• facebook
  • twitter
Thursday, 22 May, 2025

বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ইউনূস?

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠনকে সেদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এবার সেদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল খোদ আওয়ামি লিগকেও অবিলম্বে নিষিদ্ধকরণের অপচেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। জিয়া-পত্নী শ্রীমতি খালেদা জিয়া যার সুপ্রিম নেত্রী। তিনি ও তাঁর দল দূর থেকে মজা লুটছেন। একবারও ভুল করে ভাবছেন না যে, তাঁদের ঘাড়েও যে আগামিদিনে এমন স্বৈরাচারি কোপ নেমে আসবে না-তাই-বা কে হলফ করে বলতে পারেন? সুতরাং সাধু সাবধান না হলে দেশের অমঙ্গল।

ফাইল চিত্র

বরুণ দাস

আমাদের প্রতিবেশি বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশ। একাত্তরে যার জন্ম এবং এই জন্মের গৌরবময় ইতিহাসের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের সম্পৃক্ততা ওতপ্রোতভবে রয়েছে। ফলে সেদেশের উত্থান-পতন এবং ভালোমন্দ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথার একটা কারণ থেকেই যায়। যদিও আন্তর্জাতিক প্রোটোকল অনুযায়ী এই মাথাব্যথা হয়তো-বা ‘অনৈতিক’। কিন্তু যে দেশের সঙ্গে আমাদের ভাষার সাযুজ্য, আত্মীয়তার সম্পর্ক, প্রাণের টান-নীতি-নৈতিকতার দোহাই দিয়ে কী সবসময় সে দেশ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন থাকা যায়?

কিংবা আমাদের উদাসীন থাকাটা কী আদৌ সমীচিন? প্রশ্নটা কিন্তু ঠিক এখানেই। ‘বাহান্নর’ ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন কী দু’দেশকে (বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গকে) একইভাবে আন্দোলিত করেনি? সাতচল্লিশ-এর আগে কী আমরা পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধনে বাঁধা ছিলাম না? হ্যাঁ, নানা সময়ে নানা ব্যাপারে হয়তো-বা কিছুটা অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাত হয়েছে আমাদের মধ্যে। পাশাপাশি থাকলে সে তো হতেই পারে। কথায় আছে, পাথরের থালা-বাটি পাশাপাশি থাকলেও মাঝে-মধ্যে ঠোকাঠুকি হয়।

কবির কথায় বলতে হয়, ‘আবাদ করে বিবাদ করে সুবাদ করে তাঁরা।’ তো সেভাবেই ছিলাম আমরা সবাই মিলেমিশে। কুচক্রী ইংরেজ সরকারের পাতা নোংরাফাঁদে পা দিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝিতে (কথান্তরে কলহ-বিবাদে) মেতে উঠলাম- তারই বিষময় চিহ্ন হিসেবে এঁকে দিল দু’দেশের সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া। একই ভাষাভাষি মানুষের মধ্যে আলাদা দেশ গঠন! এপার-ওপার দু’পারের মানুষের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্কে ফাটল এবং একে অপরকে সন্দেহের চোখে দেখার শুরু।

অর্থনীতির অধ্যাপক হয়েও যিনি ‘শান্তির জন্য’ নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন, তিনি শান্তির স্বপক্ষে চলবেন-এটাই ছিল আমাদের সবার কাছে কাম্য। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাঙলা ভাষাভাষি মানুষের কাছে। বাংলাদেশে মাইক্রো ফিনান্সে-এর সার্থক রূপকার অধ্যাপক ড: মুহাম্মদ ইউনূস কিন্তু আমাদের কারও আশা পূরণ করলেন না। বাংলাদেশের দেশত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সংঘাতকে তিনি এমন এক নিন্ম পর্যায়ে নিয়ে গেলেন, যেখানে দেশ ও দশের বিপর্যয়কে ডেকে আনলেন।

ছাত্র-আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লিগ সরকারের পতন হতেই গোটা দেশজুড়ে শুরু হল এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। ক্ষমতায় এসেই শান্তিরদূত হিসেবে নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূস সরকার দেশে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করলেন। যদিও তাঁর হাসিমাখা প্রবীণ-মুখে ভিন্নকথা! প্রতিবেশি বন্ধুদেশ ভারত সহ গোটা বিশ্বকে ভূল বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা! তাঁর নেতৃত্বে দ্রুত পিছিয়ে যেতে শুরু করল অনেকক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ। তেপান্ন বছরের প্রৌঢ় বাংলাদেশ অরাজকতার নিগড়ে বাঁধা পড়ল-ভরে গেল নৈরাশ্যে!

