেরা অভিযান চালান এবং এক রাতের মধ্যে প্রায় ৩০০০ বাঙালিকে হত্যা করেন। সেই নেলি গণহত্যার রিপোর্ট অবশেষে পেশ করা হবে অসম বিধানসভায়। জানা গিয়েছে, এই নারকীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিভুবন প্রসাদ তিওয়ারি, কমিশনের রিপোর্ট পেশ করবেন সরকারের তরফ থেকে।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই বিষয়ে বলেছেন, ‘এই রিপোর্ট অনেক আগে থেকে প্রস্তুত  করা ছিল। কিন্তু রিপোর্টে তিওয়ারির স্বাক্ষর না থাকায় অসমের আগের সরকার এই বিষয়ে কোনোরকম পদক্ষেপ নেয়নি। আগের সরকার এই রিপোর্টের সত্যতার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল না। কিন্তু আমরা এই রিপোর্ট যারা তৈরি করেছেন সেই আধিকারিক এবং কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি।

Advertisement

রিপোর্টের ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হয়েছে। তারপর আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে এটি আসল রিপোর্ট। এই বিষয়টি নিয়ে একটি সাহসি পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার ছিল। এই রিপোর্টটি বিধানসভায় পেশ করা দরকার কারণ এটি আমাদের ইতিহাসের অংশ। এই রিপোর্ট থেকে মানুষ জানতে পারবেন যে ওই সময় ঠিক কী ঘটেছিল।‘

Advertisement

উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারির নেলি গণহত্যা অসমের ইতিহাসের একটি কালিমালিপ্ত সময়। আহম রাজবংশের পর অসম ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে আসে। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহার থেকে শ্রমিকদের নিয়ে এসে চা-বাগানে নিয়োগ করতেন ব্রিটিশরা। অসমের সীমান্তবর্তী   বাংলাদেশ থেকেও অনেক মানুষ অসমে এসে বসবাস করতে শুরু করেন।

ভারত স্বাধীন হওয়ার পর সেই মানুষেরা অসমের বাসিন্দা হিসাবে ভোটাধিকারও পান। ৮০-র দশকে বাঙালিদের অসম থেকে বের করার জন্য আন্দোলন শুরু হয় । এই আন্দোলন শুরু হয় অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (এ এএসইউ) নেতৃত্বে। এই দলের দাবি ছিল, বাঙালিদের অসমের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এই দাবি তুলে নির্বাচন বয়কট করেছিল এ এএসইউ।

 এরপরেও নওগাঁও জেলার নেলি এবং অন্যান্য মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামের বাসিন্দারা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এরপর ১৯৮৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত্রিবেলা প্রায় তিন হাজার বাঙালিকে হত্যা করেন অসমের মানুষেরা। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন নারী এবং শিশু। পুলিশ তদন্ত চলাকালীন অনেককে গ্রেপ্তার করেন কিন্তু এই গণহত্যা সংক্রান্ত মামলাগুলির বিচার হয়নি। এরপর রাজ্যবাসীর বিক্ষোভের ফলে যে সরকার ক্ষমতায় আসে তারা নেলি গণহত্যা-সংক্রান্ত সব মামলা প্রত্যাহার করেছিল।

Advertisement