মুম্বই, ২৩ আগস্ট– অভ্যন্তরীণ বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ইতিমধ্যে পিঁয়াজ রফতানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত সরকার। তবে এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ দেশের কৃষকরা। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। ফলে বন্ধ হয়ে যায় এশিয়ায় পিঁয়াজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার লাসালগাঁওসহ প্রায় সব পাইকারি বাজার।
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে পিঁয়াজের অধিকাংশ পাইকারি বাজারে বেচাকেনা বন্ধ দেখা গেছে। ভারতের কৃষক ও কৃষিপণ্যের পাইকারি বিক্রেতাদের সংগঠনগুলোর জোট এগ্রিকালচার প্রডিউস মার্কেট কমিটিজ’র (এআইএমসি) ডাকে এই ধর্মঘটে যান মহারাষ্ট্রের কৃষক ও কৃষিপণ্য বিক্রেতারা। তবে কৃষকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন কি না— রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।
Advertisement
এর আগে, গত ১৯ আগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার পিঁয়াজ রফতানির শুল্ক ৪০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এ সংক্রান্ত এক সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বর্ধিত শুল্ক কার্যকর থাকবে।
Advertisement
রবিবার থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে অংশ নেওয়া কৃষকরা জানান, সরকারের এই সিদ্ধান্তে লাভবান হবেন মূলত বড় কৃষক ও আড়তদাররা। অন্যদিকে ভয়াবহ লোকসান গুণতে হবে মাঝারি ও প্রান্তিক কৃষকদের। কারণ, রফতানি শুল্ক আরোপের কারণে উৎপাদিত পিঁয়াজের প্রায় সবই বিক্রি হবে অভ্যন্তরীণ বাজারে। বড় কৃষক ও আড়তদাররা হিমাগারে পিঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারলেও মাঝারি ও প্রান্তিক কৃষকদের অধিকাংশই সেই সুযোগ পান না।
কৃষকরা আরও জানান, গত বছরও এই পরিস্থিতি হয়েছিল। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি পিঁয়াজ ৪০ রুপিতে কিনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল; কিন্তু সেই সুবিধা ভোগ করেছিল বড় কৃষকরা। অনেক ছোট কৃষককে প্রতি কেজি পিঁয়াজ ১৮ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। এখন রফতানি শুল্ক বাড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই পিঁয়াজ রফতানি কমে যাবে। এতে অভ্যন্তরীণ বাজারে পিঁয়াজের দামও পড়ে যাবে। অনেকের মুনাফা তো দূর, চাষের খরচও হয়তো উঠবে না।
এদিকে, ধর্মঘটের খবরে মঙ্গলবার দুপুরে ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একটি চক্র রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে গুজব ছড়াচ্ছে। কৃষকদের প্রতি অনুরোধ— দয়া করে গুজবে কান দেবেন না। চলতি মৌসুমে সরকার কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কুইন্টাল পিঁয়াজ ২ হাজার ৪১০ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মূল্য ‘ঐতিহাসিক’।
Advertisement



