সঙ্গীতজগতের নক্ষত্র জুবিন গর্গের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ অসম। শনিবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘোষণা করলেন, ২০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে পালিত হবে রাষ্ট্রীয় শোক। এই সময়সীমায় সরকারি সব অনুষ্ঠান, উৎসব ও গণউৎসব বন্ধ থাকবে। তবে ‘সেবা সপ্তাহ’-র অধীনে জরুরি পরিষেবা ও প্রাথমিক কার্যক্রম চালু থাকবে। কিন্তু কোনও ধরনের সাংস্কৃতিক বা বিতরণ অনুষ্ঠান স্থগিত থাকবে।
শুক্রবার সিঙ্গাপুরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গর্গের। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫১। জানা গিয়েছে, সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করার সময় গুরুতর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় তাঁর। দ্রুত সিপিআর দেওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটে নাগাদ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
Advertisement
শনিবারই মুখ্যমন্ত্রী শর্মা তাঁর স্ত্রী রিণিকি ভূঁইয়া শর্মাকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়াত শিল্পীর গুয়াহাটির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমাদের প্রিয় জুবিনের প্রয়াণে গোটা অসম শোকাহত। তাঁর পরিবারের পাশে আমরা আছি।’ তিনি আরও জানান, হাজার হাজার ভক্ত শেষবারের মতো প্রিয় শিল্পীর দেহাবশেষ দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন। খুব দ্রুত তাঁর মরদেহ অসমে আনা হবে।
Advertisement
তবে শুধু অসম নয়, তাঁর এই অকাল মৃত্যুর খবরে সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের নানা প্রান্তে শিল্পীর ভক্তরা শোকে ভেঙে পড়েছেন। গুয়াহাটি থেকে জোরহাট সর্বত্রই ভক্তরা গান শুনে, ছবি সাজিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রিয় শিল্পীকে স্মরণ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও শিল্পীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি জানান, ‘জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গর্গের আকস্মিক প্রয়াণে আমি স্তম্ভিত। তাঁর অবদান ভারতীয় সঙ্গীতভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর পরিবার ও ভক্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’
অসমের লোকসংগীত থেকে বলিউড— জুবিন গর্গের কণ্ঠে একের পর এক জনপ্রিয় গান পেয়েছে ভক্তরা। হিন্দি ছবির গান ‘ইয়া আলি’ তাঁকে পৌঁছে দিয়েছিল সর্বভারতীয় জনপ্রিয়তার শিখরে। পাশাপাশি অসমিয়া, হিন্দি ও বাংলা গানে সমান দক্ষ ছিলেন তিনি।
রাজ্যজুড়ে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের এই ঘোষণা যেন আরও একবার প্রমাণ করে দিল, জুবিন গর্গ কেবল একজন শিল্পী নন, তিনি অসমের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের এক অমলিন প্রতীক।
Advertisement



