• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

দেশের মধ্যে রাজ্যে বেকারত্বের হার অনেক কম, বিজেপিকে বিধে ট্যুইট মুখ্যমন্ত্রীর

করোনা বিপর্যয়ের আগে থেকেই দেশের বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

করোনা বিপর্যয়ের আগে থেকেই দেশের বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাধীনতার পর থেকে মোদি সরকারের আমলেই যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি হয়েছে তা বহুবার প্রকাশ্যে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা এবং লকডাউনে সেই চিত্রটা আরও অনেক বেশি হতাশাজনক হয়েছে।

তুলনামূলকভাবে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার অনেক কম। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)-এর এক সমীক্ষা রিপোর্টকে হাতিয়ার করে পরিসংখ্যান দিয়ে মমতা জানান, করোনাভাইরাস এবং লকডাউনের জেরে গোটা দেশে কর্মসংস্থানের কঠিন পরিস্থিতিতেই জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেকটাই কম এই রাজ্যে বেকারত্বের হার।

Advertisement

শনিবার সকালে ট্যুইট করে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন করোনা ভাইরাস এবং আম্ফানের কারণে ক্ষয়ক্ষতির মোকাবিলায় ব্যাপক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করেছি আমরা। যার প্রমাণ মিলেছে রাজ্যের বেকারত্ব নিয়ে সিএমআইই-এর তথ্যে। এই তথ্য অনুযায়ী জুন মাসে রাজ্যে বেকারত্বের হার ৬.৫ শতাংশ। আর সারা দেশে এই গড় ১১ শতাংশ।

Advertisement

অন্যদিকে জুন মাসে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে বেকারত্বের হার ৯.৬ শতাংশ। রাজ্যগুলির মধ্যে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ হরিয়ানায়, ৩৩.৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য ত্রিপুরা। যেখানে বেকারত্বের হার ২১.৩ শতাংশ।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বেকারত্বের হার নিয়ে এই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিকভাবে মোদির দলকে খোঁচা দিলেন। অন্যদিকে কংগ্রেস শাসিত পাঞ্জাব, ছত্রিশগড় এবং রাজস্থানের বেকারত্বের হার উত্তরপ্রদেশের থেকে বেশি হলেও তার উল্লেখ করেননি মমতা। এমনকী সিপিএম নেতৃত্বাধীন কেরলেও বেকারত্বের হার ২০ শতাংশেরও বেশি। তারও উল্লেখ করেননি মমতা। যার অর্থ রাজনৈতিকভাবে বিরোধী হিসেবে মমতার নিশানায় একমাত্র বিজেপিই।

প্রসঙ্গত লকডাউনের আবহে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের কাজ চালিয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার। ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা আইটি কর্মীদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারি পোর্টাল চালু করা হয়েছে। ভিনরাজ্য থেকে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের একশ দিনের কাজে লাগানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ হয়েছে। যার ফলে এই করোনা আম্ফান পরিস্থিতির পরেও রাজ্যে কর্মসংস্থানের চিত্রটা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটা ভালো।

যদিও বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের মতে আষাঢ়ে গল্প বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী তো চপ ভাজা, মুড়ি ভাজাকেও শিল্পের পর্যায়ে ধরেন। সেই হিসেব দিয়েই গোঁজামিল দিতে চাইছেন। বাংলার মানুষ জানে রাজ্যে কর্মসংস্থানের কী বেহাল অবস্থা।

সায়ন্তনবাবু বলেন, এই কোভিড পরিস্থিতি ও লকডাউন তৈরি না হলে লোকে জানতেই পারত না যে, বাংলার ১৫ লক্ষ মানুষ রাজ্যে কাজের সুযোগ না পেয়ে ভিনরজ্যে কাজ করতে গিয়েছেন। তবে কোভিড সংক্রমণের কারণে গোটা বিশ্বেই মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের শ্রমসংস্থা (আইএলও)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী করোনা ধাক্কায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হলে বছরশেষে বিশ্বে ১১.৯ শতাংশ কর্মদিবস নষ্ট হবে। যা ৩৪ কোটি পূর্ণসময়ের কর্মীর কাজ হারানোর সঙ্গে তুলনীয়। এদিকে সিএমআইই-এর তথ্য অনুযায়ী জুনে গোটা দেশে ৩৭.৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আর চাকরি খুঁজছেন আরও ৪৬.১ কোটি মানুষ।

Advertisement