ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদে উত্তেজনা এবং তার সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে একমাস হয়ে গেল। একদিকে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনি বিএসএফ-এর গুলিতে এক নাবালকের মৃত্যু হয়েছে, এমন খবরও সামনে এসেছিল। এবার সেই ঘটনা নতুন মোড় নিতে শুরু করেছে। তদন্তে জানা যাচ্ছে, ওই গুলি বিএসএফ করেনি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে গুলিটা কে করেছিল?
প্রসঙ্গত ঘটনাস্থলে ঘুপচি গলিগুলি কোনওটা সোজা সড়ক নয়। কোনওটা গিয়ে উঠেছে কোনও অপ্রশস্ত বাড়ির দরজায়। কোনওটা আবার রাস্তার অন্য প্রান্তে গিয়ে শেষ হয়েছে। গলির আশেপাশের বাড়িগুলির কোনও কোনও দেওয়াল ও জানালার নিচে বুলেটের দাগ। কোথাও অন্যান্য জিনিসপত্রেও বুলেটের দাগ লক্ষ্য করা গিয়েছে। কোথাও কোথাও দেওয়াল ও দরজা-জানালাতে বারুদের আধপোড়া দাগও লক্ষ্য করা গিয়েছে।
Advertisement
এইসব বাড়িগুলির অধিকাংশই ঘিঞ্জি জনবসতি এবং আবছা অন্ধকারে ভরা। সেখানে এখনও অনেক তরতাজা যুবকেরা গুলির ক্ষত নিয়ে ঘরের বিছানায় শুয়ে আছে। ঘটনার দিন আচমকা ধেয়ে আসা বেশ কিছু বুলেট তাদের শরীর ভেদ করে গেছে। অথচ ওয়াকফ আইন আসলে কী, তা এরা কেউ জানেনা। ধুলিয়ান পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের ঘিঞ্জি বস্তি এলাকা ঘুরলে এরকম প্রায় একডজন কিশোর ও যুবকের দেখা মিলবে, যারা ঘটনার দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এছাড়া আরও প্রায় পাঁচজন কলকাতা সহ অন্যান্য বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এইসব এলাকায় স্থানীয় লোকেরা চিনিয়ে না দিলে কোনও পাড়ার গলিতে ঢুকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে গুলিটা চালাল কারা? বিষয়টি নিয়ে এখনও রয়ে গেছে একাধিক ধোঁয়াশা।
Advertisement
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলে গিয়েছেন, ‘বিএসএফ গুলি না চালালে পরের দিনের ঘটনা ঘটত না, আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’ যদিও স্থানীয়জন সমস্বরে জানিয়েছেন, জাফরাবাদে বাবা-ছেলের খুনের ঘটনা ঘটে ১২ এপ্রিল। সেই দিনই ধুলিয়ানের এই এলাকায় গুলি চলেছে। গুলি চালাল কারা? আহত এবং তাঁদের বাড়ির লোক, সকলের দাবি— কাছাকাছি কোথাও মিছিল হওয়ার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল। গোলমাল হচ্ছে খবর শুনে রাস্তায় ভিড় করা লোকজনের উপর গুলি করে চলে গিয়েছে বন্দুকধারীরা। বিএসএফের পোশাক গায়ে, অথচ তাঁদের পায়ে চটি পরা ছিল– এরকম কিছু লোক পাড়ার মধ্যে এসে গুলি চালিয়েছে। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় তখন কোনও গোলমাল হচ্ছিল না। এমনকি পুলিশ বা কোনও বাহিনীর গাড়িই তাঁরা দেখেননি।
Advertisement



