• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

পেরিমেনোপজ নিয়ে চিন্তা কীসের

মেনোপজ নিয়ে দুশ্চিন্তায় না থেকে, এটাকে একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখতে হবে। এই পর্যায়টা প্রত্যেক মহিলার জীবনেই আসবে।

ফাইল ছবি

মেনোপজ নিয়ে দুশ্চিন্তায় না থেকে, এটাকে একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখতে হবে। এই পর্যায়টা প্রত্যেক মহিলার জীবনেই আসবে। সাধারণত ৪০ বছরের আশেপাশেই মেয়েদের শরীরে মেনোপজের সূত্রপাতের স্পষ্ট কিছু লক্ষণ ফুটে উঠতে থাকে। এই অবস্থাকেই পেরিমেনোপজ বলা হয়। ঠিক কতদিন এই পরিস্থিতি থাকবে, তা সবার ক্ষেত্রে ভিন্ন। আপনার বংশের ধারা অনুযায়ী এটার মেয়াদ কম-বেশি হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানও তা-ই বলে যে, মেনোপজ বা পেরিমেনোপজ কবে হবে বা কতদিন পর্যন্ত চলবে, তা বংশগতির উপর নির্ভর করে। তবে আপনি যদি খুব ফিট হন, তা হলে প্রক্রিয়াটি খানিক পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব। উলটোদিকে আবার যাদের হরমোনের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঘটতে পারে সময়ের আগেই।

তবে গোড়ার দিকে এর কিছু লক্ষণ আপনিও বুঝতে পারবেন। অনিয়মিত পিরিয়ড কারও কারও মাসে একাধিকবার ব্লিডিং শুরু হয়ে যাওয়া, কারও খুব কম ব্লিডিং হওয়া- এগুলো হল কমন সিম্পটম। কারও ক্ষেত্রে আবার ৩-৪ মাসের ব্যবধানে ঋতুস্রাব হয়।

Advertisement

পরপর ১২ মাস নির্দিষ্ট সাইকেল অনুযায়ী ঋতুস্রাব না হলে বুঝতে হবে যে, আপনার পেরিমেনোপজ স্টেজ শুরু হয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে ঋতুবন্ধ হয়ে যাবে। তবে পিরিয়ড না হলে একবার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন এবং প্রেগন্যান্সি টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন যে, আপনি গর্ভবতী নন। আবার অতিরিক্ত রক্তপাত হলে কিন্তু শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, তাই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন নিয়মিত।

Advertisement

৪০ পেরোনোর পর মাঝরাতে আচমকা শরীর ঘামে ভিজে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে, এমন হচ্ছে কি? বা হঠাৎ করেই প্রবল গরমে কান, মাথা জ্বলতে আরম্ভ করেছে! এটাও পেরিমেনোপজের লক্ষণ এবং এটা মেনোপজের পরও চলতে পারে। এছাড়া যদি দেখেন নিয়মিত যত্ন নেওয়ার পরেও, ত্বক আর চুলের স্বাস্থ্যের বিন্দুমাত্র উন্নতি হচ্ছে না, তাহলে বুঝতে হবে যে, আপনার শরীরে স্ত্রী হরমোনের ঘাটতি হচ্ছে। এর কারণেই চুল শুকনো হয়ে যাচ্ছে। ত্বক হারাচ্ছে লালিত্য। পেরিমেনোপজ স্তরে অনেকেই ইন্টিমেট এরিয়াতে শুষ্কতা অনুভব করেন। ভ্যাজাইনার শুষ্কতা একটি স্বাভাবিক লক্ষণ।

পেরিমেনোপজ-এর সময়কাল জুড়ে অসম্ভব মুড সুয়িং-এর সমস্যা হতে পারে। এ কথা পরীক্ষিত ও প্রমাণিত। যদিও অনেকেই তার কিছুমাত্র টের পান না, তবু বহু মহিলা ডিপ্রেশনের শিকার হন। তাই মনের কোণে মেঘ জমছে মনে হলেই, ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন, পরামর্শ নিন।
তবে আসল কথা হল মন থেকে এই পর্যায়টাকে মেনে নিতে হবে। মনে রাখবেন, মেনোপজের পর আপনি স্রেফ প্রজননক্ষমতা হারাবেন।

তার মানে এই নয় যে, জীবনের গতি স্তব্ধ হয়ে যাবে। মনের আনন্দে বাঁচুন জীবনের এই দ্বিতীয় ইনিংস-এ। নিজের খেয়াল রাখুন, পেটে, কোমরে চর্বি জমতে দেবেন না, তাতে অন্য নানা জটিলতা এড়ানো সম্ভব। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করতে আরম্ভ করুন, ফল পাবেন। হয়তো নতুন করে হরমোন তৈরি হবে না, কিন্তু ব্যায়ামের ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, ত্বকের জেল্লা আর চুলের স্বাস্থ্যও বজায় থাকবে।

Advertisement