আরএসএস ও বিজেপি’র ঘৃণার নীতিকে পরাস্ত করতে কোনও আত্মত্যাগই যথেষ্ট নয় : রাহুল

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মঙ্গলবার আহমেদাবাদের সর্দার প্যাটেল ন্যাশনাল মেমোরিয়ালে রাহুল বলেন, আরএসএস এবং বিজেপি’র নীতিকে পরাজিত করতে কোনও আত্মত্যাগই যথেষ্ট নয়।

Written by SNS March 13, 2019 12:36 pm

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সোনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি, মনমোহন সিং সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। (Photo: IANS/AICC)

নিজস্ব প্রতিনিধি – সরকারিভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পুরোদ্যমে শুরু করে দিলেন রাহুল গান্ধি। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মঙ্গলবার আহমেদাবাদের সর্দার প্যাটেল ন্যাশনাল মেমোরিয়ালে রাহুল বলেন, আরএসএস এবং বিজেপি’র নীতিকে পরাজিত করতে কোনও আত্মত্যাগই যথেষ্ট নয়। মহাত্মা গান্ধির ডান্ডি যাত্রার বর্ষপূর্তির উল্লেখ করে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট বলেন, কংগ্রেস সর্বসম্মতভাবে এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে যে, আরএসএস এবং বিজেপি’র ফ্যাসিবাদ, ঘৃণা, উষ্মা এবং বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে দলকে এই লড়াই জিততেই হবে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে বলা হয়েছে তিনি জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু তুলে বিজেপি সরকারের বিশাল ব্যর্থতাগুলিকে ভুলিয়ে দিয়ে সচেষ্ট। আজ দেশ ঐক্যবদ্ধভাবে ভারতের শত্রুদের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত। প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, দেশে আজ ভয় এবং নিরাপত্তাহিনতা ছড়িয়ে পড়েছে মহিলা, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সাংবিধানিক এবং অন্যান্য রক্ষাকবচ, যেগুলি সুরক্ষা প্রদান করে তপশিলি জাতি, উপজাতি, আদিবাসী, অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণি এবং সংখ্যালঘুদের, সেসবের উপর ইচ্ছাকৃত ভাবে হামলা চালান হচ্ছে।

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সহ এদিন উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এদিন গুজরাতের পাতিদার কোটা আন্দোলনের নেতা হার্দিক প্যাটেলও উপস্থিত ছিলেন। তিনি এদিনই যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। হার্দিক বলেন, দল চাইলে আমি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা, যিনি সম্প্রতি পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদক মাননোনীত হয়েছেন।

কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষে গান্ধিনগরের আদালজে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তাঁর ২০১৪ সালের প্রতিশ্রুতিগুলির কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, প্রত্যেক নাগরিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মোদি, সেই টাকাটা কি মানুষ পেয়েছেন? জিএসটি চালু করা নিয়ে রাহুল প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘গব্বর সিং ট্যাক্স’ আজও ব্যবসায়ীদের বোধবুদ্ধির বাইরে। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ টেনে রাহুল বলেন, জাইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনের নেতা মাসুদ আজহারকে ভারতের জেল থেকে ছাড়িয়ে বিশেষ বিমানে ছেড়ে দিতে গিয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। প্রসঙ্গত, ওই জঙ্গি নেতা (মাসুদ আজহার)-কে ভারত সরকার দেশের জেল থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল আইসি ৮১৪ নং ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানকে যাত্রী এবং বিমানের ক্রু সদস্য সহ আফগানিস্তানের কান্দাহারে ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার পর। কংগ্রেস এদিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে আক্রমণের নিশানা করে বলে যে, ১৯৯৯ সালে জইশ-ই-মহম্মদের শীর্ষ নেতাকে ভারতীয় জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য মধ্যস্থতা করেছিলেন ডোভাল। দু’দিন আগেই রাহুল টুইট করে প্রশ্ন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে যে, আপনি পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় ভারতের ৪০ জন শহিদের পরিবারকে কী বলবেন, কারা এই খুনি মাসুদ আজহারকে মুক্তি দিয়েছিল? এটাও জানাবেন যে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাই তাকে মুক্তি বিষয়ক আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং সেই খুনিকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়ে এসেছিলেন।

এদিন গুজরাতে তাঁর প্রথম বক্তব্য রাখলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা। তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে মহিলাদের নিরাপত্তা ও বেকারত্ব নিয়ে প্রশ্ন করেন বিজেপি সরকারকে।