ভারতের অর্থনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হলে, শৈশব ও যৌবনে পদার্পণ করা মানুষের জীবনযাত্রা ও পছন্দগুলির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪-২৫ সংসদে উপস্থাপিত হয়েছে, যেখানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেছেন, ‘মানসিক সুস্থতা হল জীবনের চ্যালেঞ্জগুলি পরিচালনা করার এবং উৎপাদনশীলভাবে কাজ করার ক্ষমতা। মানসিক সুস্থতা আমাদের সমস্ত আবেগ, সামাজিক, মেলামেশা এবং শারীরিক ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। এটিকে মনের সমন্বিত স্বাস্থ্য হিসাবেও বিবেচনা করা যেতে পারে।’
একটি সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, জীবনযাত্রার মান, কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি এবং পারিবারিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি উৎপাদনশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ।
বর্তমানে শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যর সমস্যা বৃদ্ধির কারণকে প্রায়শই ইন্টারনেটের অতিরিক্ত ব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। বিশেষত, সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকাকে। জোনাথন হাইডটের বই ‘দ্য অ্যাক্সিস জেনারেশন- হাউ দ্য গ্রেট রিওয়্যারিং অফ চিলড্রেন ইজ কজিং অ্যান এপিডেমিক অফ মেন্টাল ইলনেস’-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সমীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, একটি উন্নত কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি আরও ভালো মানসিক সুস্থতার দিকে তাদের পরিচালিত করতে পারে। জীবনযাত্রার মান এবং পারিবারিক পরিস্থিতিও মানসিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে বলা হয়েছে যে-সব ব্যক্তিরা, প্রক্রিয়াজাত বা প্যাকেটজাত জাঙ্ক ফুড খান, তাদের মানসিক সুস্থতা, যারা খান না, তাদের চেয়ে খারাপ। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এরা খুব কম ব্যায়াম করেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের অবসর সময় ব্যয় করেন এবং তাঁদের পরিবারের কাছাকাছি থাকেন না। এঁদের মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হয় ক্রমশ।
নিজের ডেস্কে দীর্ঘ সময় কাটানোও, মানসিক সুস্থতার জন্য সমানভাবে ক্ষতিকর। সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, মানসিক সুস্থতার এই স্তর উদ্বেগজনক, অর্থনীতিতে এই প্রবণতাগুলির প্রভাবও সমানভাবে পড়ছে। নথিতে আরও বলা হয়েছে যে, প্রতিকূল কাজের সংস্কৃতি এবং ডেস্কে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা মানসিক সুস্থতার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
সমীক্ষায় স্বাস্থ্যকর বিনোদনকে উৎসাহিত করতে স্কুল ও পরিবার পর্যায়ে জরুরি হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা, বাইরে খেলা, ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধন গড়ে তুলতে সময় বিনিয়োগ করা, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ইন্টারনেট থেকে দূরে রাখা তাদের মানসিক সুস্থতার উন্নতিতে অনেক দূর এগিয়ে দিতে পারে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, আমাদের শিকড়ে ফিরে আসার ফলে আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আরও ভারসাম্য রাখতে পারব।