রামদেবকে চিটিংবাজ বললেন অধীর

যোগ প্রশিক্ষক বাবা রামদেব দাবি করেছেন, করোনার ওষুধ আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি। পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের করোনিল।

Written by SNS New Delhi | June 25, 2020 3:00 pm

পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের করোনিল লঞ্চ করছে রামদেব। (Photo: Twitter | @PParidhan)

করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে গিয়ে ঘুম ছুটে গিয়েছে বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানী বিশেষজ্ঞদের। এর মধ্যেই কিনা যোগ প্রশিক্ষক বাবা রামদেব দাবি করেছেন, করোনার ওষুধ আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি। পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের করোনিল। তাঁর দাবি, এই ওষুধ খেলেই সাত দিনে সারবে করোনা, ১০০ শতাংশ নিশ্চিত।

রামদেবের এই দাবি নিয়েই তার তীব্র সমালোচনা করলেন লোকসভায় কংগ্রেস নেতা। মঙ্গলবার অনেক রাতে সটান রামদেবকেই টুইটে মেনশন করে অধীরবাবু বলেন, আপনি সত্যিই একটা চিটিংবাজ বটে। ভোজবাজির মতোই করোনা সারিয়ে দিতে পারেন আপনি! এর পরই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা লিখেছেন, সরকারের উচিত এই গেরুয়া ভেকধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।

অধীরবাবুর এই মন্তব্যের আগেই অবশ্য রামদেবের দাবি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। তাঁর ওষুধ তথা দাবি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে সরকার। শুধু তাই নয়, এই ধরনের দাবির কোনও প্রক্ষালব্ধ প্রমাণ না থাকায় ওষুধটির প্রচার, বিজ্ঞাপন, বিপণন— সবই বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা বাবা রামদেব আজই সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তাঁর আবিষ্কৃত আয়ুর্বেদিক ওষুধ করোনিল এবং স্বসারি এ পর্যন্ত দেশের ২৮০ জন কোভিড পজিটিভ রোগীর উপর পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল। তিনদিনের মধ্যে ৬৫ শতাংশ রোগীর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। সংক্রমণ সেরে গিয়ে সকলের শারীরিক অবস্থাই স্থিতিশীল।

রামদেবের আরও দাবি, করোনিলের ট্রিটমেন্টে সাত দিনের মধ্যে ১০০ শতাংশ রোগীর সংক্রমণ কমে গেছে। মৃত্যু একটিও নেই। এই সপ্তাহ থেকে সারা দেশে ৫৪৫ টাকার বিনিময়ে এই ওষুধ পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি। এই নিয়ে মঙ্গলবার হইচই পড়ে যায়।

রামদেবের দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। সেটাই স্বাভাবিক। যে ওষুধের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব, গবেষণায় তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত ল্যাবরেটরিগুলি, সেই ওষুধ নাকি এমন তুড়িতে আবিষ্কার করে ফেললেন যোগগুরু রামদেব!

এর পরেই আয়ুষ মন্ত্রক পতঞ্জলিকে একটি নোটিস পাঠিয়ে জানায়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ওষুধের উপাদান কী কী তা জানাতে হবে। তিনি যে রোগীদের উপর গবেষণা করেছেন, তার বিস্তারিত তথ্যও জানাতে হবে। কোন হাসপাতালে এই পরীক্ষা চলেছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য এই সংস্থা আদৌ সরকারের কাছে নাম লিখিয়েছিল কিনা— সবটাই বিশদে জানতে চেয়েছে কেন্দ্র।

আয়ুষ মন্ত্রকের ওই নোটিসে লেখা আছে, এই দাবির সত্যতা এবং এর পেছনে যে বিস্তারিত ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা থাকার কথা, সে সম্পর্কে কিছুই জানে না মন্ত্রক। পতঞ্জলি সংস্থার তরফে নতুন এই ওষুধ করোনিল লঞ্চ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই নোটিস এসে পৌঁছয় রামদেবের দফতরে। পাশাপাশি, যে ওষুধটি সদ্য আবিষ্কৃত হয়েছে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে, আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে সেটির কী অনুমোদন ও লাইসেন্স রয়েছে, তাও দেখতে চেয়েছে মন্ত্রক।