• facebook
  • twitter
Tuesday, 29 April, 2025

ধসের ক্ষতে সাড়ে সাত লক্ষ কোটির প্রলেপ

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সোমবারের ধসে বাজার থেকে উবে গিয়েছিল প্রায় ২০ লক্ষ কোটি টাকা। ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। সোমবারের সেই ক্ষতি পুষিয়ে মঙ্গলবার বাজার খোলার পর প্রথম ২০ মিনিটেই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে শেয়ার বাজার।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

শেয়ার বাজারকে কথ্য ভাষায় বলা হয় ‘ফটকা বাজার’। যেকোন সময় যেকোন রূপে দেখা দিতে পারে এই বাজারের রূপ। কখনও আকাশে তো কখনও ধরাতলে। ঠিক এই খেলই দেখা গেল মঙ্গলবার। মাত্র ২০ মিনিটে ভারতীয় শেয়ার বাজার যে আকার ধারণ করল তা বিনিয়োগকারীদের কাছে অকল্পনীয়। সোমবার যে শেয়ার বাজার ধসের মুখ দেখিয়েছিল সেই বাজার মঙ্গলবার খুলতে সেনসেক্স উঠেছে ১৩০০ পয়েন্টের অধিক। একই ভাবে নিফটি ৫০ বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০০ পয়েন্টের কাছাকাছি।

উল্লেখ্য, ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ গোটা বিশ্বে বিনিয়োগকারীদের মনোবল ভেঙে দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর বৈশ্বিক শুল্কারোপ। এতে পুঁজিবাজারগুলোর অবস্থা শোচনীয়। কারণ, গোটা বিশ্ব জুড়ে বিনিয়োগকারীরা তাঁদের বিনিয়োগ করা অর্থ তুলে নিতে চাইছেন ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায়। যারফলে শেয়ার বিক্রির এমন হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে যে সোমবার বাজার বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত গত তিনদিনের লেনদেনের হিসেবে বলছে ডুবেছে ৯ ট্রিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যাঁর হিসেবে করতে গেলে মাথা ঘুরে যাবে। গত সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল ট্রাম্প নতুন এই পাল্টা শুল্কের সিদ্ধান্ত থেকে শেষপর্যন্ত সরে আসবেন, কিন্তু সে আশায় জল ঢেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যারফলে বিনিয়োগকারীরা আর শেয়ার বাজারে ভরসা রাখতে পারছেন না। শুরু হয়েছে বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার যুদ্ধ। বিশ্ব বাজারে নেমেছে নেমেছে ধস।

সোমবার যখন হুড়মুড়িয়ে পড়ছিল একটার পর একটা শেয়ারের দর। সেই ধসে দালাল স্ট্রিটে নেমেছিল হাহাকার। গায়েব হয়েছিল বিনিয়োগকারীদের কয়েক লক্ষ কোটি টাকা। একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সোমবারের ধসে বাজার থেকে ধুয়ে উবে গিয়েছিল প্রায় ২০ লক্ষ কোটি টাকা। ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। এমনকি, সোমবার এক দিনে অম্বানি-আদানির মিলিত ক্ষতি হয়েছিল ৬০০ কোটি টাকার অধিক।

সোমবারের সেই ক্ষতি পুষিয়ে মঙ্গলবার বাজার খোলার পর প্রথম ২০ মিনিটেই সোমবারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে শেয়ার বাজার। লগ্নিকারীদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে সাড়ে সাত লক্ষ কোটি টাকা।

মঙ্গলেবার নিফটি এফএমসিজির দর বেড়েছে ২.১০ শতাংশ। অন্য দিকে ৩.৯৩ শতাংশ বেড়েছে জোম্যাটো। সোমবার ক্ষতিগ্রস্ত এক্সিস, এইচডিএফসি, আইসিআইসি ব্যাঙ্ক -এর শেয়ারগুলি বেড়েছে দেড় শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, সোমবার যেমন ভারতীয় বাজারে দেখা দিয়েছে ধস ঠিক তেমনই ডুবেছে ইউরোপের বাজারও। ইউরোপীয় পুঁজিবাজারের সার্বিক সূচক স্টক্স ৬০০-র পতন হয়েছে ৫ শতাংশ। ২০০৮ সালের পরে সোমবারেই এতবড় পতন দেখেছে এশিয়ার পুঁজিবাজার। তবে পুঁজিবাজারের বদলে ট্রেজারি ও জাপানের মুদ্রা ইয়েনে বেশি বিনিয়োগ করেছেন এশিয়ায় বিনিয়োগকারীরা, যেকারণে এ দুইয়ের মূল্যে উত্থান হয়েছে।

তবে মঙ্গলবার বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি ফোটালেও ভবিষ্যতের শেয়ার বাজার নিয়ে পতন আরও গভীর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।