নির্বাচন কমিশনারদের পদাবনতি-নিয়োগ ক্ষমতা মোদির হাতে, নতুন নিয়োগ বিলের সংসদে জোরদার প্রতিবাদ চান মমতা

Written by SNS September 16, 2023 4:35 pm

দিল্লি, ১৬ সেপ্টেম্বর– নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর হাতে রাখতে নয়া আইন আনছে মোদি সরকার। আর সেই আইনের বিরোধিতা করতে প্রস্তুত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভার আসন্ন বিশেষ অধিবেশনে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত নয়া আইন পাশ করাতে চলেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। রাজ্যসভায় বিলটি আগেই পাশ করানো হয়েছে। বিলটির নানা বিধি নিয়ে বিরোধীরা আগেই প্রশ্ন তুলেছে। জানা গিয়েছে, সংসদে বিলটির বিরুদ্ধে জোট বেঁধে সরব হবে বিরোধীরা। স্পেন সফরে ব্যস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতি ও শুক্রবার তৃণমূলের একাধিক সাংসদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূল সাংসদদের বিলটির তীব্র বিরোধিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা সময় নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে বিস্তর লড়াই করেছেন। তিনিই প্রথম রাজনীতিক যিনি সচিত্র পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে ভোট নেওয়ার দাবি তোলেন। ভোটে অর্থ শক্তি খর্ব করতে রাজনৈতিক দলের খরচও রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে দেওয়ার দাবি তোলেন তিনি। এখন নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব এবং কমিশনার নিয়োগের পুরো ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী নিজের হাতে নিতে চাইছেন দেখে দলকে প্রতিবাদে শামিল হতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

এ বছর মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায়ে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য তিনজনের প্যানেল ঠিক করে দিয়ে বলেছিল কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা।

সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায় খারিজ করতেই নয়া বিল এনেছে মোদি সরকার। তাতে তিন সদস্যের প্যানেলে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক সদস্য। সেই সদস্যকে প্রধানমন্ত্রী বেছে নেবেন। ফলে বোঝাই যাচ্ছে কেন্দ্রের ইচ্ছাতেই ঠিক হবে নির্বাচন কমিশনারদের নাম। এখন লোকসভায় কোনও বিরোধী দলনেতা নেই।

বিলে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে চলেছে কেন্দ্র। এখন নির্বাচন কমিশনার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সমমর্যাদা পান। নয়া ব্যবস্থায় তাঁদের পদাবনতির কথা বলা হয়েছে। তাঁরা এরপর থেকে ক্যাবিনেট সচিবের মর্যাদা ভোগ করবেন। মনে করা হচ্ছে গভীর ভাবনাচিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি ব্যবস্থায় কমিশনারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মতোই সংসদে ‘ইম্পিচ’ বা নিন্দা প্রস্তাব পাশ করাতে হবে। সেই প্রক্রিয়া দীর্ঘ। নয়া ব্যবস্থা ব্যবস্থা কার্যকর হলে তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারই ব্যবস্থা নিতে পারবে। এটাও কমিশনের নিরপেক্ষতা, স্বাধিকার বিরোধী পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে। কমিশনের কোনও সিদ্ধান্ত সরকারের অপছন্দ হলেই কমিশনারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার রাস্তা খোলা রাখা হচ্ছে।