• facebook
  • twitter
Saturday, 19 July, 2025

ম্যাচ ফিক্সিং

আরজেডি সরকার গঠন করার মতো পরিস্থিতিতে এলে নির্বাচন কমিশন তিনটি সাংবাদিক বৈঠক করে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কেন গণনা বিকেলে বন্ধ করে দিয়ে ফের রাতে শুরু করা হয়েছিল।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে হাইজ্যাক করেছে, এই কথা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। অথচ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির নিরপেক্ষভাবে কাজ করা প্রয়োজন। যদি সাংবিধানিক সংস্থাগুলিই বরবাদ হয়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষ ন্যায় পাবেন না। বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর এই অভিযোগের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবও।

ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তার আগেই বিজেপির আইটি সেল জেনে যায় ভোট কবে হবে। এই প্রসঙ্গেই তেজস্বী যাদব বিহারের গত বিধানসভা ভোট কারচুপির বিষয়টি উত্থাপন করেন। বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী বিহারের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের ভোটের কথা উল্লেখ করে একে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ বলে উল্লেখ করেন। ২০২০ সালে বিহারের বিধানসভা ভোটে রাতের অন্ধকারে বেশ কিছু আসনের ফলাফল বদলে দেওয়া হয়েছিল। আরজেডি সরকার গঠন করার মতো পরিস্থিতিতে এলে নির্বাচন কমিশন তিনটি সাংবাদিক বৈঠক করে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কেন গণনা বিকেলে বন্ধ করে দিয়ে ফের রাতে শুরু করা হয়েছিল। সেই সময় আরজেডি-র যে সমস্ত প্রার্থীরা জিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের কারওকে ১২ ভেটে, কারওকে ১০০ বা ৫০০ ভোটে পরাজিত বলে ঘোষণা করা হয়। যে প্রার্থীরা বিকেল পর্যন্ত জয়ী হয়েছিলেন, তাঁরা হেরে গেলেন রাতের ফলাফলে।

রাহুল গান্ধীর অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন সরাসরি উত্তর না দিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাতে পরামর্শ দেয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬টি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলকে একটি বৈঠকে ডেকে এনে মহারাষ্ট্রের নির্বাচন সম্পর্কে অভিযোগের জবাব দেওয়ার কথা স্থির হয়। কিন্তু কংগ্রেস সেই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিল। একটি ইংরাজি দৈনিকে সেই সময় ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ নামে রাহুল গান্ধীর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে রাহুল দেখানোর চেষ্টা করেছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট এবং ২০২৪ সালের বিধানসভা ভোটের মধ্যে কীভাবে ভোটারের সংখ্যাবৃদ্ধি, বাড়তি ভোট পড়া ইত্যাদির মাধ্যমে ভোটে কারচুপি করা হয়েছে। রাহুলের অভিযোগ, আসন্ন বিহার বিধানসভার ভোটেও এই ধরনের ‘ম্যাচ ফিক্সিং’-এর চেষ্টা হবে।

রাহুল গান্ধীর অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশন নীরব থাকলেও আক্রমণে নামে বিজেপি। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ পাল্টা নিবন্ধ লিখে রাহুল গন্ধীর বক্তব্যের বিরোধিতায় নামেন। কংগ্রেস দলের প্রবীণ নেতা রমেশ চেন্নিখাল প্রশ্ন তেলেন, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপি নিয়ে রাহুলের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা, যা অত্যন্ত উদ্বেগের। নির্বাচন কমিশনের হয়ে বিজেপি নেতাদের জবাব প্রমাণ করে মহারাষ্ট্রের ভোটে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ হয়েছে। ভোটে কারচুপির যে তথ্য রাহুল গান্ধী তুলে ধরেছেন, নির্বাচন কমিশন তার জবাব দিক। কমিশনের জবাব ভাসা ভাসা এবং সন্তোষজনক নয়। মানুষের নজর ঘোরাতে ষড়যন্ত্রমূলক চেষ্টা করেছেন ফড়ণবীশ। ভোটলুটের সরাসরি ফায়দা তুলেছে বিজেপি এবং ফড়ণবীশ সরকার। নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না নির্বাচন কমিশনকে। মোদী জমানায় সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানই বিজেপির কথায় চলছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সংবিধানকে এইভাবে পদদলিত করছে বিজেপি।