অচ্ছুৎ ভেবে ভোট চাইতে আসেননি প্রার্থীরা, গুজরাতের ভোট বয়কোট যৌনকর্মীদের 

Written by SNS December 1, 2022 6:47 pm

A polling official applies indelible phosphorus ink on the fore finger of a voter. (File Photo: IANS)

ভদোদরা, ১ ডিসেম্বর– ভোটদানে উৎসাহিত করতে ‘রেডলাইট’ এলাকা থেকে প্রচারাভিযান শুরু করার কথা বলেও কথা রাখেনি কমিশন। ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে যৌনকর্মীদের। কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের কাছেও ব্রাত্য তাঁরা। এমনকী ভোট চাইতে অচ্ছুত দেহব্যবসায়ীদের বাড়িতে ভুলেও পা রাখছেন না প্রার্থীরা। সেই অভিমানেই এবার গুজরাতের ভোট বয়কট ভাবনগরের ‘রেডলাইট’ এলাকা যৌনকর্মীদের। 

বানাসকাঁথার থারাদ তালুকের ভাদিয়ার বাসিন্দা তারেক । তাদের অভিযোগ, ভোটের ময়দানে থাকা রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা প্রার্থীদের নিয়ে পাশের গ্রামে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করে গেলেও এই গাঁয়ে পা দিচ্ছেন না। কমিশনের কর্তারাও একদিনের জন্যও এলাকায় আসেননি। তাই তাঁরাও ঠিক করেছেন এবার ভোটে বুথমুখো হবেন না। রাজ্যের সমস্ত যৌনকর্মীর কাছেও একই আবেদন রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভাদিয়ার বাসিন্দারা।

ঘিঞ্জি এলাকা। সরু গলি। তার মধ্যেই ছোট ছোট একচালার ঘর। প্রতি ঘরে ৫ থেকে ছ’জনের বাস। ভাদিয়ার জনসংখ্যা এখন প্রায় ৭০০। ৫০টির কাছাকাছি পরিবারে থাকলেও এদের মূল রোজগার মহিলাদের যৌনব‌্যবসা। কিন্তু বেশিদিনের কথা নয়। এখানকার বাসিন্দাদের মূল ব্যবসা ছিল মাংস বিক্রি। গ্রামে গ্রামে হাটে গিয়ে গিয়ে মাংস বিক্রি করতেন এখানকার বাসিন্দারা। বছর কয়েক আগে সরকারের একটা সিদ্ধান্ত এদের জীবনযাত্রায় বদল আনে। প্রকাশ্যে মাংস বিক্রি করা যাবে না বলে ফতোয়া জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। তারপর থেকেই রুটিরুজি বন্ধ হয়ে যায়। অগত্যা পেটের জ্বালায় রাস্তায় নামেন মহিলারা। ক্রমে দেহব্যবসা হয়ে ওঠে রুটিরুজির পথ। জানান, এলাকার বাসিন্দা দীনেশ সারানিয়া।

এই এলাকা থারাদ বিধানসভার অন্তর্গত। এখান থেকেই জয়ী হয়ে গুজরাটের মন্ত্রী হন শংকর চৌধুরি। এবারও তিনি গেরুয়া প্রার্থী। প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের গুলাব সিং রাজপুত। চুটিয়ে প্রচার করছেন। কিন্তু ভুলেও ভাদিয়ায় চরণ ছোঁয়াননি দুই প্রার্থীর কেউই। প্রচারেও নাকি বাধা। সম্মান চলে যাওয়ার সম্ভাবনা। দীনেশ জানালেন, তিনদিন আগেই মন্ত্রীমশাই পাশের সায়কার এলাকায় প্রচারে আসেন। কিন্তু আমাদের পাড়ায় আসেননি। তিনি জানান, শুধু এই ভোটে নয়। আগের নির্বাচনেও আমাদের পরিবারগুলো অচ্ছুৎ ছিল। নির্বাচনেও আমাদের উপেক্ষা করা হয়েছে। আমরা আশপাশের গ্রামে লাউডস্পিকার, ড্রাম এবং স্লোগান শুনি, কিন্তু প্রার্থীরা আমাদের গ্রামে আসে না। গ্রামের সুনাম তাঁদের দূরে রাখে। তবে এবার রুখে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যৌনকর্মীরা। কারণ, ভোট দিলেও সরকারি কোনও সুযোগ-সুবিধা তাঁরা পান না। আসলে সমস্যা সমাধানের সাহস দেখান না রাজনৈতিক নেতারাও।