ক্যানিং , ১৪ জুন – মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ভাঙড়ের পর রণক্ষেত্রের চেহারা নিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং।তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বাসন্তী হাইওয়েতে বোমাবাজি এবং গুলি চলার অভিযোগ। ব্যাট ও উইকেট নিয়ে আক্রমণ, পালটা আক্রমণে উত্তাল হয়ে উঠল ক্যানিং এলাকা। নির্বিচারে চলে বোমা-গুলি। জেরে সুনীল হালদার নামে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে ক্যানিংয়ের তৃণমূলের একাংশের দাবি। তবে পুলিশসূত্রে খবর , সংঘর্ষের জেরে ২ জন গুলিবিদ্ধ হন। ক্যানিংয়ের এসডিপিও-সহ কয়েক জন পুলিশ কর্মীও এই সংঘর্ষে জখম হয়েছেন বলে খবর । এই ঘটনাবলীর প্রতিবাদে বাসন্তী হাইওয়ে জুড়ে শুরু হয় অবরোধ। ক্যানিং তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গেছে, এলাকার ব্লক সভাপতি এবং স্থানীয় বিধায়কের গোষ্ঠীর মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে বুধবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ক্যানিং-এ সিপিএমের একটি অফিসেও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিসের পাশাপাশি নামানো হয় ব়্যাফও।
তৃণমূলের একদলের বিরুদ্ধে অপর দলকে মনোনয়ন পেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অশান্ত হয়ে উঠল ক্যানিং। ব্যাট, উইকেট নিয়ে শুরু হয় আক্রমণ, পালটা আক্রমণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে আসে প্রচুর পুলিশ, ব়্যাফ। সব মিলিয়ে ধুন্ধুমার । ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন এসডিপিও-সহ একাধিক পুলিশকর্মী। এই ঘটনার পরই বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ও এসপি কে ফোন করেন পরিস্থিতির খোঁজ নেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। এলাকা শান্ত করতে পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশও দেন তিনি।
Advertisement
ক্যানিং ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি শৈবাল লাহিড়ির অভিযোগ, বুধবার তাঁর অনুগামীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তাঁদের ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড চত্বরে আটকে দেওয়া হয়। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পরেশরাম দাসের অনুগামীরা তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেন। ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বহু মানুষ জড়ো হন। এইসময় ক্যানিং হাসপাতাল মোড় এলাকায় তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। দু’পক্ষের মধ্যে ইটবৃষ্টি এবং বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। গুলিও চলে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। ঘটনার প্রতিবাদে ক্যানিংয়ের হাসপাতাল মোড়ে অনুগামীদের নিয়ে অবরোধ শুরু করেন শৈবাল। তাঁর হুঁশিয়ারি, পরেশরামের অনুগামীদের জমায়েত না সরালে অবরোধ চলবে। অবরোধের জেরে ওই রাস্তায় বড়ালি থেকে ঘটকপুকুর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে শৈবালের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন পরেশরাম। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দু’পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল।
Advertisement
ক্যানিংয়ের এসডিপিও দিবাকর দাস জানিয়েছেন, ওই সংঘর্ষে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ শুরু হয় বলে জানিয়েছেন এসডিপিও। দিবাকর জানান, সংঘর্ষে দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং জখম হয়েছেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। আঘাত লাগে তাঁর নিজেরও। পুলিশ সূত্রে খবর, ক্যানিংয়ে গন্ডগোলের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অর্ণব রায় নামে এক তৃণমূল নেতা-সহ ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
Advertisement



