• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

রক্তে রাঙানো একুশে জুলাই আমরা কি ভুলিতে পারি

যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতেন যুব সমাজ যদি বিদ্রোহ ঘোষণা করে, সেখানে কোনও প্রতিরোধ বড় করে দেখা দিতে পারবে না।

ফাইল চিত্র

অরূপ রায়, মন্ত্রী

রক্তে রাঙানো একুশে জুলাই আমরা কি ভুলিতে পারি। সেই স্মরণীয় দিনটা ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই। স্বৈরাচারী, অত্যাচারী, নির্মম ও বর্বর শাসক গোষ্ঠীকে বাংলা থেকে উৎখাতের ডাক দিয়েছিলেন সেদিনের যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘মহাকরণ চলো’ আহ্বানে বাংলার যুব সমাজ গর্জে উঠেছিল। ভোরের আলো ফুটতেই কলকাতা রাজপথ চঞ্চল হয়ে উঠল। মানুষের পায়ে পায়ে। মিছিলে আওয়াজ উঠল এই সরকার নিপাত যাক। মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে দাও। ছাত্র পরিষদের তরুণ ব্রিগেড ‘মহাকরণ চলো’ আহ্বানে উত্তাল হয়ে উঠল। স্বপ্নের বাংলা দেখবার জন্যে তারা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিল। যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতেন যুব সমাজ যদি বিদ্রোহ ঘোষণা করে, সেখানে কোনও প্রতিরোধ বড় করে দেখা দিতে পারবে না।

Advertisement

সত্যি তাই হলো। জনস্রোতে কলকাতা উত্তাল হয়ে উঠল। শহরের পাঁচটি পয়েন্ট থেকে মহাকরণ উদ্দেশ্যে মিছিল এগিয়ে আসতে থাকে। সব জায়গায় তদারকি করছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যুবশক্তি এই বাংলায় পরিবর্তন আনতে পারবে। এই বিশ্বাস সেদিনের যুবনেত্রীকে বড় সাহস দিয়েছিল। একটু বেলা বাড়তেই কলকাতা শহরের চেহারা একেবারে বদলে গেল। সারা শহরে শুধুই প্রতিবাদের মিছিল। সেই গর্জন হয়তো ওইদিন আছড়ে পড়েছিল মহাকরণের অলিন্দে। মন্ত্রিসভার সদস্যরা বিচলিত হয়ে পড়লেন। পুলিশকে বলা হল রুখে দাও ওই প্রতিবাদীদের। মহাকরণের আসার পথ অবরুদ্ধ করে দাও। পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে।

Advertisement

বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করা হল। থমকে দেওয়া হল মিছিলের পথ। কিন্তু যুবসমাজ কোনও রকম ভয় না পেয়ে এগিয়ে চলে মহাকরণের পথে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পুলিশ লার্ঠিচার্জ করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ‘আমরা করবো জয়’ এই শপথে এই আন্দোলন আরও জোরদার হয়ে ওঠে। পুলিশ এবারে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে এই মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করতে চায়। তবুও আন্দোলনকারীরা অনঢ় মহাকরণে পৌঁছতে। এরই মধ্যে খবর আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চোট পেয়েছেন। মিছিলে আসা প্রত্যেকেই সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যায়োর চেষ্টা করতে থাকে। আর তখনই পুলিশ আরও হিংস্র হয়ে প্রতিবাদীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। রক্তাক্ত হল রাজপথ। প্রাণ হারালেন বেশ কয়েকজন প্রতিবাদী। তবুও আন্দোলন থমকে থাকেনি গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে।

সেদিনের শহিদদের রক্তে নতুন বাংলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মা-মাটি-মানুষের সরকার গঠন হয়েছে। তাই প্রতি বছর ২১ জুলাই শহিদ তর্পণ করে নতুন করে শপথ নিয়ে বাংলার জয়গান গাই।

Advertisement