দেশজুড়ে শুরু হল সাম্প্রদায়িকতার উচ্চ ফলনশীল চাষ। নেতৃত্বে তিনি! তাঁর বাছাই করা পারিষদবর্গের বালখিল্য আচরণে ইন্ধন দিয়ে চলেছেন তিনি। মাত্র তিন-সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই সবদিক থেকেই দেশ পড়ল গভীর সঙ্কটে। খাদের কিনারায় পৌঁছে দিলেন বাংলাদেশের মতো একটি দ্রুত উন্নয়নশীল দেশকে। এভাবে চললে হয়তো অচিরেই পৃথিবীর মানচিত্র থেকেই মুছে যাবে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র! পরিস্থিতির চাপে তিনি হয়তো শিঘ্রই ফিরে যেতে বাধ্য হবেন বিদেশে অধ্যাপনার কাজে।

কিন্তু বাংলাদেশকে করে যাবেন ধ্বংস। তাঁর সৌজন্যে একটি খন্ডহর হিসেবে স্থান হবে সেদেশের। শুধু তাই নয়, তাঁরই নেতৃত্বে আফগানিস্তানের আদলে তালিবানি দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিত হবে বাংলাদেশ। আমাদের প্রতিবেশি বন্ধুরাষ্ট্রকে সবাই চিনবে একটি জঙ্গিরাষ্ট্র হিসেবে! সেপথেই এগুচ্ছে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়ুল মারছেন সেদেশের আওয়ামি লিগ-বিরোধি কিছু অতি-উৎসাহী মানুষ। তাঁদের যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছেন সেদেশের সবগুলি মৌলবাদি সংগঠন। কোনও রাখঢাক নেই। প্রকাশ্যে।

জানা যাচ্ছে, দ্রুত ইসলামিকরণের পথে এগুচ্ছে মুক্তমনা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। সংবিধান বদলে জাতীয় পার্টির প্রয়াত প্রধান ফৌজিশাসক হোসেন মুহাম্মদ এরশাদ তাঁর আমলে রাষ্ট্রের ধর্ম ইসলাম হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। বাকি ছিল গোটা দেশটিকে ইসলামিকরণ। এবার সেটাও পূরণ হতে চলেছে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের বদান্যতায়। তাহলেই ষোলকলা পূরণ হবে। এবং সেকথা গর্বের সঙ্গে ঘোষণাও করেছেন দেশের উগ্র মৌলবাদি সংগঠনের কট্টর কর্তাব্যক্তিরা। তাই শরিয়তিকরণের যাবতীয় উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে।

দেশজুড়ে ভারত-বিদ্বেষ উসকে দেওয়া হয়েছে। মুহাম্মদ ইউনূসের অর্বাচীন উপদেষ্টারা দিনের পর দিন ভারত-বিরোধিতায় মশগুল হয়ে আছেন। তাদের একমাত্র শত্রু প্রতিবেশি বন্ধুদেশ ভারত। যারা সবসময়ে সব ব্যাপারেই প্রয়োজনীয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে লাগাতর বিষোদগারের পরও ভারত কিন্তু সহযোগিতার হাত গুটিয়ে নেয়নি। এখনও কিন্তু ভারত প্রতিদিন ট্রাক ভর্তি অত্যাবশ্যক পণ্যসামগ্রী (বিশেষ করে আলু-পিঁয়াজ-চাল-ডাল-মশলা-কাপড়) পাঠিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে।

যাতে সেদেশের সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় কোনও রকম ব্যাঘাত না ঘটে। ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’র আঁচ না পড়ে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মাথা সহ উগ্র সাম্প্রদায়িক মানসিকতা-সম্পন্ন উপদেষ্টারা লাগাতর ভারত-বিরোধি কথাবার্তায় মুখের লাগাম টানতে একান্তই অপারগ। মনগড়া মিথ্যে প্রপাগন্ডা করে সেদেশের সাধারণ মানুষের মনে ভারত-বিদ্বেষ জাগিয়ে তুলছে। এরফলে কিছু সংখ্যক মানুষের মনে আক্রোশ জন্মাচ্ছে প্রতিবেশি বন্ধুদেশ ভারত সম্বন্ধে। যাদের সক্রিয় সহযোগিতায় নতুন বাংলাদেশের জন্ম।

চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্করজনক। যেখানে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু জনতাকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা বেধড়ক পিটিয়েছে। অনেকে মারা গেছেন; অনেকে গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসাধীন। সমাজমাধ্যমের সৌজন্যে যা প্রকাশ্যে এসেছে। গোঁড়া সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সামান্য প্রতিবাদ করার পথটুকুও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকারের চাপে পুলিশ-প্রশাসনও নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা অতীব নিন্দনীয়।

সম্প্রতি বাংলাদেশের ইসকন-এর সরব ও সাহসী সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে চূড়ান্ত হেনস্থা ও গ্রেপ্তারির ঘটনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। যিনি ‘সনাতনি জাগরণ মঞ্চ’-এর মুখপাত্র হিসেবে সেদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অকারণে মৌলবাদি মুসলিমদের নির্বিকল্প হেনস্থা, অত্যাচার ও নিধনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। আক্রান্ত ও অত্যাচারিত হিন্দুদের সংঘবদ্ধ প্রতিবাদে সামিল করেছিলেন। তাঁকে বিমানবন্দর থেকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে’ আটক করে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। জামিন-অযোগ্য ধারায়।

অন্যদিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেককে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। কোথাও বা নারী- পুরুষ নির্বিশেষে চূড়ান্ত শারীরিক নিপীড়নও করা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন থেকেছে নির্বিকার। কোনও অভিযোগই গ্রহণ করা হয়নি। এর বিরুদ্ধে ভারতের বিবৃতিকে সেদেশের ‘অভ্যন্তরীন ব্যাপার’ বলে কড়া ভাষায় খন্ডন করেছেন মুহাম্মদ ইউনূসের উপদেষ্টারা। পরন্তু অন্য রাষ্ট্রের ‘অভ্যন্তরীন ব্যাপার’-এ অযথা ‘নাক গলানোর’ জন্য ভারতকে দোষারোপ করা হয়েছে। সব দেখেশুনেও মুহাম্মদ ইউনূস ‘স্পিকটি নট।’

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠনকে সেদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এবার সেদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল খোদ আওয়ামি লিগকেও অবিলম্বে নিষিদ্ধকরণের অপচেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। জিয়া-পত্নী শ্রীমতি খালেদা জিয়া যার সুপ্রিম নেত্রী। তিনি ও তাঁর দল দূর থেকে মজা লুটছেন। একবারও ভুল করে ভাবছেন না যে, তাঁদের ঘাড়েও যে আগামিদিনে এমন স্বৈরাচারি কোপ নেমে আসবে না-তাই-বা কে হলফ করে বলতে পারেন? সুতরাং সাধু সাবধান না হলে দেশের অমঙ্গল।

মুক্ত গণতন্ত্রে সুস্থ বিরোধিতা থাকবে কিন্তু কেউ কারও শত্রুপক্ষ নন। বিএনপির-র আওয়ামি-বিরোধিতা থাকবে-এটাই স্বাভাবিক। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী কোনও রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার জন্য আজ যারা অন্তর্বর্তী সরকারের পিঠ চাপড়াচ্ছেন-তাঁরা কিন্তু মূর্খের বেহেশ্তে বাস করছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের এই অসাংবিধানিক ঔদত্য কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হলে বাঙলাদেশের গণতন্ত্র বিপন্ন হবে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেউ কোনও ব্যাপারে মুখ খুললেই তাঁকে আক্রমণ করা হচ্ছে। মিথ্যে মামলায় হেনস্থা করা হচ্ছে।

অনেকেই শুনেছেন (দেখননি), শেখ হাসিনার শাসনকালে নাকি ‘আয়না ঘর’ বলে একটা নিষিদ্ধ শিবির ছিল যেখানে প্রতিবাদি বিরোধিদের বিনা বিচারে আটক রাখা হত। বন্দিদের হদিশ কেউ পেতেন না। এটা যে একটা মিথ্যে প্রচার, স্রেফ গালগল্প-তাঁর চাক্ষুস প্রমাণ মিলেছে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’র পর। আজও কেউ ওই ‘আয়না ঘর’-এর সন্ধান দিতে পারেননি। সেদেশের লোক-সূত্রে জানা গেছে, এটা অপপ্রচার ছিল মাত্র। ‘আট বছর বন্দি থাকা’ এমন একজনকে সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া গেছে, যিনি বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। এবং ওই সময়ে (পড়ুন আয়না ঘরে ‘বন্দি অবস্থায়) দু’-দুটি সন্তানের পিতা হয়েছেন। একবার ভাবুন তো, শেখ হাসিনা ওয়াজেদের আওয়ামি লিগ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার কোন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়ছিল। নিজের ঘরে দিব্যি মুক্ত জীবন কাটানো ব্যক্তিকে ‘নিখোঁজ বন্দি’ বলে প্রচার চালানো হয়েছে। বিদেশি (অভিযোগ খোদ আমেরিকা-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে; আড়ালে অবশ্য লালচিন) মদতে গভীর ও গোপন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের নগ্ন শিকার স্বাধীন বাংলাদেশের জনক মুজিব-তনয়া শেখ হাসিনা ওয়াজেদের সরকার।

এখানেই শেষ নয়। আরও আছে। যারা বৈষম্য-বিরোধি কোটা আন্দোলনে ‘শহিদ হয়েছিলেন’ বলে সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল (ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের চক্রান্তে) – তাঁদের মধ্যে এযাবৎ ১৩ জনকে সুস্থ অবস্থায় পাওয়া গেছে। এবং আগামিদিনে এমন আরও অনেক ‘নিহত শহিদদের’ পাওয়া যাবে বলে অনেকেরই দৃঢ় বিশ্বাস। শেখ হাসিনা ওয়াজেদের আওয়ামি লিগ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল এটা কিন্তু তারই জ্বলন্ত প্রমাণ। ‘বিজ্ঞাপনের গোরু’কে গাছে চড়ানোর মতো অবস্থা আর কী।

অঢেল বিদেশি অর্থের (কার্যতঃ আমেরিকান ডলারের) বিনিময়ে সেদেশের সংবাদমাধ্যম কিভাবে ডাহা মিথ্যেকে সত্য বলে দিনের পর দিন তুলে ধরেছিল-তা এখন আস্তে আস্তে সবার সামনে আসছে। ক্রমশঃ জানা যাচ্ছে- মিথ্যের ফানুস উড়িয়ে সেদেশের ‘নির্বাচিত’ আওয়ামি লিগের সরকার-প্রধানকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। বৈষম্য-বিরোধী কোটা আন্দোলন ছিল অজুহাত মাত্র। আসলে বিদেশি চক্রান্তে আওয়ামি লিগ সরকারকে গদিচ্যুত করাটাই ছিল ওই তথাকথিত ‘ছাত্র আন্দোলন’-এর প্রধান লক্ষ্য। বাকি সব ছিল মিথ্যে।

তা নাহলে তড়িঘড়ি বদলানোর তালিকায় কিভাবে যুক্ত হয় দেশের পবিত্র সংবিধান, ঐতিহ্যবাহী জাতীয় পতাকা, অখন্ড বাংলার বাঙালি (বিশ্ব) কবি রচিত জাতীয় সঙ্গীত, স্বাধীন দেশের জাতীয় ছুটি থেকে স্বাধীন দেশের জাতির জনকের নাম? এমন কি, দেশের নাম বদলানোর কথাও তুলেছেন সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের অতি-বিপ্লবী উপদেষ্টারা-যাদের সঙ্গে একাত্তরের মুক্তি (স্বাধীনতা) যুদ্ধের কোনও সংস্রব নেই? এরা (পাক-পন্থি) তো আসলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জাতীয় সংগ্রহশালা ধ্বংসকারী মাত্র!