অপারেশন সিঁদুর ও কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে গ্রেপ্তার হলেন এক অধ্যাপক। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত অধ্যাপক আলি খান মেহমুদাবাদ অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্স বিভাগের প্রধান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার অভিযান ও প্রেস ব্রিফিংয়ে মহিলা আধিকারিককে সামনে আনার ঘটনাকে ‘লোক দেখানো’ ও ‘ভনিতা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। এরপর হরিয়ানার রাজ্য মহিলা কমিশনের তরফে নোটিস পাঠানো হয় আলি খানকে। তাদের দাবি, সাম্প্রদায়িক বিভেদ ছড়ানোর মতো মন্তব্যও এতে রয়েছে। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় অধ্যাপক খানকে।
পুলিশের দাবি, সোশাল মিডিয়ায় সেনাবাহিনীর মহিলা অফিসারদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক। তাঁর এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি জাতিগত উত্তেজনা উস্কে দিয়েছেন। যদিও ইতিহাসবিদ ও লেখক রামচন্দ্র গুহের দাবি, সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিপন্নতার কথাই বলতে চেয়েছেন ওই অধ্যাপক। অশোকা বিশ্ববিদ্যালয় সোনেপতের ক্যাম্পাসের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘আমাদের অধ্যাপক মেহমুদাবাদকে রবিবার সকালে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বিষয়টি বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করবে কর্তৃপক্ষ।’
Advertisement
এক্স হ্যান্ডলে অধ্যাপক লিখেছিলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর ও সোফিয়া কুরেশিকে সামনের সারিতে তুলে আনার ঘটনা লোক দেখানো। এই ধরনের জাতীয় ব্রিফিং শুধু বাহ্যিক শোভা বা অপটিক্স, যা আসলে দ্বিচারিতা ছাড়া কিছু নয়। আসলে নাটক করা হচ্ছে সরকারের তরফে। আমি খুশি যে সংবাদমাধ্যম মানুষ কর্নেল সোফিয়া কুরেশির প্রশংসা করছেন। তারা যদি একইরকম জোরালোভাবে গণপিটুনি, বুলডোজার অভিযান ও ঘৃণার রাজনীতির শিকার মুসলিম নাগরিকদেরও রক্ষা করার দাবি তোলেন, তা হলে সেটাই প্রকৃত দেশপ্রেম হবে।’
Advertisement
এই মন্তব্য ঘিরেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়। হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশনও নিজে থেকেই বিষয়টির তদন্তে নেমে অধ্যাপক মেহমুদাবাদকে নোটিস পাঠায়। কমিশনের মতে, তিনি যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করেছেন, তা সেনাবাহিনীর মহিলা সদস্যদের সম্মানহানির পাশাপাশি সমাজে অশান্তি তৈরি করতে সক্ষম। যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি অভিযুক্ত অধ্যাপক। তাঁর বক্তব্য, ‘একজন নাগরিক হিসেবে আমি সেনা ও সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষার দিকেই জোর দিয়েছি। আমার মন্তব্যে কোথাও নারীবিদ্বেষ নেই। আমি একটাই কথা বলতে চেয়েছি, তা হল – এই অন্তর্ভুক্তির মানসিকতা যেন দেশের অন্যান্য মুসলিম নাগরিকদের প্রতিও দেখানো হয়।’
Advertisement



