আজ থেকে ৭০ শতাংশ দাম বাড়ল মদের! ভিড় ঠেকাতে ও আয় বাড়াতে ‘করোনা ফি’ চাপাল দিল্লি সরকার

এমনিতেই করোনা আর লকডাউনের জেরে ব্যাপক ধাক্কা খেয়ে অর্থনীতি। এই অবস্থায় আবগারি দফতরের অতিরিক্ত রাজস্ব একটু হলেও জোয়ার আনতে পারে অর্থনীতিতে।

Written by SNS New Delhi | May 6, 2020 6:14 pm

মদের দোকানের সামনে বিশাল লম্বা লাইন। (File Photo: IANS)

বিশৃঙ্খলার ছবিটা স্পষ্ট ছিল গতকালই। যেন ঝাঁপ খোলারই অপেক্ষা ছিল। তার পরেই কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েন মদ্যপায়ী নাগরিকরা। এতদিন লকডাউনে যে নেশার জিনিস মেলেনি, তা সংগ্রহ করতে মানুষের বেপরোয়া আচরণ ছিল চোখে পড়ার মতো।

কোথাও থিকথিকে ভিড়ে লাঠি চালাতে হল পুলিশকে, কোথাও বন্ধই করে দিতে হল মদের দোকানের ঝাঁপ। কোথাও আবার মানুষ রীতিমতো বাজি ফাটাতে লাগলেন মদ খাওয়ার আনন্দে। এই অবস্থায় মদের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল দিল্লি সরকার। একলাফে ৭০ শতাংশ দাম বাড়ানো হল রাজধানীতে।

মঙ্গলবার থেকেই এই অতিরিক্ত ৭০ শতাংশ স্পেশাল ‘করোনা ফি’ বসানো হচ্ছে মদের দামে। এর ফলে মানুষের ভিড় একটু কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়বে সরকারের রেভিনিউ। জানা গেছে, মদের এমআরপির উপরেই এই ফি বসানো হচ্ছে। অর্থাৎ যে মদের দাম ১০০০ টাকা বলে লেখা রয়েছে, সেটাই এবার বিক্রি হবে ১৭০০ টাকায়।

এমনিতেই করোনা আর লকডাউনের জেরে ব্যাপক ধাক্কা খেয়ে অর্থনীতি। এই অবস্থায় আবগারি দফতরের অতিরিক্ত রাজস্ব একটু হলেও জোয়ার আনতে পারে অর্থনীতিতে। তাই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার মদের দোকানগুলির অবস্থা দেখে রীতিমতো উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মদ-সহ অন্যান্য দোকান খোলার ব্যাপারে অনেক শর্ত দিয়েছিল দিল্লি সরকার। কিন্তু মদের ক্ষেত্রে কোনও শর্তই মানতে চাননি ক্রেতারা। গায়ে গায়ে লেগে থাকা লাইন দেখা যায় এদিন।কেজরিওয়াল ঘোষণা করেন, নিয়ম না মানলে লকডাউনের ছাড় তুলে নিতে বাধ্য হবে দিল্লি সরকার।

সোমবার থেকেই ভারতে তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হয়েছে। এই সময়ে লকডাউনের মধ্যেই একাধিক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া যেতে পারে বলে রাজ্যগুলিকে জানায় কেন্দ্র। তার মধ্যে রয়েছে মদের দোকানও। প্রায় ৪০ দিন পরে মদের দোকান খুলল। সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে এক একটি দোকানে জড়ো হয়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। শুধু দিল্লি নয় দেশের অনেক শহরেই দেখা গিয়েছে এই ছবি। বাদ নেই কলকতা-সহ বাংলার অন্যান্য শহরও।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে, কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে ব্লেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোনে সোম্বার থেকে মদের দোকান খোলা যেতে পারে। তবে কোনও শপিং কমপ্লেক্স নয়, শুধুমাত্র এককভাবে (ওয়ান-স্ট্যান্ড) থাকা দোকানগুলোই খোলা যাবে।

একই সঙ্গে বলা হয়েছিল সেখানে ক্রেতাদের লাইন দিতে হবে। দু’জন ক্রেতার মধ্যে কমপক্ষে দু’গজ বা ছ’ফুট দূরত্ব রাখতে হবে। কিন্তু মদের দোকান খুলতেই দেখা গেল অবাক দৃশ্য। সংক্রমণের ভয় ভুলে, বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে হুড়োহুড়ি করলেন ক্রেতারা।

মদের দোকানের সামনে লম্বা লাইন সামলাতে গিয়ে নাভিশ্বাস অবস্থা হয় রাজধানীর পুলিশের। তাতেও সবটা সামলানো যায়নি। বেলা ১২’টায় দোকান খোলার কথা ছিল। কিন্তু তার অনেক আগে থাকতেই শুরু হয় ভিড়। আর দোকান খোলার পরে শুরু হয় ঠেলাঠেলি। বেশ কয়েক জায়গায় কিছুক্ষণ পরেই মদের দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন।