পাঁচিল টপকে সরকারি বাডি়তে অখিলেশ, বোঝালেন তিনি ‘বাপ কা বেটা’

Written by Sunita Das October 11, 2023 5:46 pm

অখিলেশ যাদব (Photo: AFP)

লখনউ, ১১ অক্টোবর– ধুন্ধুমার কান্ড লখনউয়ে৷ ঘটনা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবকে ঘিরে৷  শহরের জয়প্রকাশ নারায়ণ ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে অখিলেশকে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আটকাতে সংস্থার সব গেটেই বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করে যোগী আদিত্যনাথের সরকার৷ কিন্ত্ত অখিলেশও কম যান না৷ পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভিতরে শুধু ঢুকলেন না কম্পাউন্ডে দাঁডি়য়ে সাংবাদিক বৈঠকও করেন অখিলেশ৷ আর এতেই প্রশ্নের মুখে পডে়ছে লখনউ পুলিশ৷
স্বভাবতই সরকার বনাম সমাজবাদী পার্টির বিবাদ ঘিরে লখনউয়ে উত্তেজনা ছিলই৷ তা চরমে ওঠে অখিলেশ পাঁচিল টপকে সেন্টারে ঢুকে পড়ায়৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে এরপরই আলোচনায় উঠে আসে অখিলেশের বাবা প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী কুস্তিগীর-রাজনীতিক হিসাবে পরিচিত মুলায়মের কথা৷
বছর পঞ্চাশের অখিলেশ বুধবার পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পাঁচিল টপকে বাবার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন৷ সমাজবাদী পার্টির নেতাকর্মীরা এতে উৎফুল্ল৷ বাবার মতো কুস্তিগীর না হলেও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অখিলেশ ক্রিকেট, ফুটবল খেলতেন৷ এখন নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করেন৷
অখিলেশ সিদ্ধান্ত নেন ওই সেন্টারেই জয়প্রকাশের মূর্তিতে ফুল-মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন৷ কিন্ত্ত লখনউ প্রশাসন তাঁকে জানিয়ে দেয় সেখানে ঢোকার অনুমতি নেই৷ কেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে পারবেন না তা নিয়ে সকাল থেকে বিবাদ চলছে সরকার ও প্রধান বিরোধী দলের৷ অখিলেশই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা৷ পুলিশ তাঁকে অনুমতি না দেওয়ার কারণ হিসাবে নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বললেও তা কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়নি৷
বুধবার জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মজয়ন্তী৷ জরুরি অবস্থার আগে-পরে ইন্দিরা গান্ধির বিরুদ্ধে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করার পিছনে বিহারের এই নেতার অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি৷ তাঁর সম্পূর্ণ ক্রান্তির ডাকে শামিল হয়েছিল কংগ্রেস বিরোধী সব দল৷ উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী শিবিরেও জয়প্রকাশ প্রাতঃস্মরণীয় নাম৷
অখিলেশ মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৬ সালে লখনউয়ে জয়প্রকাশ নারায়ণ ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারটি গডে়ন৷ সেটির উদ্বোধন করেন সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা তথা জয়প্রকাশের শিষ্য মুলায়ম সিং যাদব৷ কিন্ত্ত যোগী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ওই সেন্টার নিয়ে বিবাদ শুরু হয়৷ বিজেপির অভিযোগ, সেন্টারটি নির্মাণে বিপুল অর্থ নয়ছয় হয়েছে৷ তদন্তে স্পেশাল অডিট চলছে৷
গত বছর প্রয়াত তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে ছিলেন বেশ উল্লেখযোগ্য চরিত্র ৷ কম বয়সে কুস্তিগীর হিসাবে বিপুল খ্যাতি অর্জন করেছিলেন রাজ্য ও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা জিতে৷ রাজনীতিতে আসার পরও কুস্তিগীর মেজাজ পুরোমাত্রায় ধরে রেখেছিলেন৷ তাই আইন-অমান্য আন্দোলনে মুলায়মকে সামলাতে পুলিশের আলাদা বাহিনী মোতায়েন থাকত৷ চেহারায় খাটো হলেও পাঁচিল টপকানো ছিল তাঁর কাছে জলভাত৷ বহুবার পাঁচিল টপকে বিধানসভা ভবন, সরকারি সচিবালয়ে ঢুকে গ্রেফতার হয়েছেন৷