• facebook
  • twitter
Monday, 28 July, 2025

ইলেকট্রিক বাসের ব্যয়বহুল বোঝা থেকে রেহাই পেতে সিএনজি বাসের দিকে ঝুঁকছে নবান্ন

সিএনজি বাসের ক্ষেত্রে এখনও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন, এই বাসগুলির গ্যাস সরবরাহের জন্য এখনও শহরে পর্যাপ্ত সিএনজি স্টেশন গড়ে ওঠেনি।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

উদ্দেশ্য সফল হয়নি। তাই এবার পরিবেশবান্ধব যানবাহনের লক্ষ্যে ইলেকট্রিক বাস থেকে একধাক্কায় সিএনজি বাসের দিকে ঝুঁকছে রাজ্য সরকার। ই-বাসে মাত্রাছাড়া খরচের কারণে নীতিগত সিদ্ধান্তে বদল আনল নবান্ন। পরিবেশ রক্ষার উদ্দেশ্যে শুরু হলেও প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক কারণে ইলেকট্রিক বাসের জমানার অবসান ঘটতে চলেছে। অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী এবং টেকসই পদ্ধতির প্রত্যাশায় এ বার সিএনজি বাসের পথ ধরে হাঁটতে চাইছে রাজ্য।

পরিবহণ দপ্তর সূত্রের খবর, নবান্ন ইতিমধ্যে ২০০টি সিএনজি চালিত এসি বাস কেনার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। প্রতিটি বাসের দাম ধার্য করা হয়েছে আনুমানিক ৪২ থেকে ৪৪ লক্ষ টাকা। এই বাসগুলি শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, দীর্ঘস্থায়ীও বটে! ইলেকট্রিক বাসের মতো ব্যয়বহুল ব্যাটারির ঝক্কি ছাড়াই এই বাসগুলি অন্তত ১৫ বছর রাস্তায় নিশ্চিন্তে পরিষেবা দিতে পারবে। সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক চললে আসন্ন দুর্গোৎসবের আগেই শহরের রাস্তায় নামবে ৩০–৪০টি নতুন সিএনজি বাস।

প্রসঙ্গত, পরিবেশের কোনও ক্ষতি না করেই যাত্রী পরিবহণের লক্ষ্য ছিল রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের। সেজন্য বছর সাতেক আগে কলকাতা শহরে প্রথমবার চালু হয়েছিল ই-বাস। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা অত্যন্ত হতাশাজনক। তাই সিদ্ধান্তে বদল করল রাজ্য। নতুন করে আর ই-বাস কিনবে না রাজ্য পরিবহন দপ্তর। সম্প্রতি নবান্নে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনটাই সূত্রের খবর।

রাজ্য পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে রাজ্যে ৮০টি ইলেকট্রিক বাস রয়েছে। এই বাসগুলির দৈর্ঘ্য ৯ মিটার ও ১২ মিটার। প্রতিটি বাসের দাম ৯৫ লক্ষ থেকে ১.৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত। বাস নির্মাণকারী সংস্থার দাবি ছিল, সম্পূর্ণ চার্জে বাসগুলি ১০০–১১০ কিমি পর্যন্ত চলতে পারে এবং অন্তত ১২ বছর যাত্রী পরিবহণে সক্ষম। তবে বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছে না। খুব অল্প সময়েই ব্যাটারির ক্ষমতা কমে গিয়ে ৭০–৮০ কিমিতে মাইলেজ নেমে আসছে। প্রতিটি ই-বাসে রয়েছে তিনটি করে ব্যাটারি, যার দাম আকাশছোঁয়া। এক-একটির দাম প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা। ফলে ব্যাটারি দুর্বল হলে এই বাসগুলি অচল হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি এই ধরনের বাসের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ও যন্ত্রাংশের অভাবজনিত সমস্যাও রয়েছে। অর্থনৈতিক চাপের মুখে রাজ্য সরকার এই ব্যয়ের বোঝা আর বহন করতে চাইছে না।

তবে সিএনজি বাসের ক্ষেত্রে এখনও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন, এই বাসগুলির গ্যাস সরবরাহের জন্য এখনও শহরে পর্যাপ্ত সিএনজি স্টেশন গড়ে ওঠেনি। বর্তমানে শুধুমাত্র কসবা ডিপোতে একটি সিএনজি পাম্প রয়েছে। টালিগঞ্জ, বারাসত ও হাওড়ায় স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। আবার রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত বদলের ফলে ১৪টি ইলেকট্রিক গাড়ির চার্জিং স্টেশনের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কার্যত অব্যবহৃত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই পরিকাঠামো।