• facebook
  • twitter
Saturday, 17 May, 2025

মমতা সহ সীমান্তবর্তী ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে শাহ

যেকোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে রাখছে। সেজন্যই এই জরুরি বৈঠক করলেন অমিত শাহ।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে প্রত্যাঘাতের পর জাতীয় নিরাপত্তার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র। আর সেজন্য মমতা সহ ভারতের সীমান্তবর্তী ১০টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। ওই বৈঠকে তিনি অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কেও বিস্তারিত জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ডাকা ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের পক্ষ থেকে ভার্চুয়ালে উপস্থিত ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। বাংলা ছাড়া জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাত, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী, ডিজি এবং সচিবেরা বৈঠকে ছিলেন।

প্রসঙ্গত পহেলগামে জঙ্গি হামলার ১৫ দিন পর মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রত্যাঘাত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাক পাঞ্জাব ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছে ভারত। এই প্রত্যাঘাতে বহু জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় উপমহাদেশে রয়েছে চরম উত্তেজনা। ভারতের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলি। সেজন্য যেকোনও মুহূর্তে ভারতের যেকোনও প্রান্তে ফের জঙ্গি নাশকতার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তান ও নেপালের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে এই সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি রয়েছে। আর সেজন্যই অপারেশন সিঁদুরের পরই সীমান্তবর্তী এইসব ১০ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী ও সেখানকার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুর-এর প্রত্যাঘাতে রীতিমতো কোমর ভেঙে গিয়েছে একাধিক পাক জঙ্গিগোষ্ঠীর। কিন্তু পাকিস্তান ও সেদেশের মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি যে এরপর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না, সে কথা খুব ভালো করেই জানে দিল্লি। তাই যেকোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে রাখছে। সেজন্যই এই জরুরি বৈঠক করলেন অমিত শাহ।

এদিকে অপারেশন সিঁদুরের পর প্রত্যাঘাতের হুমকি দিয়েছে পাকিস্তান। তবে ইসলামাবাদ সরাসরি হামলা করার পরিকল্পনার থেকেও ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে নাশকতার ছক কষতে পারে বলে মনে করছে দিল্লি। তাই নেপাল ও পাকিস্তানের সঙ্গে যে সব রাজ্যের সীমান্ত রয়েছে, সেই সব রাজ্যের প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন অমিত শাহ। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুপ্রবেশ রুখতে রাজ্য প্রশাসনগুলির সহায়তা চেয়েছেন। যে সব রাজ্যের সীমান্তে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গুলিবর্ষণ করছে বা করতে পারে, সেই সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের দ্রুত সীমান্ত থেকে সাধারণ নাগরিকদের সরিয়ে নিয়ে তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি জানান, সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তাই এখন ভারত সরকারের কাছে প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের ধারনা, প্রত্যাঘাত হানতে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনকেও কাজে লাগাতে পারে পাক হানাদাররা। এমনকি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলি দিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশও অসম্ভব নয়। সেজন্য পশ্চিমবঙ্গ সহ আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের মতো রাজ্যগুলিকে ব্যবহার করতে পারে জঙ্গিরা। সেবিষয়েও সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।