বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি

ঝড় আছড়ে পরার পর প্রশাসন, যে তড়িৎগতিতে তার মােকাবিলা করেছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার তার প্রশংসা করেছেন।

Written by SNS Kolkata | November 13, 2019 3:29 pm

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল (File Photo: IANS/PIB)

বুলবুল ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের দিকে সরে গেছে বলে পশ্চিমবঙ্গে একটা স্বস্তির মনােভাব গড়ে ওঠা উচিত নয়। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি প্রশাসনকে অবিলম্বে নিরূপণ করতে হবে। ঝড় আছড়ে পরার পর প্রশাসন, যে তড়িৎগতিতে তার মােকাবিলা করেছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার তার প্রশংসা করেছেন। আবহাওয়া বিভাগ ঝড় আসার আগেই বিপদ সংকেত জারি করেছিল।

তবুও এই ঝড়ে তিন জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম ও হুগলিতে ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিয়তির পরিহাস, এর মধ্যে ওল্ড ও নিউ দিঘায় ২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। কর্তৃপক্ষ যদি সময়মতাে সমুদ্রে না নামার নির্দেশিকা জারি করত তাহলে হয়ত এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটত না।

সাধারণ ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে ৬০ হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ এম ভি চন্দ্রানী নামে একটি ট্রলার বঙ্গোপসাগরে মৌসুনি দ্বীপের অদূরে ডুবে যায়। এই ট্রলারে ৮জন মৎস্যজীবী ছিল, তাদের এখনও কোনও খোঁজ নেই। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কী করে তারা সমুদ্রে গেল তা নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।

সুন্দরবনের টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টে ৭ দিনের জন্য (১১ থেকে ১৭ নভেম্বর) ট্যুরিস্ট পারমিট আগেই বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল, যা প্রত্যাশিতই ছিল। বুলবুল সাইক্লোন থেকে আরেকটা শিক্ষা হল কলকাতায় অনেক বড় বড় গাছ দুর্বল ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ঝড়ে একটি বিরাট দেবদারু গাছ ভেঙে মাথায় পড়ায় ২৮ বছরের এক যুবক মারা গেছে। শহরের গাছগুলি কী অবস্থায় আছে তা নিয়েও একটা সমীক্ষা করার প্রয়ােজন আছে। কারণ অতীতেও শহরে ঝড়ে গাছ পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। 

এ বছরের গােড়ার দিকে যখন সাইক্লোন ফণী ওডিশায় আছড়ে পড়েছিল। তখন নবীন পট্টনায়ক সরকার সফলভাবে তার মােকাবিলা করেছিল। পশ্চিমবঙ্গেও তার অন্যথা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করে ঝড়ে বিধ্বস্ত দক্ষিণবঙ্গের নামখানা ও বকখালির ক্ষয়ক্ষতি আকাশপথে পর্যবেক্ষণ করে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রীকে টেলিফোন করে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় সহযােগিতার চমকপ্রদ নিদর্শন হিসাবে ওড়িশায় মােতায়েন ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ)-এর কয়েকটি দলকে আগেই নিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গে কাজে লাগানাে হয়। উদ্ধারকার্য ও ত্রাণবণ্টনে তারা রাজ্য প্রশাসনকে সাহায্য করছে। এর উপরে এনডিআরএফের আরও ১৮টি দলকে মজুত রাখা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। এই ঘূর্ণিঝড়ে ৪.৬ লাখের ওপর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও কেন্দ্রীয় সরকার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য উদ্যোগ নেবে বলে আমরা আশা রাখি।