অভিশপ্ত বছরে আরাে এক কাছের মানুষকে হারাল বাঙালি। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেনন বর্ষীয়ান অভিনেতা মনু মুখােপাধ্যায় । তাঁর সেই বিখ্যাত চরিত্র মছলিবাবা সিনেপ্রেমীদের মনে দাগ কেটে গিয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর নেট নাগরিকদের পরিবৃত্ত জুড়ে শুধুই সেই অমােঘ চরিত্রের আলােচনা চলছে।
কিন্তু শুধু একটিমাত্র চরিত্র নয়, একাধিক চরিত্রকেই পর্দায় জীবন্ত করে তুলেছিলেন মনু মুখােপাধ্যায় । পাতালঘর ছবির সেই অপয়া বৃদ্ধ গােবিন্দ বিশ্বাস, যাকে উদ্দেশ্য করে লেখা গান- তুমি কাশি যেতে পারাে- যেতে পারাে গয়া- পাবে না এমন দ্বিতীয় অপয়া। ছবি জুড়ে মনুর তুখােড় অভিনয় আজও জীবন্ত বহু দর্শকের মনে।
Advertisement
এছাড়াও একাধিক ছবি যেমন ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি থেকে পালিয়ে এমনকি তাঁর শেষ ছবি আলিনগরের গােলকধাঁধা সবেতেই অনবদ্য মনু। বাড়ি থেকে পালিয়ে ছবিতে খলনায়ক চরিত্রে তিনি বেঞ্চ মার্ক তৈরি করে গিয়েছিল পরবর্তী জেনারেশনের অভিনেতাদের জন্য। ছবিতে যে নিষ্ঠুরতা ফুটে উঠেছিল তাঁর হাবভাবে তা দেখে হাড় হিম হয়ে গিয়েছিল এ প্রান্তে বসে থাকা দর্শকদের।
Advertisement
চরিত্র অভিনেতা শব্দটির সঙ্গে আজকাল বহু সমালােচকের মতবিরােধ। কয়েক মিনিট, সেকেন্ড যে চরিত্রেই বড় পর্দায় এসেছেন মনু তাতেই দর্শকদের তিনি আকর্ষিত করেছেন নিজের অভিনয় দিয়ে। মনুর দিকে চোখ সরানাে শুধু কঠিনই নয় একপ্রকার অসম্ভব ছিল।
বিগত কয়েক বছরে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি অভিনয় থেকে কিছুটা সরে গিয়েছিলেন। ৪৪ বছর বয়সে তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছিল ‘আলিনগরের গােলর্ধাঁধা’ ছবিতে। নব্বইয়ের দশকের গােড়ায় ‘নােনা স্বাদ’ নামক একটি টেলিফিল্মে তাঁর অভিনয় আজও বহু দর্শকের মনে ছাপ ছেড়ে গিয়েছে।
নায়ক সুলভ চেহারা ছিল না মনুর। ছিল না গ্ল্যামার। তাঁর হাতিয়ার ছিল অভিনয়, যা দিয়ে তিনি জয় করেছিলেন দর্শকমন। তুলসী চক্রবর্তী থেকে নৃপতি হালদার একাধিক আইকনিক চরিত্রে অভিনয়ের দরুন বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অমর হয়ে থাকলে মনু মুখােপাধ্যায়।
Advertisement



