প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, বান্ধবীর ‘ডিপফেক’ করা অশ্লীল ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায়  

Written by SNS November 13, 2023 6:55 pm

বেঙ্গালুরু, ১৩ নভেম্বর –  প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায়   ‘ডিপফেক’ প্রযুক্তির মাধ্যমে কারসাজি করে  বান্ধবীর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিলেন এক তরুণ । অভিযুক্ত তরুণের প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তরুণী।  এমনকি ওই তরুণীর বান্ধবীদের ভুয়ো আপত্তিকর ছবিও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন অভিযুক্ত। রবিবার ২২ বছরের অভিযুক্ত তরুণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে কর্নাটকের খানাপুর এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ওই অভিযুক্ত। তরুণীকে প্রেম নিবেদন করলে তিনি প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন । রাগের বশে ওই তরুণী এবং তাঁর বান্ধবীর ছবিতে কারসাজি করে ‘ডিপফেক’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে অশ্লীল ছবি তৈরি করেন অভিযুক্ত। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে সেই ছবিগুলি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন বলে তিনি তরুণীকে হুমকিও দিতে থাকেন বলে পুলিশের দাবি।  ভয় না পেয়ে তারপরও যুবকের  প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ওই তরুণী। পুলিশ জানায়, তরুণীর নামে সমাজমাধ্যমে একটি ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে সেখান থেকে অশ্লীল ছবিগুলি পোস্ট করা শুরু করেন অভিযুক্ত। সঙ্গে সঙ্গে কর্নাটকের পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্ত তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
 কিছু  দিন ধরেই ‘ডিপফেক’ প্রযুক্তি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ডিপফেক হল এমনই একটি প্রোগ্রাম, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের একটি ধরন ‘ডিপ লার্নিং টেকনোলজি’ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। মূলত এই পদ্ধতিতে অডিও, ভিডিও ও ছবিতে কারসাজি করে এমন কনটেন্ট বানানো হয়, যা দেখে আসল কি নকল তা বোঝার উপায় থাকে না। সম্প্রতি দক্ষিণী অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দানার ‘ডিপফেক’ ভিডিয়ো নিয়ে তোলপাড় হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই একইভাবে এই আধুনিক প্রযুক্তির বিকৃত ব্যবহারের শিকার হয়েছেন ক্যাটরিনা কাইফও। আর এবার সেলিব্রেটি নয়, ডিপফেকের ছায়া পড়ল আমজনতার জীবনও।
 এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয় ‘ডিপফেক’ তৈরি করা এবং সেগুলি ছড়িয়ে দেওয়া দু’টিই আইনত অপরাধ। সমাজমাধ্যমে এই প্রকার কাজের সঙ্গে যাঁরা জড়িত থাকবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিতে নোটিসও পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।  সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে পাঠানো নোটিসে ২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬ডি ধারার উল্লেখ করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি যদি কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনও ব্যক্তির ফোটো কিংবা ভিডিয়ো বিকৃত করেন, তাতে কারসাজি করে সমাজমাধ্যমে আপলোড করেন বা ছড়িয়ে দেন, তা হলে তাঁর তিন বছরের জেল কিংবা ১ লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে। রূপান্তরিত ছবি সংক্রান্ত কোনও রকম অভিযোগ আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেগুলি সাইট থেকে মুছে ফেলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই এক্স এবং ফেসবুককে নির্দেশ দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি যাতে গ্রাহকদের ‘ফেক’ ভিডিও  বা ছবি শেয়ার করার বিষয়ে সতর্ক করে, সেই বিষয়েও নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে।