বরুণ দাস
বাংলার নারী সমাজকে নিয়ে অনেকেই নানান তির্যক মন্তব্য করে থাকেন। এদের মধ্যে অনেক শিক্ষিত পুরুষও যেমন আছেন, ঠিক তেমনি অনেক তথাকথিত বিশিষ্টজনও আছেন। আছেন কতিপয় প্রতিষ্ঠিত নারীও। কেবল স্বামী শাড়ি-গয়না আর বিউটি পার্লারে মগ্ন থাকলে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত উত্তরণ ঘটাবেন কি করে? নারীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অনেকদিনের। এই অভিযোগের যে কোনওরকম সারবত্তা নেই তা কিন্তু জোর দিয়ে বলা যাবে না। অভিযোগের সারবত্তা ছিল, আছে এবং হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে।
Advertisement
আজকের নারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আরও বেশি বাস্তবতা পেয়েছে সমাজমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে। ইদানিং সমাজ মাধ্যমে শিক্ষা ও বিত্ত নির্বিশেষে তাদের নিজেদের অনাকাঙ্ক্ষিত উপস্থাপনা প্রগতিশীল সমাজের সামালোচনার সামনে পড়েছে। পড়ারই কথা। কোনও সুস্থ ও রুচিবোধ সম্পন্ন মানুষই নারীদের এমন সস্তা ভূমিকা মেনে নিতে পারেন না। সবচেয়ে অবাক লাগে, যারা সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তারাও নিজেদের সাজানো-গোছানো মুখটি সমাজমাধ্যমে তুলে ধরতে অতি-ব্যগ্র।
Advertisement
এই দলে কে নেই? কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী থেকে প্রতিষ্ঠিত বাচিক শিল্পীও আছেন। সৃজনশীল নারী (ইদানিং অনেক পুরুষ মানুষও এই দলে নাম লিখিয়েছেন) তাঁদের শিল্পকাজ ব্যতীত কেন নিজেদের মুখ দেখাতে আগ্রহ বোধ করবেন? এই প্রশ্নেই তোলপাড় বাংলার অনেক শিক্ষিত ও শিল্প-সচেতন মানুষ। যাঁদের মেধা কিম্বা অন্য কোনও গুণ নেই, শুধু রূপ আছে— তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা না-হয় মেনে নেওয়া গেল; কিন্তু যাঁদের মেধা এবং গুণ দুই-ই আছে-তাঁরা কেন অকারণে সমাজমাধ্যমে নিজেদের মুখ দেখাতে ব্যস্ত?
সম্প্রতি একটি বেসরকারি সমীক্ষায় জানা গেছে, বাংলার নারীরা আধুনিক পোশাক-আশাকেই বেশি সন্তুষ্ট। বিয়ে-স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘর-সংসার করতেই তারা বেশি আগ্রহী। নিজেদের অর্জিত শিক্ষা-দীক্ষা কিম্বা শিল্পগুণকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তেমন আগ্রহী নন। স্বামীর সাফল্যেই তাঁরা নিজেদের বেশ গর্বিত মনে করেন। স্বামীর মোটা বেতন, তাঁর দামি বাড়ি-গাড়ি এবং মাঝেমধ্যে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে শহরের নামিদামি রেস্টুরেন্টে ডিনার আর মাঝেমধ্যে বেড়ানো— এসবের মধ্যেই নিজেদের আটকে রাখতে বেশি পছন্দ করেন।
ব্যতিক্রম অবশ্যই আছেন। কিন্তু তাঁরা সংখ্যায় এতো কম যে, কোনও হিসেবের মধ্যেই আসেন না। ব্যতিক্রমী হয়েও তাঁরা বরাবর হিসেবের বাইরেই থেকে যান। সেভাবে প্রচারের আলোয় আসার সুযোগ পান না। হয়তো তেমন চেষ্টাও তাঁরা করেন না। করার প্রয়োজনও বোধ করেন না। কারণ তাঁরা কাজে বিশ্বাসী, প্রচারে নয়। ফলে তাঁদের ব্যতিক্রমী চরিত্রের কথা (পড়ুন সাফল্যের কথা) সমাজের অন্য নারীদের প্রভাবিত করার সুযোগ পায় না। পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রচার মাধ্যমও তাঁদের কথা সেভাবে সবার সামনে আনে না।
সম্প্রতি ছয় বাঙালি নারীর সাফল্যের কথা তুলে ধরেছে ‘ভারতে সর্বাধিক প্রচারিত প্রথম শ্রেণির’ বাংলা দৈনিক। যে বাংলা দৈনিকের বর্তমান সম্পাদকও একজন নারী। ফলে ওই উজ্জ্বল বাঙালি নারীদের নামগুলো আমাদের সামনে এসেছে। এঁদের কাউকে আমরা জানি, কাউকে আবার জানিও না। বাংলার শিক্ষায় শীর্ষে পা রাখা ওই বাঙালি নারীদের সাফল্যের কথা জেনে বাংলার নারী সমাজ কতটা উদ্বুদ্ধ ও উপকৃত হবেন তা অবশ্য আমাদের জানা নেই। কারণ আজকের দিনে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ হন খুব কম মানুষই।
