• facebook
  • twitter
Tuesday, 14 January, 2025

স্যাটায়ারের ছ্যাঁকা আর হাস্যরসে মোড়া নাটক ‘শ্রাদ্ধশতবার্ষিকী’

মঞ্চ সপ্তর্ষি ভৌমিক, আবহ আবুল চক্রবর্তীর। মিনিম্যালিস্টিক অ্যাপ্রোচ রাখা হয়েছে মঞ্চসজ্জা এবং আলোয়। এই প্রসঙ্গে ঈশিতার বক্তব্য, ‘কোভিড পরবর্তী সময়ে প্রোডাকশনের বিপুল ব্যয়ভার বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিজস্ব চিত্র

মঞ্চের ব্যাকড্রপে এক কারুকার্য করা ঝুলন্ত ব্যানার দেখে প্রথমেই খানিক হোঁচট খেতে হয়। তাতে যা লেখা তার বানানগুলিও কারুকার্যময়। কিন্তু সেই ভুলে ভরা ‘ব্যানার-লিপি’র মধ্যেই লুকিয়ে আছে রহস্যটা (পড়ুন প্রহসনটা)। এখান থেকেই নাটকের সূত্রপাত।
ভগীরথ মিশ্র’র গল্প অবলম্বনে, উষ্ণিক নিবেদিত হাসির নাটক ‘শ্রাদ্ধশতবার্ষিকী’। মোড়কটি হাসির হলেও, স্যটায়ারধর্মী এই নাটকে শিক্ষা ও সামাজিক অবক্ষয়ের দিকটি যেমন আছে, তেমনি হালকা চালে তুলে ধরা হয়েছে শ্রেণী বৈষম্যের গভীর বিষয়।

সে অর্থে খানদানি ধনী পরিবারের মানুষ নন প্রাণকেষ্ট। সিমেন্ট ব্যবসার সূত্রে অর্জিত টাকার দেমাকে, নিয়ন্ত্রণ করতে চান সমাজ। আবার উচ্চবিত্তদের মধ্যে মানী-গুণী হিসাবে পরিচিত হওয়ার লোভও তাঁর ষোলো আনা। তাই গাঁটের কড়ি খরচা করে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করছেন তিনি, সভাপতির আসনটির যাতে নিজেই দখল নিতে পারেন। এভাবেই রবি ঠাকুরকেও প্রায় পকেটে পুরে ফেলেন প্রাণকেষ্ট, ‘দুই বিঘা জমি’র ব্যাখ্যাকে আগাগোড়া নিজের মানসিকতা মাফিক বদলে দিয়ে।

রম্য গল্পটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনা ঈশিতা মুখোপাধ্যায়ের। মোট চারজন চরিত্রকে দেখা যায় এই নাটকে। উদ্বোধনী নৃত্যশিল্পী অরুণিকা দে, প্রাণকেষ্টর ভূমিকায় শুভাশিস মুখার্জী, দিদিমণি ও ন্যাড়ার চরিত্রে যথাক্রমে চিত্রা দে এবং দেবজিৎ ভট্টাচার্য। সকলেই যে যার ভূমিকায় প্রাণবন্ত। শুভাশিসের ‘প্রাণকেষ্ট’ যেন আমাদের দেখা একেবারে চেনা একটি চরিত্র হয়ে ওঠে।

‘রবীন্দ্রনাথের দর্শন আমাদের জীবনবোধে মিশে যাওয়ার কথা ছিল। অথচ যেই কবি দেড়শো বছর পার করলেন, কপিরাইট উঠে যাওয়ার যথেচ্ছ অপব্যবহার চলতে লাগল, তাঁর গান, তাঁর কবিতাকে বিকৃত করে। এই নাটকের মধ্যে দিয়ে সেই বিষয়টিকেও আমরা ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে তুলে ধরতে চেয়েছি,’ এই প্রতিবেদককে (অবন্তী সিনহা) বলছিলেন নির্দেশক ঈশিতা।

মঞ্চ সপ্তর্ষি ভৌমিক, আবহ আবুল চক্রবর্তীর। মিনিম্যালিস্টিক অ্যাপ্রোচ রাখা হয়েছে মঞ্চসজ্জা এবং আলোয়। এই প্রসঙ্গে ঈশিতার বক্তব্য, ‘কোভিড পরবর্তী সময়ে প্রোডাকশনের বিপুল ব্যয়ভার বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা চাইছিলাম মিনিমাম প্রপস আর সাধারণ লাইট ব্যবহার করে হলেও, প্রোডাকশনটিকে যাতে কিছুটা পোর্টেবল রাখা যায়। সবসময় তো বড় হল পাওয়া সম্ভব হয় না, তাই অন্তরঙ্গ থিয়েটারে, এমনকী মাচাতেও এটার অভিনয় করার ক্ষেত্রে যেন সমস্যা না হয়।’