• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হলে রাশিয়ার তেল কিনবই : ওএনজিসি

ওএনজিসি-র চেয়ারম্যান অরুণকুমার সিংহ জানান, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে সরকারের তরফেও কোনওরকম চাপ দেওয়া হয়নি।

ভারতের অন্যতম রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশন তথা ওএনজিসি জানিয়েছে, যত দিন ভারতের কাছে লাভজনক থাকবে, তত দিন রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল কেনা এবং তা পরিশোধন করার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। ওএনজিসি-র চেয়ারম্যান অরুণকুমার সিংহ জানান, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে সরকারের তরফেও কোনওরকম চাপ দেওয়া হয়নি।

ওএনজিসি-র চেয়ারম্যান বলেন, যত দিন পর্যন্ত লাভজনক থাকবে, তত দিন পর্যন্ত আমরা প্রতি ফোঁটা তেল কিনে যাব। সরকার যতক্ষণ না অন্য কোনও কিছু ভাবছে , ততক্ষণ পর্যন্ত পুতিনের দেশ থেকে তেল কেনা নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ নেই বলে জানান তিনি। তিনি জানান, ওএনজিসি গোষ্ঠীর দুই তেল পরিশোধনকারী সংস্থা হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন তথা এইচপিসিএল এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস তথা এমআরপিএল-এর রাশিয়ার তেল কেনার বিষয়ে কোনও বিধিনিষেধ নেই।

Advertisement

গত বুধবার থেকে ভারতের কাঁধে ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক চেপেছে। যদিও ট্রাম্পের এই জরিমানার হুমকিকে পরোয়া করছে না দিল্লি। নিঃশব্দে কূটনৈতিক কৌশলেই বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভারত রাশিয়া থেকেই তেল কিনবে। প্রসঙ্গত, এইচপিসিএল ও এমআরপিএল যৌথ ভাবে বছরে ৪ কোটি টন তেল পরিশোধন করতে পারে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ হলে শোধিত তেলের একাংশ পশ্চিমের দেশগুলিতে বিক্রি করে ভারত।

Advertisement

আমেরিকার দাবি, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে মস্কোকে মুনাফা করার সুযোগ করে দিচ্ছে ভারত। তেল বিক্রির টাকা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কাজে লাগাচ্ছে রাশিয়া। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় রাশিয়া থেকে ২ শতাংশেরও কম তেল আমদানি করত ভারত। আমেরিকা এবং ইউরোপ রাশিয়ার তেলের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করলে ছাড়ের প্রস্তাব দেয় মস্কো। ফলে তুলনায় স্বল্প দামে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পরিমাণ বাড়াতে থাকে ভারত।

প্রথমে ভারতের উপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর পর রাশিয়া থেকে তেল আমদানির অপরাধে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপে ভারতের উপর। এরপরেও সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই ২ মাসের জন্য রাশিয়াকে বিপুল পরিমাণ তেলের বরাত দিয়েছে ভারত। কারণ ব্যারেলপ্রতি তিন ডলার ছাড় দেওয়া হয়েছে উরালের তেলে। হিসাব অনুযায়ী, এই ছাড়ের অঙ্কটা ৫ শতাংশ। তবে এই নিয়ে সরকারিভাবে কোনও পক্ষই কিছু জানায়নি। তবে এটা পরিষ্কার, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বাড়িয়ে আমেরিকাকেই পালটা বার্তা দিয়েছে দিল্লি। ওএনজিসির বার্তায় স্পষ্ট, এই কৌশলই বজায় রাখবে ভারত। ভারত একাধিকবার জানিয়েছে, জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই তেল আমদানির বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা অতিরিক্ত শুল্ক ‘অকারণ ও অযৌক্তিক’ । এ ক্ষেত্রে ভারতেরও পাল্টা প্রশ্ন, চিন-সহ আরও অনেক দেশ রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করে থাকে। সেক্ষেত্রে ভারতকে কেন শুধু জরিমানা করা হচ্ছে। একই প্রশ্ন তুলেছে আমেরিকার বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টিও।

আমেরিকা ভারতকে শুল্কচাপে রাখলেও আন্তর্জাতিক স্তরে নিজের শক্তি বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছে ভারত।এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে পৌঁছে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভ্লাদিমির পুতিন ছাড়াও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জন উনেরও সেখানে যোগ দেওয়ার কথা। ট্রাম্পের বিপরীতে গড়ে উঠছে নতুন জোটশক্তি।

Advertisement