সাবাস ওড়িশা 

সম্প্রতি ইয়াস ঝড় ও পরবর্তী গ্রীষ্মকালীন বন্যা ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চলকে প্লাবিত করে।

Written by SNS Kolkata | June 1, 2021 4:51 pm

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি। (Photo: IANS)

সম্প্রতি ইয়াস ঝড় ও পরবর্তী গ্রীষ্মকালীন বন্যা ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চলকে প্লাবিত করে। ইয়াস ঝড় প্রথমে বাংলা ও ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলির ওপর দিয়ে বয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল।

ঝড়ের তাণ্ডব থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য আহবাওয়া দফতরের পূর্বভাস মতাে বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষকে নিরাপদ ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইয়াসের তাণ্ডব বাংলাকে এড়িয়ে ওড়িশার দিকে ধাবিত হওয়ায় সেখানকার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ তার কবলে পড়েন, তাদের ঘরবাড়ির চাল উড়ে যায়।

এর পর ঝড় পরবর্তী গ্রীষ্মকালীন বন্যার কবলে পড়ে ওড়িশার বেশকিছু অঞ্চল। জলমগ্ন হয়ে পড়ে ভদ্রক, জাজপুর ও কেন্দাপাড়া জেলা। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সাতদিন ধরে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তাদের।

গত দুই বছর আগে ঝড় ফণীর তাণ্ডবে পুরীর তটবর্তী অঞ্চল দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবার পুরী রক্ষা পেলেও অন্যান্য তটবর্তী অঞ্চলের ক্ষতি হয় চরম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক নীরবে রাজ্যের মানুষের ও সম্পদের ক্ষতি মােকাবিলায় কাজ করছেন।

বৈতরণী নদীতে মাঝারি ধরনের বন্য সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ক্ষতির পরিমাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে ক্রমাগত বৃষ্টির ফলে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী ঝড় ইয়াস ওড়িশা থেকে বালাসাের এবং ময়ূরভঞ্জ হয়ে ঝাড়খন্ডের দিকে ধাবিত হয়।

এর ফলে কেওড়, সুন্দরগড়, ময়ূরভঞ্জ এবং দেওঘর এর দুশােটি ব্লকে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে প্লাবিত হয়। অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকায় যাতে বসতি এলাকা প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায় তার জন্য প্রশাসনের তরফে সবরকমের চেষ্টা চালানাে হয়। কেওড় জেলার দুটি গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত বৈতরণী নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইতে থাকে।

কিছু এলাকা যে প্লাবিত হয়নি তা নয়। একটা শক্তিশালী ঝড়ের পরে অতিবর্ষণে প্লাবনের কবল থেকে রক্ষা পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য। বিশেষত কোভিড অতিমারির সময়ে। সাইক্লোন ফনি এবং ১৯৯৯ সালের সুপার সাইক্লোন ওড়িশাকে আত্মরক্ষার পাঠ দিয়েছে।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দোসর দ্বিতীয় দফার করােনা অতিমারি মােকাবিলা করা মােটেই সহজ কাজ নয়। ৬.৫ লাখ মানুষকে ইয়াস পূর্ববর্তী সতর্কতা হিসেবে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন কোভিড আক্রান্তদের কোথায় রাখা হবে তারই খোঁজ চলছে।

এমন এক আপতকালীন সময়ে যে প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তা পর্যাপ্ত না হলেও প্রশাসনের তরফে যেন কোনও গাফিলতি না থাকে সেবিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। মুখ্যমন্ত্রী ঝড়ের কারণে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়া মানুষজনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিরন্তর পর্যবেক্ষণেরও নির্দেশ দেন।

এর আগেই দুয়ারে দুয়ারে স্বাস্থ্য নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার ফলে ওড়িশার স্বাস্থ্য দফতর একটা কাজ আগেই সেরে রেখেছিল। বালাসার, ভদ্রক এবং ময়ূরভঞ্জে ঝড়ের কারণে কোভিড পরীক্ষা, প্রতিষেধক দেওয়া এবং দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে সমীক্ষার কাজ বন্ধ রেখেছিল ২৫-২৭ মে পর্যন্ত সময়ে।

অন্যান্য জেলাতেও এমন আংশিক সময়ের জন্য কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। লাখ লাখ মানুষকে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে নানান জটিলতা দেখা দেয়। কিন্তু ওড়িশা এই দুই ঝঞ্জাকে অনায়াসে মােকাবিলা করার আত্মনির্ভরতা প্রদর্শনে সফল হয়েছে।