চারধাম যাত্রার প্রথম মাসেই ৭৩ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। তবে গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যাটা কম। প্রশাসন সূত্রে খবর, কেদারনাথে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জন পুণ্যার্থীর। বদ্রীনাথের পথে মৃত্যু হয়েছে হয়েছে ১৫ জনের। যমুনোত্রীতে ১২ জনের এবং গঙ্গোত্রী যাত্রার পথে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। প্রশাসন সূত্রে খবর, মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান এবং হরিয়ানার বাসিন্দা। তাঁদের বয়স ৪৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।
স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এবং দুর্ঘটনার জেরে পুণ্যার্থীদের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের স্বাস্থ্যসচিব আর রাজেশ কুমার বলেন, ‘বড় সংখ্যক পুণ্যার্থীকে চিকিৎসা শিবিরগুলিতে মৃত অবস্থাতেই নিয়ে আসা হয়েছে। তবে গত বছরে এই সময়ের মধ্যে যত মৃত্যু হয়েছিল, তার তুলনায় এ বছর সেই সংখ্যাটা কম।’ গত বছরের চারধাম যাত্রায় ছ’মাসে ২৪৬ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছিল।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রা শুরুর প্রথম মাসে ৪ লক্ষ ৩০ হাজার পুণ্যার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল। গোটা যাত্রাপথে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬৯ জন মেডিক্যাল অফিসার, ১২১ জন নার্স, ২৬ ফার্মাসিস্ট, ৩০৯টি অক্সিজেন-সজ্জিত শয্যা, ৬টি আইসিইউ শয্যা, অ্যাম্বুল্যান্স, ব্লাডব্যাঙ্কেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
যমুনোত্রী, গঙ্গোত্রী, কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথ— এই চারটি ধামকে একত্রে চারধাম বলে। চারধাম যাত্রা হিন্দুদের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি তীর্থযাত্রা। প্রতি বছর হিমালয়ের কোলে প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার পুণ্যার্থী চারধামে যান। বলা হয়, ঘড়ির কাঁটার দিকে এগিয়ে চারধাম যাত্রা সম্পূর্ণ করা উচিত। পুণ্যার্থীরা আগে যান যমুনোত্রীতে। তার পর গঙ্গোত্রী, কেদারনাথ হয়ে বদ্রীনাথ ভ্রমণ দিয়ে চারধাম যাত্রা শেষ হয়।
অনেকে আবার শুধু কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথ ঘুরে ফিরে আসেন। আকাশপথেও এই যাত্রা সম্পূর্ণ করা যায়। হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু আছে। তবে অধিকাংশ পুণ্যার্থী পায়ে হেঁটেই চারধাম ঘোরেন। উত্তরাখণ্ডের অর্থনীতি অনেকাংশে এই তীর্থযাত্রার উপর নির্ভর করে থাকে। চলতি বছর ৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন চারধাম যাত্রার শুভ সূচনা হয়। ওই দিন গঙ্গোত্রী এবং যমুনোত্রী ধামের দরজা পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ২ মে কেদারনাথ ও ৪ মে বদ্রীনাথ ধামের দরজা পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।