খড়গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত চাঙ্গুয়াল অঞ্চলে নির্মীয়মান ইন্টিগ্রেটেড টিম প্লান্টে মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হল দুই ঠিকা শ্রমিকের। শনিবার সকালে দুর্ঘটনা ঘটার পরেই শ্রমিক বিক্ষোভে কারখানার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কারখানার সব কটি গেট শ্রমিকেরা আটকে দেন। মৃত দুই শ্রমিকের নাম রাহুল মিদ্দা (২৭) ও তাপস জানা (৪০)। রাহুলের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী কাছারি বাড়িতে আর তাপসের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে। দুর্ঘটনার কথা স্বীকার করে নেন ইন্টিগ্রেটেড স্টিল প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকালে সিভিল কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছিল। সেন্টারিং -এর কাজ করছিলেন কয়েকজন ঠিকা শ্রমিক। সেই সময় আচমকাই পাশের নরম মাটি ধসে যায় মাটি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রাহুল ও তাপস । দুই শ্রমিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়া মাত্র ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে সামিল হন। তারা প্লান্টে ঢোকার সমস্ত গেট বন্ধ করে দেন। বিকেলে এই খবর লেখা অব্দি বিক্ষোভ চলছে।
মৃত রাহুল মিদ্দার বাবা খগেন মিদ্যা বলেন, আমার ছেলে এই কারখানায় কাজ করতো। সকালবেলায় খবর পাই ছেলের দুর্ঘটনা হয়েছে। মাটি চাপা পড়ে মারা গেছে। ও ঢালাইয়ের কাজ করতো । দেড় মাস হল কাজে ঢুকেছিল। মৃত রাহুল মিদ্দার ভাগনে তোতন মান্না বলেন, আমার মামা এই কারখানায় কাজ করতো। আমরা শুনতে পেয়েছি বিল্ডিং চাপা পড়ে মারা গিয়েছে । মামা সেন্টারিং -এর কাজ করতো। খবর পেয়ে আমরা এসেছি।
ইন্টিগ্রেটেড স্টিল প্লান্টের এইচআর, আইআর এবং এডমিন ডিরেক্টর অভিজিৎ রায় বলেন, সিভিল কনস্ট্রাকশনয়ের কাজ চলাকালীন মাটি ধ্বসে পড়ে। দুদিনের বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে ছিল। ওই মাটি চাপা পড়েই দুজন শ্রমিক মারা গিয়েছেন। বাকি শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে । আশা করছি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। অভিজিৎবাবু আরো জানান, মৃতের পরিবারকে আপাতত ক্ষতিপূরণ বাবদ আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে । ক্ষতিপূরণের বাকি টাকার পরিমাণ লেবার কোর্টে ধার্য করা হবে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের ক্ষোভ স্বাভাবিক।
খড়গপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ইন্টিগ্রেটেড স্টিল প্লান্টের বিভিন্ন কারখানায় গত কয়েক বছরে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনায় শ্রমিক মৃত্যুর খবর জলভাত হয়ে গিয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষ কমাতে কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার উপর ওয়ার্কশপও করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও শ্রমিক মৃত্যুর ধারাবাহিকতা বুঝিয়ে দেয় শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে নজরদারির অভাব রয়েছে।