‘অশান্ত’ রাজ্য মণিপুরে ফের শুরু হল জঙ্গি বিরোধী অভিযান। বৃহস্পতিবার রাত থেকে মায়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শুরু হওয়া যৌথ অভিযানে ইতিমধ্যেই ৮ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী। ধৃতরা চারটি নিষিদ্ধ বামপন্থী সশস্ত্র সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে মণিপুর পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইম্ফল পশ্চিম, কাকচিং এবং থৌবল – এই তিন জেলায় ধারাবাহিক অভিযান চালানো হয়। শুক্রবার রাতে ইম্ফল পশ্চিম জেলার মহারাবি এলাকা থেকে ধরা পড়ে ‘পিপল্স রেভলিউশনারি পার্টি অফ কাংলেইপাক’ (প্রিপাক)-এর ভিসি-রেড আর্মি শাখার এক সক্রিয় ক্যাডার। ওইদিন কাকচিং জেলার উমাথেল এলাকা থেকে ধরা হয় আরও দুই জঙ্গিকে, যাঁরা সোরেপা নামক সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ইম্ফল পশ্চিম জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘কাংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টি (পিডব্লিউজি)’-র তিন সদস্য এবং একই সংগঠনের ‘তাইবাঙ্গানবা’ শাখার দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ২০২৩ সালে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর মণিপুরের পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে উত্তপ্ত। এই অস্থিরতার আবহেই চিনপন্থী সশস্ত্র সংগঠনগুলি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। প্রিপাক, ইউএনএলএফ, সোরেপা-র মতো কট্টরপন্থী সংগঠনগুলি সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমারের ভিতরে গোপন ঘাঁটি তৈরি করেছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গোয়েন্দারা।
রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্ত অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে তল্লাশি ও নজরদারি অব্যাহত থাকবে। রাজ্যের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কোনও আপস করা হবে না বলেও জানিয়েছে প্রশাসন। এই অভিযানকে জঙ্গি দমন নীতির অংশ হিসেবেই দেখছে প্রতিরক্ষা মহল। তবে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির লাগাতার সক্রিয়তা ইঙ্গিত দিচ্ছে, অশান্ত মণিপুরে স্থায়ী শান্তি ফেরাতে প্রশাসনের সামনে লড়াই এখনও কঠিন।