কটক, ১০ জুন– গত ২ জুন ওড়িশার বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওই দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন বহু মানুষ। দুর্ঘটনার পর দিন, অর্থাৎ ৩ জুন সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন, এই ঘটনার তদন্ত করবেন রেলের সুরক্ষা কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব সার্কল) এএম চৌধুরী। তার এক দিন পরে অর্থাৎ, ৪ জুন রেলমন্ত্রী জানান, করমণ্ডল দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব করেছে রেল বোর্ড। আর তারপরই বাহানবা স্টেশনে কোনো ট্রেনের থামতে মানা। কারণ রেলের সুরক্ষা কমিশনার তাঁর তদন্তের কাজ শুরু করার পর ওই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। ঘটনাস্থলের কোনো সূত্র যাতে বেহাত না হয় তাই এই সিদ্ধান্ত।
ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তের কাজ করেন সিবিআই আধিকারিকরা । তদন্ত করছেন রেল সুরক্ষা কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব সার্কল)। কথা বলেন অনেকের সঙ্গে। ঘুরে দেখেন দুর্ঘটনাস্থল। স্টেশন মাস্টারের ঘর (প্যানেল রুম) থেকে ‘প্যানেল বোর্ড’, ‘রিলে রুম’— সবই খতিয়ে দেখেন প্রাথমিক ভাবে। এর পর থেকেই ওই স্টেশনে আর কোনও ট্রেন দাঁড় করানো হচ্ছে না। তাই সব ট্রেনই আপাতত ওই স্টেশন থেকে ‘থ্রু’ যাচ্ছে।
Advertisement
যত দিন ওই তদন্ত চলবে, তত দিন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বাহানগা বাজার স্টেশনে কোনও ট্রেনই দাঁড়াবে না। ফলে ভোগান্তির শিকার ওই স্টেশন থেকে যাতায়াতকারী নিত্যযাত্রীরা। কবে তদন্ত শেষ হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাই ওই যাত্রীদের ভোগান্তি কবে শেষ হবে, তা-ও কেউ জানেন না।
Advertisement
এমনিতেই বাহানগা বাজার স্টেশন ছোট স্টেশন বলে প্রায় কোনও মেল-এক্সপ্রেস ট্রেনই ওই স্টেশনে দাঁড়ায় না। রেল সূত্রে খবর, এই স্টেশন দিয়ে রোজ প্রায় ১৭০টি ট্রেন চলাচল করে। তার মধ্যে ৭টি যাত্রিবাহী ট্রেন ওই স্টেশনে থামে। দুর্ঘটনার পর বাহানগা স্টেশন এলাকায় রেলপথ দিয়ে ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর গত বুধবার ওই রেলপথ দিয়েই পার হয়েছে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তবে এখনও ওই স্টেশনে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। এর জেরে শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত খড়্গপুর ডিভিশনের ৭২টি দূরপ্লাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
এই বিষয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধরি বলেন, “তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই বাহানগা বাজার স্টেশনের প্যানেল রুম, প্যানেল বোর্ড, রিলে রুম— সবই তদন্তের অংশ। যত দিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, তত দিন ওই জিনিসগুলি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্যানেল বোর্ড থেকে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রিত হয়। সেখানে হাত দিতে না পারলে কী ভাবে সিগন্যাল দেওয়া হবে?”
Advertisement