যা সহজেই অনুকরণ করা যায় এবং সস্তা চমক সৃষ্টি করা যায়, সেদিকেই আমাদের অনেকেরই দৃষ্টি। আমরা তথাকথিত আধুনিক (পড়ুন পোশাকে-আশাকে) হতে যতটা আগ্রহী, শিক্ষা-সংস্কৃতি কিম্বা শিল্পকলায় সমৃদ্ধ হতে ততটা আগ্রহী নই। আমরা বাইরেটা সাজাতে যতটা আগ্রহী, ভিতরটা সাজাতে অতটা আগ্রহী নই। তাই বিউটি পার্লারে শিক্ষা-সংস্কৃতিতে যুক্ত নারীদের যতটা ভিড় হয়, লাইব্রেরিতে ততটা ভিড় হয় না। তাঁরা টিভি সিরিয়াল দেখতে যতটা আগ্রহী, ততটা আগ্রহী নন একটি ভালো মানের চলচ্চিত্র দেখতে।
এবার আসা যাক নিবন্ধের শিরোনাম প্রসঙ্গে। ‘কতিপয় উজ্জ্বল বাঙালি নারীর উত্থানের আখ্যান।’ কথায় আছে, ‘ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।’ এই প্রবাদ-বাক্যটি একশো ভাগ ঠিক না হলেও সিংহভাগই কিন্তু ঠিক। কারণ অদম্য আগ্রহ এবং ইচ্ছে থাকলে অনেক সময়েই কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছনো যায়। আমাদের অনেকের মধ্যেই হয়তো প্রয়োজনীয় মেধা ও যোগ্যতা আছে; কিন্তু আগ্রহ ও ইচ্ছেরই বড়ো অভাব। ফলে অনেক সময়েই মেধা ও যোগ্যতার সঠিক মেলবন্ধন ঘটে না। আর এভাবেই শীর্ষ স্থানে পৌঁছতে পারেন না অনেকে।
আইএসআই তথা ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইন্সটিটিউট আমাদের দেশের একটি গর্বের অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেখানে জটিল রাশিবিজ্ঞানের পাঠ দেওয়া হয়। যার প্রতিষ্ঠাতা রবীন্দ্র-সুহৃদ সংখ্যাতত্ববিদ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ। বরানগরের এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অধিকর্তা সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা বাঙালি নারী সমাজের কাছে কম গর্বের বিষয় নয়। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা ক’জন নারীই-বা খোঁজ রাখি এই শীর্ষকর্তার। তিনি শুধু নারী সমাজেরই নন, সমগ্র বাঙালি জাতিরই গর্ব।
আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ওই শীর্ষপদে পৌঁছনো কিন্তু কম কথা নয়। কারণ, নানারকম প্রতিবন্ধকতা লুকিয়ে আছে শীর্ষপদে পৌঁছনোর লম্বা রাস্তায়। সেই গোপন প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে যিনি ওই শিখরে পৌঁছতে পারেন, তাঁকে শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন জানাতেই হয় আমাদের। তাঁর কথায়, ‘এগোতে এগোতে মেয়েরা যেন এতটাই এগিয়ে যায়, আর পিছনে ফিরে তাকানোর পথ না থাকে। নারী-পুরুষ কিম্বা তৃতীয় লিঙ্গভুক্ত মানুষ, সকলের সমান অধিকারই যেন স্বাভাবিক হয়ে যায়। অধিকারের প্রশ্নই আর আর না থাকে।’
অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য কথাই বলেছেন আইএসআই-অধিকর্তা সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু উপযুক্ত শিক্ষা-দীক্ষা নিয়েও সস্তা বিনোদনে ব্যস্ত শিক্ষিত বাঙালি নারীসমাজ তাঁর বক্তব্যকে কতটা মান্যতা দেবেন তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে আমাদের অনেকেরই। সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাওয়াকে (তিনি চান, এগোতে এগোতে মেয়েরা যেন এতটাই এগিয়ে যায়, আর পিছনে ফিরে তাকানোর পথ না থাকে’) মর্যাদা দেওয়ার মানসিকতা আছে কি বাঙালি নারীদের? তিনি চাইলেও বাঙালি নারীসমাজ আদৌ চায় কি?
