কেজরিওয়াল, মমতা, চন্দ্রবাবু বাদ দিয়ে রাহুলেই বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী মুখ দেখলেন শাহ

Written by SNS September 24, 2022 5:15 pm

দিল্লি, ২৪ সেপ্টেম্বর– যে রাহুল গান্ধিকে নিয়ে মস্করা করে বিজেপি, সেই রাহুলকে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ বলে সবাইকে চমকে দিলেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে ‘পাপ্পু’ একটি কমিক চরিত্র হিসাবে তুলে ধরে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় এবং উচ্চতাকে খাটো করে থাকে পদে পদে। সেই রাহুল গান্ধিকে নিয়ে অনেকেটাই স্রোতের বিপরীত কথা বলেছেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । দু’দিনের সফরে শুক্রবার উত্তর বিহারের পূর্ণিয়ায় জনসভা করেন অমিত শাহ । রাত্রিযাপন করেছেন কিষানগঞ্জে। সেখানে বসেছিল বিহার বিজেপির কোর কমিটির বৈঠক।

সেই বৈঠকে অমিত শাহ ২০২৪-এর লোকসভা এবং ২০২৫-এর বিহার বিধানসভার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করার সময় নেতাদের মধ্যে কাজ ভাগ করে দেন। জানিয়ে দেন, অভিজ্ঞ বিধায়কদের নিজের কেন্দ্রের পাশাপাশি আরও দুই থেকে তিনটি বিধানসভায় দলতে জিতিয়ে আনার দায়িত্ব নিতে হবে। একই দায়িত্ব দিয়েছেন সাংসসদের।

এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ায় বিজেপিকে একক শক্তিতেই এরপর লড়াই করতে হবে। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোনও পরিস্থিতিতে আর নীতীশের হাত ধরবে না বিজেপি। তাই বিজেপিকে সাবলম্বী হতে হবে।

দলীয় সূত্রের খবর, এই সময় অমিত শাহ বলেন, নীতীশ কুমার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্যে বিজেপির হাত ছেড়ে বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্বের রেসে নেই। বিরোধী শিবির থেকে যদি কেউ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হন তবে তা হবেন রাহুল গান্ধীই ।

অমিত শাহের এই কথায় রাজ্য বিজেপির নেতারাও অবাক হয়েছেন। তাঁরাও বুঝে উঠতে পারছেন না, কংগ্রেস যখন গঙ্গা-পদ্মার মতো ক্রমশ ভাঙছে তখন সেই দলের নেতাকে কেন এতটা গুরুত্ব দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দিন সাতেক আগেই অমিত শাহ তীব্র আক্রমণ করেন রাহুলকে।

কংগ্রেস নেতা এখন ভারত জোড়া যাত্রায় ব্যস্ত। রাহুলের গায়ে ৪৪ হাজার টাকা দামের টি-শার্ট দেখে কটাক্ষ করে অমিত। বলেন, দামি বিদেশি টি-শার্ট পরে দেশ বাঁচানোর কথা বলছেন, রাহুল। বিচিত্র!

নীতীশ কুমার ছাড়াও যখন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কে চন্দ্রবাবু নাইডুর মতো নেতাদের দল তাঁদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরছে।সেখানে হঠাৎ রাহুলকে কেন তাঁর প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী মনে হল তাই নিয়ে জোর জল্পনা বিজেপির অন্দর মহলে। 

অনেকেই মনে করছেন, অমিত শাহ বাস্তব পরিস্থিতি মাথায় রেখেই কথাটি বলেছেন। তবে এটা তাঁর একটি কৌশলও হতে পারে। বাস্তব পরিস্থিতি হল, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানে কংগ্রেস মাত্র দুটি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও গোটা দেশে শতাব্দী প্রাচীন এই দলই তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। আর কৌশল হল, আঞ্চলিক দল ও সেগুলির নেতাদের গুরুত্ব, শক্তিকে খাটো করে দেখানো। যাতে ওই দলগুলির শক্তঘাঁটিতেও লড়াইটাকে যতটা সম্ভব বিজেপি বনাম কংগ্রেস করে তোলা যায়।