নতুন বছর শুরু হতে বাকি মাত্র ৩৩ দিন। সেই সঙ্গেই রাজ্যবাসীর কৌতূহল বাড়ছে ২০২৬ সালের ছুটির তালিকা ঘিরে। বৃহস্পতিবার নবান্ন রাজ্যের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ করতেই বেরিয়ে পড়ার পরিকল্পনায় যেন নতুন উদ্দীপনা দেখা দিল বহু মানুষের মধ্যে। রাজ্য সরকারের তালিকার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেগোশিয়েব্ল ইন্সট্রুমেন্ট আইন (এনআইএ) অনুযায়ী ছুটি এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক ছুটির সম্পূর্ণ বিবৃতিও প্রকাশ করেছে অর্থ দপ্তর।
অর্থ দপ্তরের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এনআই অ্যাক্ট ১৮৮১ অনুসারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তর প্রতি বছর রাজ্যভেদে আলাদা ছুটির তালিকা তৈরি করে। ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের জন্য এনআইএ তালিকায় রয়েছে মোট ২৭টি ছুটি। এর বাইরে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে আরও ২৪ দিনের ছুটি। সম্প্রদায়ভিত্তিক দু’টি ছুটিও যুক্ত হয়েছে তালিকায়। ফলে অফিস–কাছারির কাজের বাইরে বছরের ক্যালেন্ডারে নানা ছুটি জুড়ে মিলেছে দীর্ঘ বিশ্রাম এবং ছোট–বড় ভ্রমণ পরিকল্পনার সুযোগ।
Advertisement
তবে ২০২৬ সালে মোট আটটি ছুটি রবিবার পড়ায় তা পাওয়া যাবে না। শিবরাত্রি (১৫ ফেব্রুয়ারি), দুর্গাপুজোর সপ্তমী (১৮ অক্টোবর), লক্ষ্মীপুজো (২৫ অক্টোবর), কালীপুজো (৮ নভেম্বর), ছটপুজো (১৫ নভেম্বর) এবং বীরসা মুন্ডার জন্মদিন (১৫ নভেম্বর) — এই সমস্ত দিনই রবিবার। একই দিনে পড়েছে নেতাজিজয়ন্তী ও সরস্বতী পুজো (২৩ জানুয়ারি), এবং বুদ্ধপূর্ণিমা ও মে দিবস (১ মে)। ফলে ক্যালেন্ডারে ছুটির সংখ্যা কমে গেলেও দীর্ঘ সপ্তাহান্তের সম্ভাবনা কম নয়।
Advertisement
নতুন বছর, স্বামী বিবেকানন্দ জন্মজয়ন্তী, নেতাজির জন্মদিন, সরস্বতী পুজো, প্রজাতন্ত্র দিবস, দোলযাত্রা, ইদ-উল-ফিতর, রামনবমী, মহাবীর জয়ন্তী, গুড ফ্রাইডে, ড. অম্বেডকরের জন্মদিন, বাংলা নববর্ষ, মে দিবস, বুদ্ধপূর্ণিমা, রবীন্দ্রজয়ন্তী, ইদুজ্জোহা, মহরম, স্বাধীনতা দিবস, জন্মাষ্টমী, গান্ধীজয়ন্তী, মহালয়া থেকে শুরু করে বড়দিন — মোট ২৭টি দিন এনআইএ আইনের আওতায় চিহ্নিত করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জন্য। এর বেশিরভাগ ছুটিই শুক্রবার বা সোমবার পড়ায় সপ্তাহান্তে ছুটি বাড়বে স্বাভাবিকভাবেই।
নবান্ন ঘোষণা করেছে আরও ২৪ দিনের ছুটি — সরস্বতী পুজোর আগের দিন, শবে বরাত, পঞ্চানন বর্মার জন্মবার্ষিকী, দোলের পরদিন, হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী, ইদের আগের দিন, ইদুজ্জোহার আগের দিন, রথযাত্রা, ফাতেহা–দোয়াজ়–দাহাম, রাখিবন্ধন, বিশ্বকর্মা পুজো, দীর্ঘ দুর্গাপুজো ছুটি, কালীপুজোর অতিরিক্ত ছুটি, ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার পরদিন, ছটপুজোর অতিরিক্ত ছুটি—সব মিলিয়ে বছরের মাঝামাঝি ও শেষে বহু দীর্ঘ বিরতির সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বিশেষ ছুটি হিসেবে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য ইস্টার স্যাটারডে, সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জন্য হুল দিবস এবং দার্জিলিং–কালিম্পং এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ভানুভক্তের জন্মদিবস চিহ্নিত করা হয়েছে।
অনেক অফিসকর্মীর মতে, ২০২৬ সালের ছুটির ক্যালেন্ডারে সপ্তাহান্তে ছুটির সংখ্যা বেশি হওয়ায় আগেই পরিকল্পনা করে ফেলছেন তাঁরা। বিশেষত মার্চ, আগস্ট, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে এক–দু’দিন ছুটি নিলেই টানা দীর্ঘ অবকাশ পাওয়া যাবে। রাজ্যের পর্যটন–উদ্যোক্তারাও মনে করছেন, ‘আগাম ছুটির তালিকা প্রকাশ হওয়ায় নববর্ষের শুরুতেই পর্যটকদের বুকিং বাড়বে’।
আগামী বছর কোন সময়ে কোথায় যাওয়া যায়, তা নিয়ে এখনই ক্যালেন্ডার খুঁটিয়ে দেখছেন অনেকেই।
Advertisement