জানতে চাওয়া হয়েছিল, কোনও উঁচুপদে উঠতে হলে, মেয়েদের ক্ষেত্রে অন্তরায় কোথায়? বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ভাটনগর ও পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপ্ত আইএসআই-অধিকর্তা সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘শহরে মেয়েদের চাকরি করা এখন স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোনও উঁচুপদে উঠতে হলে, অনেকটা মেহনত প্রয়োজন। সময় ও পরিশ্রম, দু’টোই দরকার। সে জায়গায় মেয়েরা পিছিয়ে পড়েন। সংসার-সন্তান সামলে কেরিয়ারের উন্নতির কথা ভাবার সুযোগ পান খুব কম মেয়ে।’
এখানেই কিন্তু শেষ নয়। আরও আছে। আইএসআই-অধিকর্তা শ্রীমতি সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, ‘এসব ক্ষেত্রে কোনও বাড়িতে ছেলের জন্য যতটা করা হয়, মেয়ে বা ছেলের বৌয়ের জন্য তা করা হয় না। মেয়েটির কাঁধে অসংখ্য দায়দায়িত্ব চাপানো থাকে। ফলে চাকরি করা হলেও উঁচুপদে কম মেয়েকেই দেখা যায়। ব্যতিক্রম যে নেই তা নয় (আসলে তিনি নিজেই তো ব্যতিক্রম)। কিন্তু এই সমর্থন যদি সব মেয়েই তাঁর বাড়িতে পেতেন, তা হলে হয়তো আরও বহু মহিলা শীর্ষপদে কর্মরত থাকতেন।’
সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথাটি বলেননি, তা হলো, শুধু বাড়ির সমর্থন পেলেই হবে না— তার সদ্ব্যবহার করার আগ্রহ ও মানসিকতাটাও থাকা চাই। তা নাহলে কখনও কোনও সংস্থার উঁচুপদে পৌঁছানই সম্ভব নয়। যে ইচ্ছেটারই দারুন অভাব নারীদের মধ্যে। সমীক্ষার ফলাফলও কিন্তু তাই জানাচ্ছে। কলকাতা শহর ও শহরতলির প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষিত বাঙালি নারীর মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে ওই সংস্থাটি। যেখানে নারীদের উঁচুপদে পৌঁছনোর অনীহা বা অনিচ্ছের দিকটি উঠে এসেছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি প্রয়াত স্বনামধন্য কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কন্যা এবং এরাজ্যেরই অবসরপ্রাপ্ত মুখ্যসচিব এবং বর্তমানে উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী। এখানে উল্লেখ্য, তাঁর নিয়োগ নিয়ে নানাবিধ কূটতর্ক আছে। এমনকি, তাঁর চাকরির মেয়াদ বাড়ানো নিয়েও আছে বিতর্ক। অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্সির উপাচার্যও মহিলা— অনুরাধা লোহিয়া। তিনি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশ সফরে গিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন।
আরও তিন অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদেও আছেন তিন বাঙালি মহিলা। যেমন কলকাতার এস এন বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস-এর অধিকর্তা তনুশ্রী সাহা দাশগুপ্ত। একশো ছয় বছরের পুরনো জেডএসআই তথা জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র অধিকর্তা ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিএসআইআর— সেন্ট্রাল গ্লাস অ্যান্ড সেরামিক রিসার্চ ইন্সটিটিউট-এর অধিকর্তা সুমন কুমারী মিশ্র। বাঙালি নারীর মুখ উজ্জ্বল করা এই ব্যতিক্রমী নারীদের আখ্যান আমাদের প্রাণিত করে নিঃসন্দেহে।
জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র অধিকর্তা ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্টকথা, ‘যেসব মহিলা কোনও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে রয়েছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁরা কিন্তু নারী ক্ষমতায়নের জোয়ারে ভেসে আসেননি। প্রত্যেকে নিজের জায়গায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেই সিংহাসনের দাবিদার হয়েছেন।’ তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তবে কি মেয়েদের আলাদা করে কোনও প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয় না? ধৃতি জানান, ‘যে কোনও কাজের জায়গায় সমস্যা থাকে। আমার আগে যাঁরা এই পদে ছিলেন, তাঁদেরও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।’
নতুন প্রজন্মের আগ্রহী ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী মহিলাদের প্রতি তাঁর প্রাসঙ্গিক বার্তা, ‘কর্মক্ষেত্রে নিজেকে ছেলে বা মেয়ে হিসেবে আলাদা করে দেখলে চলবে না। মেয়েদের অনেকে নিজেই নিজেকে দুর্বল ভেবে ফেলেন। সবসময় সদর্থক ভাবনা জরুরি।’ এই সদর্থক ভাবনারই অভাব এই সময়ের অনেক উচ্চশিক্ষিত নারীদের মধ্যেও দেখা যায়। যা তাঁদের এগিয়ে চলতে অন্তরায় হয়ে ওঠে। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া প্রয়োজন। তা নাহলে উপযুক্ত শিক্ষা নিয়েও তাঁরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন না, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এস এন বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস-এর অধিকর্তা তনুশ্রী সাহা দাশগুপ্ত সরাসরি জানান, ‘লিঙ্গবৈষম্য অবশ্যই আছে। সেই জন্যেই এ বিষয়ে এখনও কথা হচ্ছে। কেউ কেউ সচেতনভাবে বৈষম্য করেন, কেউ অসচেতনভাবে। কিন্তু বিভেদ করা হয়। ছেলে মানেই তার জীবনের আসল লক্ষ্য উপার্জন। মেয়েটির উপার্জন না করলেও চলে। এটা অনেক সময়ই ছোটো থেকে মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এখনও এই ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি অনেকে।’ শ্রীমতি দাশগুপ্তর সঙ্গে অনেকেই একমত হবেন। ‘তবে পরিস্থিতি যেমনই হোক, হাল না ছাড়ার পণই লক্ষ্য হওয়া উচিত। ছেলেদের থেকে মেয়েদের অনেক বেশি প্রতিবন্ধকতা পেরোতে হয়। তাই মেয়েদের আরও দৃঢ়সংকল্প হতে হবে।’ প্রসঙ্গত, ন্যাটমো তথা ন্যাশনাল অ্যাটলাস অ্যান্ড থিম্যাটিক ম্যাপিং অর্গানাইজেশন-এর অধিকর্তা পদ থেকে সদ্য অবসর নিয়েছেন তপতী বন্দ্যোপাধ্যায়। আইআইএম তথা ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট-এর কলকাতার অধিকর্তা পদে গতবছর পর্যন্ত ছিলেন অঞ্জু শেঠ। এবছরই তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু গতবছর মেয়াদ ফুরানোর আগেই তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। দায়িত্ব ছাড়ার কারণ অবশ্য জানা যায়নি। নারীদের এই সাফল্য প্রসঙ্গে কি বলছেন তাঁরা নিজেরা? সামগ্রিকভাবে তাঁদের সম্মিলিত মতামত হলো, এই অগ্রগতির বীজ পোঁতা হয়েছিল অন্ততঃ একশো-দেড়শো বছর আগে। বাংলার নবজাগরণ ও মনীষীদের হাত ধরেই এরাজ্যে নারীশিক্ষা এমন দৃষ্টান্ত গড়েছে। রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কিম্বা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি-অবদান সকলেরই। গোটা দেশের মেয়েদের জন্য যা অনুপ্রেরণা।
Advertisement



