মুর্শিদাবাদে অশান্তি চলাকালীন বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই ওই দু’জন গা ঢাকা দিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ঘটনার সময় এলাকায় উপস্থিত থাকা ও ঘটনায় যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ধৃতদের নাম আজফারুল শেখ এবং মনিরুল শেখ। তাঁদের বাড়ি সামশেরগঞ্জের শুলিতলা এলাকায়। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন ছাড়াও এলাকার একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর এবং অগ্নি সংযোগের অভিযোগ রয়েছে। এই নিয়ে বাবা-ছেলে হত্যাকাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার রাতে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের কাছে সরাইকেলা এলাকায় একটি গোপনে ডেরায় হানা দিয়ে আজফারুল শেখ ওরফে বিল্লিকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। এসটিএফ-এর অপর একটি দল বীরভূমের রামপুরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মনিরুল ওরফে মনিকে গ্রেপ্তার করেছে। বাবা-ছেলের খুনের ঘটনায় ধৃতরা অন্যতম অভিযুক্ত বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সামশেরগঞ্জের বেদবোনা গ্রামে ১২ এপ্রিলের অশান্তির ঘটনায় আজরাফুল উন্মত্ত জনতাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বাবা ও ছেলে দু’জনকেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতও করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে যাঁরা জাফরাবাদে বাবা-ছেলেকে খুন করেছিলেন, তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন মণিরুল।
Advertisement
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার অমিতকুমার সাউ বলেন, ‘নির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জাফরাবাদে বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হল।’ মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় সমস্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। পুলিশ সুপার বলেন, ‘জঙ্গিপুরের অশান্তির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১৮৬টি মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে। সেখানেই অভিযোগ জানানো যাচ্ছে। অশান্তির ঘটনায় যাঁরা জড়িত রয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ জোগাড়ের কাজ চলছে। সব দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে কঠোর আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Advertisement
ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ আগে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদে। সেই সময় জাফরাবাদে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসকে খুনের অভিযোগ ওঠে একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদের ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করে রাজ্য সরকার। প্রথমে সুতি ও বীরভূমের মুরারই থেকে কালু নাদাব ও দিলদার নাদাবকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সুতি থেকেই ইনজামাম হক নামে আরও এক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে খুনের ঘটনার মূলচক্রী জিয়াউল শেখ ওরফে চাচাকে চোপড়া থেকে পাকড়াও করেন তদন্তকারীরা। দিন কয়েক আগে হাওড়ার জোমজুড় থেকে ফেকারুল শেখ নামে আরেক অভিযুক্তকে ধর পুলিশ।
Advertisement



