• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা

এমন পরিস্থিতি যেন না হয় যে চিনকেও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে হয়। কারণ তারা শান্তি চায়। তার জন্য যা করা দরকার তারা করবে। করছেও।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

এমন কি প্রয়োজন পড়ল যে আমেরিকা পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছে। বিশ্বের অন্য পরমাণু শক্তিধর দেশগুলি আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। পরমাণু অস্ত্রের এই পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সর্বপ্রথম আমেরিকার প্রেসিডেন্টের পদে থাকা কোনও প্রেসিডেন্ট এই পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষার নির্দেশ দিলেন। কেন তিনি এই নির্দেশ দিলেন, তার ব্যাখ্যা করে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, পাকিস্তান, রাশিয়া, চিন এবং উত্তর কোরিয়াও তাদের পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে— তার সঠিক কারণ তারা কিন্তু জানায়নি। তাহলে আমরাও এ ব্যাপারে পিছিয়ে থাকব কেন? যে সব দেশগুলি অস্ত্র পরীক্ষা করছে তাদের মধ্যে পাকিস্তান বাদে অন্য তিনটি দেশ রাশিয়া, চিন ও উত্ত কোরিয়া বাণিজ্যিক ও সামরিক ক্ষেত্রে আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী। স্বাভাবিকভাবেই পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়ে গেছে। তবে ভারত আমেরিকার এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি। তবে ভারত নীরবে সবকিছু লক্ষ্য করে যাচ্ছে। ট্রাম্প জানান, গোপনে এই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই মাটির অনেক গভীরে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। ফলে ভুপৃষ্ঠে কিছু কম্পন অনুভূত হলেও তার জন্য সাধারণ মানুষের কোনও অসুবিধে হয় না।

কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষার কথা খারিজ করিয়ে দিচ্ছে চিন। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চিন একটি দায়িত্বশীল পরমাণু শক্তিধর দেশ। তাই আত্মরক্ষার প্রয়োজন ছাড়া চিন পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা করে না। চিন সরকারের অপর এক মুখপাত্র মাও সিং একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, তাদের লক্ষ্য শান্তিপূর্ণ ভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া। পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা বন্ধ রাখতে তারা দায়বদ্ধ। তাই চিন ট্রাম্পের ওই মনগড়া কথায় বিশ্বাস করে না। চিনের নেতারা বলেন, তারা বিশ্বজুড়ে শান্তি চায়— তার জন্য তাদের দেশে যা করা দরকার তা করে। তবে এমন পরিস্থিতি যেন না হয় যে চিনকেও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে হয়। কারণ তারা শান্তি চায়। তার জন্য যা করা দরকার তারা করবে। করছেও।

Advertisement

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আবার দাবি করেন, কয়েকমাস আগে সিঁদুর অপারেশনে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে তিন দিনের সংঘর্ষ হয়েছিল, তাতে উভয় দেশই পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার করেছিল। তিনি তা থামিয়ে দেন— তা না হলে শত শত মানুষের মৃত্যু হত। এই সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছে হোয়াইট হাউসের নির্দেশে। ট্রাম্প এই নিয়ে দুই দেশতে সংঘর্ষ থামাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি এই সংঘষর্থ না থামাতে পারলে উভয় দেশের ক্ষতি হত। প্রচুর মানুষও মারা যেত।

Advertisement

কিন্তু ভারত ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ভূমিকা স্বীকার করে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছিলেন, কোনও তৃতীয় পক্ষের নির্দেশে এই যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। অর্থাৎ ট্রাম্প যে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা দিল্লি জানে না। কিন্তু বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রাহুল গান্ধি বারবার সংসদে দাবি করতে থাকেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, তবে কীভাবে হঠাৎ করে সংঘর্ষ চলাকালীন তা বন্ধ হল। তাঁরা জানেন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের নির্দেশেই এই সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছিল।

দিল্লির সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছিল, দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি কথাবার্তার পর এই সংঘর্ষ থামানো হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবিকে দিল্লি স্বীকার করে না। কিন্তু ট্রাম্প তাঁর দাবি নিয়ে অনড়।
ভারতের সেনা কর্তৃপক্ষর তরফে দাবি করা হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনদিনের এই যুদ্ধে কম করেও ১০০ জন পাকিস্তানের সেনা নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের অনেক সমরাস্ত্র ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভারতবাসী জানে না এই যুদ্ধে ভারতের ক্ষয়ক্ষতি কত। পাকিস্তানও তার পারমাণবিক অস্ত্র এখনও পরীক্ষা করে চলেছে। ভারত-পাক তিন দিনের সংঘর্ষে ভারতের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে নানা কথা শোনা গেলেও, ভারত এখনও তা গোপন রেখেছে। তবে রাহুল গান্ধি এখনও বিশ্বাস করেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কথায় যুদ্ধ থেমেছে।

ভারত-পাক সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের সময় চিন ও উত্তর কোরিয়া তাদের সমরাস্ত্র দিয়ে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে। যুদ্ধ থামার পর পাকিস্তানের সেনা কর্তৃপক্ষের তরফে বেশ কয়েকজন অফিসার বাংলাদেশ সফর করেন এবং ওই দেশকে সমরাস্ত্র দিয়ে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন। বাংলাদেশের সেনা কর্তৃপক্ষের তরফেও অফিসারেরা পাকিস্তান সফর করেন। পাকিস্তান সেনা বাহিনীর তরফে অবশ্য বলা হয়েছে, সিঁদুর অপারেশনে ভারতের বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। যদিও ভারত তা স্বীকার করে না।

Advertisement