• facebook
  • twitter
Sunday, 3 August, 2025

কোচবিহারে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা, গ্রেপ্তার বিজেপি বিধায়কের ছেলে

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কালো রঙের একটি স্করপিও গাড়ি করে দুষ্কৃতীরা এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তৃণমূল নেতার ডান কাঁধে গুলি লাগে।

কোচবিহারে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা। এই ঘটনা ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্য কোচবিহার-২ ব্লকের ঝিনাইডাঙা এলাকায়। দলীয় কাজে সেরে বৃহস্পতিবার রাতে ১১টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল নেতা রাজু দে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কালো রঙের একটি চারচাকা গাড়ি করে দুষ্কৃতীরা এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। তৃণমূল নেতার ডান কাঁধে গুলি লাগে। জখম তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। এই ঘটনায় এলাকার বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়ের ছেলে সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’

গুলি চালানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। হামলার ঘটনায় বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। অন্যদিকে, গেরুয়া শিবিরের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন রাজু দে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজু দে কোচবিহার-২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ এবং চকচকা অঞ্চলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল ও সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তৃণমূলের অভিযোগ, এই গঠনার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি। তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায় বলেন, ‘জেলাজুড়ে তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। ওদের কর্মীরা বিভিন্ন সমাজবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরেই এই ঘটনা। এখানে বিজেপির কোনও নেতা বা কর্মী যুক্ত নেই।’ তাঁর অভিযোগ, ‘তৃণমূল জেলা সভাপতি নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য আমাদের উপরে মিথ্যে অভিযোগ চাপাচ্ছেন।’

তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র তথা কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা রাজু দে। ওই অঞ্চলে তৃণমূলকে শক্তিশালী করার পিছনে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। ফলে এই হামলার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, দেখতে হবে। আমরা আশা করি, পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করবে। যেভাবে আমাদের দলের নেতার উপর হামলা হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’

এদিকে যে গাড়িতে চেপে এসে দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছিল, সেটি কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সুকুমার রায়ের বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। শুক্রবার সেই গাড়িটিকে আটক করেছে পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। একই সঙ্গে রাজু দেকে গুলি করার ঘটনায় কোচবিহার উত্তরের বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়ের ছোট ছেলে দীপঙ্কর রায়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গাড়িচালক উত্তম গুপ্তও গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেছেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকায় বিজেপির দুষ্কৃতীরা দৌরাত্ম্য বাড়িয়েছিল। তারাই এই হামলা চালিয়েছে।’

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবারও থমথমে ছিল এলাকা। এদিন দিনভর কোচবিহার-২ ব্লকজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। শুক্রবার সকাল থেকেই তৃণমূল কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। কোচবিহার-২ ব্লকের চকচকা, পুন্ডিবাড়িতে পথ অবরোধ করা হয়। রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। এর ফলে কিছুক্ষণের জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়।