• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

শিল্পীর নবজন্ম

সোজা, স্পষ্ট ভাষায় বলি। ইহাদের আত্মসমর্পণের চিত্রকে ঢাকিবার চেষ্টা করা এই কাপুরুষদের বেশি সম্মান দেখান। কারণ, আত্মসমর্পণ ছাড়া ইহা আর কিছুই নহে।

ফাইল চিত্র

রম্যাঁ রলাঁ

পূর্ব প্রকাশিতর পর

Advertisement

আমি এই ভাবিয়া আশ্চর্য হইতেছি যে, এত কম ভুল আপনি করিলেন কেমন করিয়া এবং কেমন করিয়া এতদূরে, এত ভিন্ন আবহাওয়ার মধ্যে বসিয়া আমার ভাবধারার এত নির্ভুল ব্যাখ্যা আপনি করিলেন। ইহাতে আবার প্রমাণিত হইল যে, বিভিন্ন দেশে তাহার ঠিকানা হইলেও মনুষ্যপ্রকৃতির মধ্যে একটা মূলগত ঐক্য রহিয়াছে…
এম.কে.জি.

Advertisement

২৭। প্রবন্ধ সংকলনের মধ্যে ইজভেস্তিয়ার বার্লিনস্থ সংবাদদাতা ডব্লু. জে. পানস্কি-সলস্কিকে লিখিত পত্র দ্রষ্টব্য।

সেক্সপীয়রের ‘Coriolanus’ নাটকের শেষের সাত লাইন আমি ইজভেস্তিয়ায় তার করিয়া পাঠাইলামঃ
I am struck into sorrow…..Take him up
Help, three o’ the ehiefest soldiers; I will be one…
Beat thou the drum, that it speak mournfully:
Trail your steel pikes! Though in this city
He hath widowed and onechilded many a one
Which to this hour bewail the injury,
Yet he shall have a noble memory…
পরে লেনিনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘লেনিন, শিল্প ও কর্ম’ নাম দিয়া লেনিন সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ লিখি। ১৯৩৪ সালের ১৫ই জানুয়ারী ইউরোপ পত্রিকায় উহা প্রথম প্রকাশিত হয়।

২৮। ১৯২৬ সালের জানুয়ারী মাস মস্কোর State Academy of Sciences & Arts ইউরোপের বিপ্লবী শিল্পের একটি প্রদর্শনী খুলিবার আয়োজন করিতেছিলেন (সাহিত্যিক রচনা, ছবি, নাটক, গান, নাচ, সিনেমা ইত্যাদি)। প্রদর্শনীসমিতির সভাপতি পি. কোগানের স্বাক্ষরিত একখানি আবেদনপত্রে তাহারা পশ্চিম ইউরোপ ও আমেরিকার আর্টিস্টগণকে এই প্রদর্শনীতে যোগ দিতে আমন্ত্রণ করেন।

২৯। স্বাতন্ত্র্যবাদের মরুভূমির মধ্যে মার্ক সংগ্রাম করিতেছিল। কেমন করিয়া ইহা ঘটিল? কাল পর্যন্তও যখন যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে চারিদিকে আগুন জ্বলিতেছিল তখনও ইহা ছিল স্বাধীন আত্মার মরুদ্যান; তখনও ছিল ঝরণার স্বচ্ছ জল, আর খর্জুর বৃক্ষতলে পরিষ্কার রাত্রি। আজ ঝরণার জল বিষাক্ত ও কর্দমাক্ত, খর্জুর বৃক্ষের বেষ্টনী ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, আকাশ ধূসর, বাতাসে আগুনের হলকা। মরুভূমি তাহার লোলজিহ্বা মেলিয়া সব কিছু মুছিয়া খাইয়াছে।

সোজা, স্পষ্ট ভাষায় বলি। ইহাদের আত্মসমর্পণের চিত্রকে ঢাকিবার চেষ্টা করা এই কাপুরুষদের বেশি সম্মান দেখান। কারণ, আত্মসমর্পণ ছাড়া ইহা আর কিছুই নহে। ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য বা স্বাধীন, মন এ আর নহে। ইহা আত্মসমর্পণ করিয়াছে। ইহার কি আর বাকী আছে? ইহার পতাকার কিছু ছিন্ন অংশ পকেটে লুকানো রহিয়াছে, ছোটখাট ব্যাপারে তাহা বাহির করিয়া দেখাইতেছে। রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রচালকদের, জনমতের ও সংবাদপত্রের বিরোধিতা করিবার সাহস কাহার আছে? বেষ্টনীর মধ্য হইতে তাহারা নিজেদের স্বাধীন বলিয়া জাহির করিতেছে।

চোরেদের মত বড় বড় কাব্যের বুলি আওড়াইয়া তাহারা তাহাদের নিজেদের বাগানের কাজ লইয়া আছে। নিজের নির্দিষ্ট স্থানটিতে কুণ্ডলী পাকাইয়া হোরেস আগামী বংশধরদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়াছেন এ-কথা গর্বের সহিত স্বীকার করিবার মত একটা নৈরাশ্যবাদ তাহার ছিল।

(ক্রমশ)

 

Advertisement