• facebook
  • twitter
Wednesday, 23 April, 2025

শিক্ষকের দৃষ্টিতে

আসুন আমরা সকল বিবেচক নাগরিক ও শিক্ষকের দৃষ্টিকোণ থেকে, রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে এই প্রার্থনা করি বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম যেন দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন ফিরে পায়।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

শুভদীপ চৌধুরী (বিদ্যালয় প্রধান)

সাম্প্রতিক মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এর নির্দেশে এই রাজ্যের চাকুরীরত প্রায় ২৬০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হলেও এই রায় দান সমাজ ও শিক্ষাক্ষেত্রে এক অভুতপুর্ব আলোড়ন তুলেছে। নাগরিক হিসাবে সংবিধান অনুযায়ী যে কোনো বিচারালয়ের রায় দান নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন নয় কিন্তু রায় এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে কথা বলার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। রাজনীতি জগতের বাইরে দাঁড়িয়ে এই রায় দানের সামাজিক ও শিক্ষাঙ্গনে তার প্রভাব নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

১) দীর্ঘ ৭ বছর ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে শিক্ষকতা করার পর এই রায় এক নির্মম আঘাত কারণ ২০০০০ শিক্ষক শিক্ষিকার যোগ্যতা কিন্তু অস্বীকার করা হয়নি যেহেতু তাঁদের সমস্ত মাইনে সুদ সহ ফেরত দিতে বলা হয়নি।
২) রাজ্য সরকার ও নিয়োগকারী সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ এই রায়ের রিভিউ পিটিশন সুপ্রিম কোর্ট এ দায়ের করেছেন।
৩) অযোগ্যদের এই মাস থেকে মাইনে প্রদান বন্ধ করা হয়েছে ও বাকিদের মাইনে দেওয়ার নির্দেশ সরকারি ভাবে দেওয়া হয়েছে ও কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
৪) বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অভাবে, প্রথম পার্বিক মূল্যায়ন বন্ধ হয়েছিল কিছু কিছু বিদ্যালয়ে।
৫) হাজার হাজার পরিবার আজ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে, পারিবারিক বিভিন্ন প্রয়োজনে লোন-এর মাসিক কিস্তি, ব্যয়বহুল চিকিৎসা বন্ধের মুখে।
৬) শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীদের সামাজিক ও ব্যক্তিগত সম্মান আজ প্রশ্নের মুখে।

কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়াতে যদি কিছু স্বচ্ছতার অভাবের প্রশ্ন ওঠে এবং তা যদি ১০০% প্রমাণিত না হয় তবে ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী ১০০০ জন দোষীকে ছেড়ে দিতে হতে পারে ১ জন নিরাপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য। আমি আশাবাদী সংবিধানের এই অংশটির কথা মাথায় রেখে এবং সর্বোপরি মানবিকতার মুখ সামনে রেখে সুপ্রিম কোর্ট রিভিউ পিটিশন এর রায় দেবেন যাতে যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা তাঁদের নিজস্ব যোগ্যতায় প্রাপ্ত চাকরিস্থলে পুনরায় যোগদান করতে পারেন।

আসুন আমরা সকল বিবেচক নাগরিক ও শিক্ষকের দৃষ্টিকোণ থেকে, রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে এই প্রার্থনা করি বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম যেন দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন ফিরে পায়। পরিশেষে মানবিক মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই এই সঙ্কটজনক সময়তে চাকরিহারাদের পাশে সহমর্মিতা প্রদর্শনের জন্য ও প্রশাসনিক সাহায্য করার জন্য।