মােদির নির্বাচনী প্রচারের অর্থ কোথা থেকে আসছে? প্রশ্ন রাহুলের

মাত্র ত্রিশ সেকেন্ডের জন্য টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। সেখানে নরেন্দ্র মােদির ছবি দিয়ে টেলিভিশন বা সংবাদপত্রে প্রতিদিনই বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। নরেন্দ্র মােদির এই নির্বাচনী প্রচারের জন্য কারা অর্থ যােগাচ্ছে? এটা নিশ্চয় মােদিজির পকেট থেকে বেরােচ্ছে না বলে কটাক্ষ করেন রাহুল।

Written by SNS Agra | April 16, 2019 7:24 am

রাহুল গান্ধি (Photo: IANS)

নরেন্দ্র মােদি সরকারের টাকা লুঠ করে নীরব মােদি, মেহুল চোকসি, ললিত মােদি এবং বিজয় মালিয়ার মতাে দেশের অসাধু ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিলি করেছেন বলে অভিযােগ রাহুল গান্ধির। সােমবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি ফতেপুর সিক্রি কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী রাজ বাব্বরের হয়ে এক প্রচার সভায় নরেন্দ্র মােদির নির্বাচনী প্রচারের জন্য কারা অর্থ যােগাচ্ছে বলে প্রশ্ন তােলেন। তিনি বলেন, মাত্র ত্রিশ সেকেন্ডের জন্য টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। সেখানে নরেন্দ্র মােদির ছবি দিয়ে টেলিভিশন বা সংবাদপত্রে প্রতিদিনই বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। নরেন্দ্র মােদির এই নির্বাচনী প্রচারের জন্য কারা অর্থ যােগাচ্ছে? এটা নিশ্চয় মােদিজির পকেট থেকে বেরােচ্ছে না বলে কটাক্ষ করেন রাহুল।

নরেন্দ্র মােদি আগের সব প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ার পরও কি করে দেশের মানুষকে আবরাও নতুন করে প্রতিশ্রুতির কথা শােনাচ্ছেন? আগের নির্বাচনে মােদি প্রতি বছর দু’কোটি বেকারের চাকরি ও সকল নাগরিকের অ্যাকাউন্টে পনেরাে লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। মােদি দেশের কৃষকদের জীবন অতিষ্ঠ করে ছেড়েছেন। মােদি ক্ষমতায় এসেছিলেন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলে মন্তব্য করেন রাহুল।

তিনি কংগ্রেসের ইস্তেহারে ন্যায় কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র মানুষের সাহায্যে বছরে বাহাত্তর হাজার টাকা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা রূপায়িত হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কংগ্রেস সভাপতি বলেন, কংগ্রেস তার ইস্তেহারে যে ‘ন্যায়’ কর্মসূচি রূপায়ণের কথা বলেছে সেগুলির বাস্তবতা নিয়ে দেশের অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের মতামত নেওয়া হয়েছে। দেশের বর্তমান আর্থিক অবস্থায় দরিদ্র পরিবারগুলিকে বাহাত্তর হাজার টাকা করে দেওয়া বাস্তব সম্মত বলে অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদরাই তাদের মতামত দিয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, কংগ্রেস যখন ‘ন্যায়’ কর্মসূচি রূপায়ণের কথা বলেছে, তখন নরেন্দ্র মােদি এই টাকা কোথা থেকে আসবে বলে প্রশ্ন করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই অর্থ মধ্যবিত্তদের কাছ থেকে আয়করের মাধ্যমে আদায় করা হবে না। আয়কর বৃদ্ধির কোনও পরিকল্পনাই নেই। এই অর্থ আসবে অনিল আম্বানি, মেহুল চোকসি, নীরব মােদির মতাে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এবং তা আপনার পকেটে ঢুকবে’। তিনি প্রশ্ন তােলেন, কেউ কি মােদির প্রতিশ্রুতি মতাে পনেরাে লাখ টাকা পেয়েছেন? তিনি বলেন, কংগ্রেস দেশের কুড়ি শতাংশ দরিদ্র মানুষকে বছরে বাহাত্তর হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

তিনি জানান, দেশে লাখ লাখ সরকারি পদ শূন্য রয়েছে। বিগত পঁয়তাল্লিশ বছরের মধ্যে চলতি সময়েই নিয়ােগের ক্ষেত্রে এমন অনীহা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে সকল সরকারি শূন্যপদ শুধু পুরণ করাই হবে না, উপরন্তু পঞ্চায়েত স্তরে দশ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হবে। তিনি বলেন, কৃষকরা দিনরাত কাজ করে ফসল ফলাচ্ছেন আর তার সুফল ভােগ করছে অন্য এক গােষ্ঠী। বিজেপি ভারতের মধ্যেই দুটো ভারতের সৃষ্টি করেছে। এক অনিল আম্বানির মতাে লােকেদের জন্য যাদের সকল চাহিদাই পূরণ করা হচ্ছে, আর অন্যদিকে সাধারণ মানুষ রয়েছেন অভাব অনটনের মধ্যে। তিনি প্রশ্ন তােলেন, ধনী ব্যক্তিদের আর্থিক সুবিধা দেওয়া হলে, কৃষি ক্ষেত্রে ঋণ মকুব করা হবে না কেন? তিনি বলেন, ঋণ খেলাপির জন্য কৃষকদের জেলে যেতে হলে, অন্যদেরও জেলে দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস দল ক্ষমতায় ফিরে এসে দশ দিনের মধ্যে কৃষিঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু দশদিনের পরিবর্তে মাত্র দুই দিনেই তা বাস্তবায়িত করেছে। তিনি বলেন কংগ্রেস দলের ইস্তেহারে কৃষকদের সমস্য সমাধানে পৃথক বাজেট পেশ ও কৃষি পণ্যের সহায়ক মুল্য নির্ধারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি নরেন্দ্র মােদির স্লোগান ‘আচ্ছে দিন আয়েগা’ বদলে গেল ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানে বলে কটাক্ষ করেন।