সিএএ প্রত্যাহার করুন, প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন মমতার

সিএএ ও এনআরসি প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছি প্রধানমন্ত্রীর কাছে। পাশাপাশি রাজ্যের পাওনা টাকা মেটানাের দাবি জানিয়েছি। বৈঠক শেষে একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Written by SNS Kolkata | January 12, 2020 12:52 pm

শনিবার বিকেলে রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে বৈঠক হয়। (Photo: IANS/PIB)

সিএএ ও এনআরসি প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছি প্রধানমন্ত্রীর কাছে। পাশাপাশি রাজ্যের পাওনা টাকা দ্রুত মেটানাের দাবি জানিয়েছি। শনিবার বিকেলে রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হয় প্রায় ১৫ মিনিট। এদিন ৩টা ৩৩ মিনিট নাগাদ বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে যান রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ, সাংসদ অর্জুন সিং, মুকুল রায়।

শহরের রাস্তায় বিক্ষোভ স্লোগান চলায় হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স পৌঁছল প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে রাজপথে রাজভবন আসেন সেখানেই বৈঠক হয় দেশের প্রশাসনিক প্রধান নরেন্দ্র মােদি এবং রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। বৈঠক শেষে বাইরে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি আবেদন করেছে যেন অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ ও এনআরসি প্রত্যাহার করে। তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি মানুষে মানুষে বৈষম্য হওয়া উচিত নয়। কোনও মানুষ যেন অত্যচারিত না হয়। আপনারা ভাবনাচিন্তা করুন।

পাশাপাশি, রাজ্যের বকেয়া থাকা ২৮ হাজার কোটি টাকা যাতে দ্রুত দিয়ে দেওয়া হয়, তা নিয়ে অনুরােধ করেছি। কথা হয়েছে বুলবুলের ক্ষতিপূরণ নিয়েও। সব মিলিয়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সমস্ত কথা শােনার পর প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন, সংশােধিত নাগরিকত্ব আইনের বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে আসতে সেখানেই এ নিয়ে উনি এবিষয়ে আলােচনা করবেন।

কথামতাে রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে বৈঠক সেরে ধর্মতলায় রানি রাসমণি রােডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া সিএএ, এনআরসি বিরােধী ধর্না মঞ্চে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রতিবাদরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে গলা মেলান।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বলপূর্বক এনআরসি নিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, তা শুধু থাকবে কাগজে-কলমেই। রাজ্য সরকার এনআরসি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি লাঘু করবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তিকে কেটে নিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ধর্ম-জাতির ভিত্তিতে কখনও সাংবিধানিকভাবে কোনও আইন লাগু করা যায় না।

পাশাপাশি অন্য ছাত্রছাত্রীদেরও এর বিরুদ্ধে সরব হওয়ার কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলন নতুন ও মানবিক মুখ তুলে এনেছে। ভাগাভাগির ভিত্তিতে আইন প্রণয়ন নয়। কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, আপনাদের ঘুম ভাঙাবেই মানুষ। জেগে ঘুমিয়ে থাকুন আপনারা। আন্দোলনমুখী মানুষ নতুন আলাে দেখাবে।

প্রধানমন্ত্রীর বেলুড় মঠে যাওয়ার বিষয়ে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রবিবার জন্মদিন স্বামী বিবেকানন্দের। দিল্লি থেকে কেউ কেউ ছুটে আসে এই দিন পালন করতে। কিন্তু রাজ্যের মানুষ প্রতিদিনই স্বামী বিবেকানন্দকে মেনে চলেন। স্বামী বিবেকানন্দ মানব ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন। সব ধর্মের মানুষ থাকবে। দেশে ধর্মের ভিত্তিতে সিএএ, এনআরসি হবে না। নাগরিকত্ব আমাদের অধিকার। মানুষ ভােট দিয়ে সরকার নির্বাচন করে।

সিপিএম নেতাদের কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ঘােলা জলে মাছ ধরতে নেমে যারা নাটক করছে তারা বিজেপির দালাল। আন্দোলনের নামে দুটি বাসে আগুন জ্বালানাে হয়। সেটি আন্দোলনকে নষ্ট করার খেলা মাত্র। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করুন।